মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:৫৩ পূর্বাহ্ন

ভূমি দস্যু হিরোর হাত থেকে মুক্ত হলো শহীদ মিনারের জমি

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : রবিবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ১৩৭ Time View

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি: অবশেষে আলমডাঙ্গার শহীদ মিনার মাঠ ব্রাইট মডেল স্কুলের পরিচালক জাকারিয়া হিরোর কবল থেকে অবৈধ দখলমুক্ত করে ছেড়েছে ছাত্র-জনতা।

 উপজেলা পরিষদের সীদ্ধান্ত হবার পরে গত ২৮ আগস্ট দুপুরে মাঠের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করতে গেলে বাঁধা দেন জাকারিয়া হিরো। বিষয়টি জানতে পেরে ক্ষোভে ফেটে পড়ে শহরের ছাত্র-জনতা। তোপের মুখে পিছু হটতে বাধ্য হন দখলদার হিরো।পরবর্তীতে ২৯ আগষ্ট এ সীমানা প্রাচীর নির্মানে ব্যাপারে সেনাবাহিনীর কাছে অভিযোগ করে।সেনাবাহিনীর টিম ঘটনাস্থলে এসে ১ লা সেপ্টেম্বর এ উভয় পক্ষকে নিয়ে বসার সীদ্ধান্ত দেন। এবং উভয়পক্ষের কাগজপত্র দেখে উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে মিমাংসা র কথা জানান।১ লা সেপ্টেম্বর সকাল ১০ টাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা র রুমে নির্বাহী কর্মকর্তা, থানা অফিসার ইনচার্জ, সেনাবাহিনীর মেজর ও উভয় পক্ষের প্রতিনিধি নিয়ে মিটিং হয়।পরে শহীদ মিনার মাঠের সীমান নির্ধারণ করে প্রাচীর দেওয়ার সীদ্ধান্ত হয়। শহীদ মিনার মাঠ উদ্ধারে শক্ত অবস্থান নিয়ে প্রশংসিত হয়েছেন সেনাবাহিনী প্রতিনিধি দল।

জানা যায়, কুষ্টিয়া জেলার মিরপুর উপজেলার আমবাড়িয়া গ্রামের জাকারিয়া হিরো। সন্ত্রাসী সিরাজ বাহিনীর রাজত্বকালে তাদের পরিবারের উত্থান। এক পর্যায়ে জাকারিয়া হিরো আলমডাঙ্গায় শহীদ মিনারের পাশে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে এক খন্ড জমি লিজ নেন। সেখানে গড়ে তোলেন ব্রাইট মডেল স্কুল।

পরবর্তীতে নানা কৌশলে খুলনা বিভাগের সবচেয়ে প্রশিদ্ধ ব্যামায়াগার করায়ত্ত করে সেখানে গড়ে তোলেন বহুতল ভবন। এমনকি ব্যায়ামাগারের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক মরহুম ইসলাম খানের বাড়ি ছিল পাশে। ইসলাম খানের বিধবা স্ত্রীকে ভয় ভীতি দেখিয়ে অসহায় পরিবারটির মাথা গোজার ঠাইটুকু কেড়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

কয়েক মাস আগে জাকারিয়া হিরো আলমডাঙ্গা কলেজের অভ্যন্তরে থাকা খাস জমি দখল করতে গিয়ে তোপের মুখে পড়েন। তখনও সর্বস্তরের মানুষ ফুসে উঠে ভুমিদস্যু হিরোর বিরুদ্ধে।

এদিকে, আলমডাঙ্গা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার মাঠ ( আলমডাঙ্গা সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের জমি) কিছুটা দখল করে ভোগ করে আসছিলেন জাকারিয়া হিরো। অভিযোগ উঠে-হিরো তার বহুতল ভবনের পায়খানার টাংকি তৈরি করেছেন শহীদ মিনার স্থাপনার ভেতরে ( শহীদ মিনার স্থাপনার মাটির নীচে)। এমন অভিযোগের কারণে শহরের আম জনতা ফুঁসছিল দীর্ঘ বছর ধরে। বিগত ১৫ বছর আওয়ামীলীগের ছত্রছায়ায় অত্যন্ত প্রভাবশালী হয়ে ওঠা জাকারিয়া হিরোর বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষ প্রতিবাদ করতে সাহস পেতো না। আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের ম্যানেজ করেই এতকাল তিনি এসব অপকর্ম করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এক সময় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পৌর মেয়রসহ প্রভাবশালী নেতাদের ব্রাইট মডেল স্কুলের সভাপতি করে নির্বিঘ্নে ভূমি দস্যুতা অব্যাহত রেখেছিলেন।

সম্প্রতি রাজনৈতিক পট পরিনর্তনের পর আলমডাঙ্গা সরকারি পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আবারও মাঠটির চৌদিকে সীমানা প্রাচীর নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটিকে ম্যানেজ করেই ইতোপূর্বে সীমানা প্রাচির নির্মাণ প্রক্রিয়া বার বার নস্যাৎ করে আসছিলেন হিরো। বর্তমানে বিদ্যালয়টির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্নিগ্ধা দাস। তিনি সীমানা প্রাচীর নির্মাণে বদ্ধপরিকর।

ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক গত ২৮ শে আগষ্ট বুধবার সীমানা প্রাচীর নির্মাণ এ কাজ শুরু হলে জাকারিয়া হিরো বাঁধা দেন। বিষয়টি জানাজানি হলে শহরের ছাত্র-জনতা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। সে সময় জাকারিয়া হিরো ব্রাইট মডেল স্কুলের সকল শিক্ষক কর্মচারিকে নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যলয়ে চড়াও হন। ছাত্র-জনতাও বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে উপজেলা চত্বরে উপস্থিত হয়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রাচীর নির্মাণের সিদ্ধান্তে অটল থাকেন।

এমন পরিস্থিতে পিছু হটতে বাধ্য হন হিরো। সারাদিন ছাত্র-জনতা মাঠে উপস্থিত ছিল। তারা জাকারিয়া হিরোর অপতৎপরতা রুখে দিতে প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। এর পর ২৯ তারিখ প্রাচীল নির্মান কাজে আাবার বাধা দেয় হিরো।এবং সেনাবাহিনীর কাছে অভিযোগ জানান।সেনাবাহিনী এসে উভয় পক্ষকে শান্ত থাকার পরামর্শ দেন। বার বার বাধা দেওয়ায় হ সারা শহর দখলদার জাকারিয়া হিরোর বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠে।১ লা সেপ্টেম্বর আলমডাঙ্গা র ছাত্র জনতা অবস্থান গ্রহন করে উপজেলা কার্যালয়ে। সেখানে সীদ্ধান্ত হলে ছাত্র জনতা প্রশাসনের প্রতি সাধুবাদ জানিয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2024 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS