রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:৩৩ পূর্বাহ্ন

ভালো কোম্পানির দিকে ঝুঁকছেন বিনিয়োগকারীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : রবিবার, ১১ আগস্ট, ২০২৪
  • ১১১৮ Time View

দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে শেয়ার বাজারে যেন সুবাতাস বইতে শুরু করেছে। ফিরতে শুরু করেছেন বিনিয়োগকারীরা। যার ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে মূল্যসূচকে ও লেনদেনে। বিদায়ি সপ্তাহে শেষ তিন কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৬৯৫ পয়েন্ট। সূচকের এই বড় উত্থানে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে পাওয়ার গ্রিড, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ কোম্পানি, গ্রামীণফোন ও ব্র্যাক ব্যাংকের মতো মৌলভিত্তি সম্পন্ন শেয়ার।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, দেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হওয়ায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে। তারা মনে করছেন সামনে বাজার ভালো হবে। এজন্য নিষ্ক্রিয় থাকা অনেক বিনিয়োগকারী সক্রিয় হচ্ছেন। সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, অনেক ভালো কোম্পানির শেয়ার অবমূল্যায়িত অবস্থায় ছিল। বিনিয়োগকারীরা সক্রিয় হওয়ায় সেসব শেয়ারের দাম বাড়ছে। এতে বাজার ঘুরে দাঁড়িয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক অর্থনীতিবিদ আবু আহমেদ এ প্রসঙ্গে গতকাল ইত্তেফাককে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে দেশের শেয়ার বাজারে মন্দাবস্থা বিরাজ করছিল। বিনিয়োগকারীরা বাজার নিয়ে হতাশ হয়ে পড়েছিল। কিন্তু দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তারা বাজারে ফিরতে শুরু করেছে।

তিনি বলেন, আমাদের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে। রেমিট্যান্স আসবে, বিদেশি বিনিয়োগও বাড়বে। তবে বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশ্যে এই অর্থনীতিবিদ বলেন, বাজারে এখনো অনেক ভালো কোম্পানির শেয়ার অবমূল্যায়িত অবস্থায় আছে। তাই বিনিয়োগকারীদের উচিত মন্দ, বন্ধ কোম্পানির শেয়ার না কিনে ভালো কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ করা। একই কথা জানিয়ে ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিএ) প্রেসিডেন্ট সাইফুল ইসলাম ইত্তেফাককে বলেছেন, বাজারের প্রতি আস্থা ফিরে আসায় বিনিয়োগকারীরা বাজারমুখী হচ্ছেন। তবে বিনিয়োগকারীদের প্রতি আমার পরামর্শ থাকবে, যৌক্তিক মূল্যের চেয়ে বেশি দরে শেয়ার কিনবেন না। ভালো কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ করুন।

সাপ্তাহিক লেনদেনচিত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত সপ্তাহে মোট চার কার্যদিবস লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৪ আগস্ট ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক কমে ১০৪ পয়েন্ট। তবে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর মাত্র তিন কার্যদিবসে প্রধান সূচকটি বাড়ে ৬৯৫ পয়েন্ট। সবমিলিয়ে বিদায়ি সপ্তাহে প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫৯০ দশমিক ৮৭ পয়েন্ট বা ১১ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ। প্রধান মূল্য সূচকের পাশাপাশি বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচকটি বেড়েছে ২৩১ দশমিক ৮৮ পয়েন্ট বা ১২ দশমিক ২০ শতাংশ। আর ইসলামি শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ সূচক বেড়েছে ১০৯ দশমিক ৫৩ পয়েন্ট বা ৯ দশমিক ৪০ শতাংশ।

বিদায়ি সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেনকৃত মোট ৪১৩টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড ও করপোরেট বন্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৩৩৯টির, কমেছে ৪৭টির আর অপরিবর্তিত ছিল ১১টির দর। আর ৪৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বেশির ভাগ কোম্পানির দাম বাড়ায় গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৩ হাজার ৯১৩ কোটি টাকা। যা আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৬ লাখ ৫৩ হাজার ৩৬৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ৫০ হাজার ৫৪৫ কোটি টাকা বা ৭ দশমিক ৭৪ শতাংশ। 

সূচক বাড়ার পাশাপাশি গত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেনও বেড়েছে। সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৮৩৪ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৪৭৮ কোটি ৯২ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন বেড়েছে ৩৫৬ কোটি ৪ লাখ টাকা বা ৭৪ দশমিক ৩৪ শতাংশ। খাতভিত্তিক লেনদেন চিত্রে দেখা যায়, গত সপ্তাহে ডিএসইর মোট

লেনদেনের ২০ শতাংশ দখলে নিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে ওষুধ ও রসায়ন খাত। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৬ দশমিক ৮ শতাংশ দখলে নিয়েছে ব্যাংক খাত। ১১ দশমিক ৩ শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাত।

আলোচ্য সপ্তাহে সব খাতের শেয়ারেই ইতিবাচক রিটার্ন ছিল। অন্যবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গত সপ্তাহে লেনদেনকৃত মোট ৩২৩টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ২৫৬টির, কমেছে ৫৮টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ৯টি দর। এতে এই বাজারের সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১১ দশমিক ১২ শতাংশ বেড়ে ১৬ হাজার ৭৯৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। বিদায়ি সপ্তাহে সিএসইতে ২৬০ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে, আগের সপ্তাহে যা ছিল ৪০ কোটি টাকা।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2024 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS