সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫, ১১:৫৮ অপরাহ্ন

দুর্নীতি প্রতিরোধে চুয়াডাঙ্গায় চলছে গণশুনানি- চুয়াডাঙ্গাবাসীকে অগ্রণী ভূমিকা নিতে হবে: দুদক চেয়ারম্যান

মোঃ আব্দুল্লাহ হক
  • আপডেট : সোমবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২৫

মোঃ আব্দুল্লাহ হক, চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রতিনিধি: দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন নিজের জেলার অর্থাৎ চুয়াডাঙ্গার দুর্নীতি প্রতিরোধে সেখানকার জনগণের প্রতি অগ্রণী ভূমিকা রাখার জোরালো আহ্বান জানিয়েছেন।

সোমবার সকালে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের সাহিত্য মঞ্চে অনুষ্ঠিত দুর্নীতি দমন কমিশনের ১৮৮তম গণশুনানিতে দুদক চেয়ারম্যান এই মন্তব্য করেন। সকাল থেকে শুরু হওয়া এই গণশুনানি বিকেল চারটা পর্যন্ত চলে।

ড. মোমেন বলেন, “আমরা চুয়াডাঙ্গা এসেছি, এটি সৌভাগ্যের বিষয় নয়। বরং আমাদের এখানে আসা প্রমাণ করে যে এখনও দুর্নীতি রয়েছে। যদি চুয়াডাঙ্গায় দুর্নীতি প্রতিরোধের প্রয়োজন না পড়ত, সেটাই হত প্রকৃত সৌভাগ্য।”

তিনি সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রধান দায়িত্ব হিসেবে জনগণের সেবা নিশ্চিত করার কথা মনে করিয়ে দেন এবং দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়াই সকলের লক্ষ্য হওয়া উচিত বলে মত দেন।

গণশুনানিতে বিভিন্ন দপ্তরের বিরুদ্ধে অভিযোগ
‘সবাই মিলে গড়বো দেশ, দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ’—এই স্লোগানে আয়োজিত গণশুনানির আয়োজন করে সমন্বিত দুর্নীতি দমন কমিশন ঝিনাইদহ কার্যালয়, চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসন ও জেলা দুর্নীতি দমন প্রতিরোধ কমিটি।

গণশুনানিতে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নাগরিকরা দুর্নীতির সুনির্দিষ্ট অভিযোগ তুলে ধরেন।

শুনানির শুরুতেই চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা. হাদী মো. জিয়া উদ্দিন আহম্মদ, সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. বিদ্যুৎ কুমার বিশ্বাস এবং দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. অনিক—এর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উপস্থাপন করা হয়। জেলা গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মহসিন আলীর বিরুদ্ধেও অভিযোগ আনা হয়। এছাড়া, চুয়াডাঙ্গা সাব-রেজিস্ট্রার অফিস ও পৌরসভার বিরুদ্ধে জমি নিবন্ধন, অবকাঠামো নির্মাণ ও কর আদায় সংক্রান্ত একাধিক অভিযোগও গণশুনানিতে তোলা হয়।

দুদক চেয়ারম্যানের কঠোর নির্দেশনা ও সতর্কতা
দুদক চেয়ারম্যান ড. আবদুল মোমেন শুনানিতে উপস্থিত থেকে প্রত্যেকটি অভিযোগ মনোযোগ সহকারে শোনেন এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের স্পষ্ট ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দেন। ভবিষ্যতে এ ধরনের অনিয়ম যাতে না ঘটে সেজন্য তিনি সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ও চিকিৎসককে বিশেষভাবে সতর্ক করেন।

গণআন্দোলনের আহ্বান
ড. মোমেন বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই শুধু কমিশনের একার দায়িত্ব নয়; এটি জনগণের আন্দোলন হতে হবে। তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, “জনসম্পৃক্ততা যত বাড়বে, তত দ্রুত দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়া সম্ভব হবে।”

অনুষ্ঠানে যারা উপস্থিত ছিলেন
চুয়াডাঙ্গার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই গণশুনানিতে স্বাগত বক্তব্য দেন খুলনা বিভাগীয় দুর্নীতি দমন কমিশনের পরিচালক জালাল উদ্দীন আহম্মদ।

এছাড়াও বক্তব্য দেন দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার (তদন্ত) মিঞা মুহাম্মদ আলি আকবার আজিজী, মহাপরিচালক আক্তার হোসেন এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) জামাল আল নাসের।

অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আহমেদ মাহবুব উল ইসলাম, নয়ন কুমার রাজবংশী, চার উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের প্রধান, জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সদস্য, সাংবাদিক ও স্থানীয় জনগণ।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS