বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, মামলা-হামলা ও কারা নির্যাতনের পরেও বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া দেশ ছাড়ে পালিয়ে যাননি। অথচ ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের পর শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়েছেন। একটিবারের জন্যও দলের লোকদের কথা চিন্তা করেননি।
বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ঠাকুরগাঁও বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা বিএনপির উদ্যোগে সমিরউদ্দিন স্মৃতি মহাবিদ্যালয় মাঠে সম্প্রীতি ও গণতন্ত্র রক্ষায় ফ্যাসিস্ট হাসিনা ও তার দোসরদের বিচারের দাবিতে আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ফখরুল বলেন, ‘সতের বছরের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হয়েছে জুলাই-আগস্টে। সতেরটি বছর আওয়ামী লীগ দেশের মানুষকে অত্যাচার জুলুম নির্যাতন করেছে। মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে। দেশকে লুটেপুটে খেয়েছে। নির্যাতিত হতে হতে আর সহ্য করতে না পেয়ে জুলাই-আগস্টে বিপ্লব ঘটিয়েছে ছাত্র-জনতা।’
তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ বিভাজনের রাজনীতি করেছে। জমি দখল ও ভোগবিলাসের রাজনীতি করেছে। সংখ্যালঘু ভাইদের জমি জায়গা জবরদখল করেছে। দেশ ও দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে। পণ্যমূল্য বৃদ্ধিতে জনগণের সঙ্গে আওয়ামী লীগ সরকার তামাশা করেছে। এবার জনগণ সেই তামাশার জবাব দিয়েছে।’
শেখ হাসিনার উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘শেখ হাসিনা কথায় কথায় বলেন তিনি বঙ্গবন্ধুর মেয়ে, তিনি দেশ থেকে পালান না। কিন্তু ৫ তারিখে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে সবার আগে হাসিনা পালিয়েছেন। সাহস থাকলে দেশে এসে মামলা মোকাবেলা করুন।’
‘হাসিনা পুলিশ প্রশাসন দিয়ে দেশের মানুষকে নির্যাতন করেছে। সভা সমাবেশ করলেই তার পেটুয়া পুলিশ সমাবেশ পণ্ড করে নেতাকর্মীদের আটক করেছে। তার দলের নেতাকর্মীরা বাধা সৃষ্টি করেছে’, যোগ করেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমানে দেশ একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের হাতে রয়েছে। তারা তাদের কাজ করছে। দেশকে সংস্কার করছে। যারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্বে রয়েছেন তারা কেউ দলীয় লোক নন। আমরা এ সরকারকে সহযোগিতা করব। যাতে তারা দেশ সংস্কার করে দ্রুতই একটি নির্বাচন দিতে পারেন।’
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘জনগণের পাশে দাঁড়ান, আমাদের সংখ্যালঘু ভাইদের পাশে থেকে সাহস জোগান। সামনে তাদের দুর্গাপূজা। পূজা যাতে সুশৃঙ্খলভাবে করতে পারে। তাদের জমি জায়গা আত্মীয়-স্বজনের ওপর যাতে কোনো আঘাত না আসে; সেদিকে লক্ষ্য রাখুন। আমরা এখন মুক্ত। কিন্তু আমরা যাতে মুক্তভাবে চলাচল করতে পারি। আওয়ামী লীগের মতো অত্যাচার অনাচার শুরু করলে আমাদেরও দশা এমন হবে। আমরা যারা লড়াই সংগ্রাম করে এ পর্যন্ত এসেছি তাদের প্রতি অনুরোধ, আপনারা মানুষের কাছে যান। কথা শুনুন। কারো ওপর অত্যাচার জুলুম করবেন না।’
উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাড. আলহাজ মো. সৈয়দ আলম জনসভায় সভাপতিত্ব করেন।
এর আগে, হরিপুর উপজেলা বিএনপির আয়োজনে স্থানীয় ঈদগাহ মাঠে নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন মির্জা ফখরুল।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply