রবিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ১২:১১ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদ
জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট দিয়ে সরকারের বৈধতা নিশ্চিত করতে হবে: জাতীয় ঐক্য জোটের নেতৃবৃন্দ পেঁয়াজের দামে লাগাম টানতে আমদানির সুপারিশ করেছে বিটিটিসি গত ২৪ ঘন্টায় ডেঙ্গুতে হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৮৩৪ জন, তবে মৃত্যু হয়নি কারো ওরিয়ন ইনফিউশন সাপ্তাহিক দর পতনের শীর্ষে দ্বীপজেলা ভোলা নাগরিক ঐক্য ফোরামের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা হবিগঞ্জের তরুণী ফেসবুকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার অভিযোগে গ্রেফতার পার্বত্য চট্টগ্রামে নিয়ে ভারতীয় ষড়যন্ত্রের কঠিন জবাব দেওয়া হবে: মোস্তফা আল ইহযায খাসজমি আন্দোলনের কিংবদন্তি ও কৃষক মুক্তির আজীবন যোদ্ধা কমরেড আবদুস সাত্তার খান স্মরণে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত সরাসরি সমুদ্রপথে শিপিং সেবা চালু করেছে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান মনোস্পুল বাংলাদেশ সাপ্তাহিক দর বৃদ্ধির শীর্ষে

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ অফিসে বহাল তবিয়তে ফ্যাসিস্ট ভূত

বাসার বিপুল
  • আপডেট : বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী, ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের প্রধান কার্যালয়ের সামনে গত ৪ আগস্ট অধিদফতরের মহাপরিচালক ডা: রেয়াজুল হক জসিমের নেতৃত্বে উচ্চকিত কণ্ঠে স্লোগানগুলো দিচ্ছিলেন অধিদফতরের কর্মকর্তারা। স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের পতনের আগের দিন ঢাকাসহ সারা দেশে যখন ছাত্র-জনতার রক্ত ঝরছিল, ঠিক সেই মুহূর্তে বঙ্গবন্ধু ভেটেরিনারি পরিষদের ব্যানারে শেখ হাসিনার ফ্যাসিজমের পক্ষে কথিত শান্তি সমাবেশ করেছিলেন প্রাণিসম্পদ অধিদফতরসহ মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও মন্ত্রণালয়ভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এ কর্মসূচিতে দলবাজ ও দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তা, প্রকল্প পরিচালকদের সরব উপস্থিতি দেখা গেছে।

একাধিক কর্মকর্তা বলেছেন, ছাত্র-জনতার রক্ত সিঁড়ির ওপর তা মাড়িয়ে অধ্যাপক ড. ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় এসেছে। সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে শুরু করে বিভিন্ন সংস্থার দুর্নীতিবাজ ও দলবাজদের সরিয়ে দেয়া হলেও বহাল তবিয়তে আছেন ছাত্রজনতাকে সন্ত্রাসী হিসেবে স্লোগান দেয়া প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের কর্মকর্তারা। মৎস্য অধিদফতরের মহাপরিচালককে সরানো হলেও বহাল আছেন অনেকে। দাপট দেখিয়ে যাচ্ছেন শেখ হাসিনা সরকারের সুবিধাভোগী মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর আরো অনেক কর্মকর্তা।

একাধিক কর্মকর্তা বলেছেন, ওই দিন প্রতিষ্ঠান প্রধান ও পরিচালকদের পক্ষ থেকে কর্মসূচিতে আসতে বাধ্য করা হয়। প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের মহাপরিচালক ডা: রেয়াজুল হক জসিম স্বৈরাচার পতনের পর নিজেকে বিএনপি প্রমাণের জন্য জোর লবিং শুরু করেন। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতার দ্বারস্থ হন। এ বিষয়ে প্রাণিসম্পদ অদিফতরের মহাপরিচালক ডা: রেয়াজুল হককে ফোনে পাওয়া যায়নি।

প্রাণিসম্পদ খাতে সবচেয়ে বড় প্রকল্প এলডিডিপি। করোনাকালে খামারিদের প্রায় ৭০০ কোটি টাকা প্রণোদনা দেয়ার নামে লোপাটের অভিযোগ রয়েছে। প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প লুটপাটের প্রকল্পে রূপ নিয়েছিল হাসিনা সরকারের আমলে। প্রকল্প সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি, মন্ত্রী থেকে শুরু করে রাজনৈতিক নেতা এবং স্বৈরাচারের দোসর কথিত সিনিয়র সাংবাদিকরাও এই প্রকল্প থেকে সুবিধা নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। প্রকল্পের অনিয়ম দুর্নীতির নিউজ নয়া দিগন্তসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে এলেও ভাগ বাটোয়ারায় জড়িতদের বিরুদ্ধে নেয়া হয়নি কোনো ব্যবস্থা। দুর্নীতিগ্রস্ত আরেক প্রকল্প প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের সক্ষমতা জোরদারকরণ প্রকল্প।

অধিদফতরের প্রধান কার্যালয়ে ভবন নির্মাণের দেড় বছর আগেই কোটি কোটি টাকার আসবাবপত্র কেনাসহ অনিয়মের নানা অভিযোগ রয়েছে পিডি ডা: আনিছুর রহমানের বিরুদ্ধে। দলবাজ প্রকল্প পরিচালক ডা: অসীম কুমার দাস। সমতল ভূমিতে বসবাসরত অনগ্রসর ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর আর্থসামাজিক ও জীবন মানোন্নয়নের লক্ষ্যে সমন্বিত প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পে অনিয়মের শেষ নেই। ৪ আগস্ট এই পিডিকে ছাত্র-জনতাকে জামায়াত-শিবির, সন্ত্রাসী উল্লেখ করে সমস্বরে স্লোগান দিতে দেখা যায়। শুধু তিনি নন, প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের অনেক প্রকল্প পরিচালক ও কর্মকর্তাকে তার সুরে স্লোগান তুলতে দেখা গেছে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের আব্দুর রহমান এমপি হওয়ার পর দলীয়পনা আরো বাড়তে থাকে। দলীয় বিবেচনায় প্রাণিসম্পদ অধিদফতরে পদোন্নতি, পদায়ন হয় দল ও অর্থের বিনিময়ে। গ্রেডেশনে অনেক পিছনে থেকেও পরবর্তী মহাপরিচালক হওয়া নিয়ে প্রতিযোগিতা করতে থাকেন পরিচালক ডা: মলয় কুমার শুর ও ডা: বরুন কুমার দত্ত। বিএনপিপন্থী হিসেবে গ্রেডেশনে শীর্ষে থাকলেও ডা: মো: আবু সুফিয়ানকে খামারবাড়ি ছাড়া করেন সংশ্লিষ্টরা। এসব দলবাজ কর্মকর্তারা এখনো বহাল প্রাণিসম্পদ অধিদফতরে।

শুধু প্রাণিসম্পদ অধিদফতর নয় বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএলআরআই), মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ তথ্য দফতর, বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন, মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউসহ সব প্রতিষ্ঠানে এখনো বহাল রয়েছেন ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগীরা। এসকল প্রতিষ্ঠানের অনেক কর্মকর্তাই সরাসরি ছাত্রজনতার বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন। শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট সরকারের পক্ষে গত ৪ আগস্ট কথিত শান্তি সমাবেশে যাঁরা ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন ছাত্রজনতাকে সন্ত্রাসী, জামায়াত-শিবির অভিহিত করে নানা স্লোগান তুলেছিলেন তাদের অনেকেই আবার সুর পাল্টিয়ে বিএনপি সাজার চেষ্টা করছেন। স্বৈরাচার শেখ হাসিনার ১৬ বছরে ভিন্নমতের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে তারাও বঞ্চনার শিকার বলে জানিয়েছেন। এ বিষয়ে কথা বলতে গতকাল রাতে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতারকে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তিনি রিসিভ করেননি।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS