রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:৩৪ পূর্বাহ্ন

শিক্ষার্থীদের ওপর সহিংসতার প্রতিবাদ জানালেন ৩ নায়িকা

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : বুধবার, ১৭ জুলাই, ২০২৪
  • ৮০ Time View

কোটা আন্দোলন নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হয়েছেন শিল্পীরা। শোবিজ তারকারা ফেসবুকে এই আন্দোলন নিয়ে তাদের মতপ্রকাশ করছেন। 

রংপুরে পুলিশ ও ছাত্রলীগের সঙ্গে সংঘর্ষে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ক কমিটির সদস্য ও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ (২২) নিহত হয়েছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় তার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। আবু সাঈদের মৃত্যু কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না অভিনেত্রী, কন্ঠশিল্পী ও নির্মাতা মেহের আফরোজ শাওন।

বুধবার (১৭ জুলাই) বিকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে নিহত আবু সাঈদের একটা স্কেচ পোস্ট করে তিনি লেখেন, ‘বুক চিতিয়ে দাঁড়ানো এই নিরস্ত্র মানুষটাকে সরাসরি গুলি করা পুলিশ ভাই কি কাল রাতে ঘুমাতে পেরেছেন? উনার কি কোনো সন্তান আছে? সেই সন্তানের চোখের দিকে তাকাতে উনার কি একটুও লজ্জা লাগবে না!’ পোস্টের নিচে তিনি ‘আমি কোটা সংস্কারের পক্ষে’ লিখে ট্যাগও করেন।

ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী তানজিন তিশাও বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন। নিজের ফেসবুকে তিশা লেখেন, ‘শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড। আজকের শিক্ষার্থীরা আগামীর দেশ গড়ার কারিগর। কিন্তু আজ ভালো নেই আমার দেশ, আমার শহর। শিক্ষাঙ্গনে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ফিরে আসুক। খুব দ্রুত চলমান সংকটের সমাধান হবে সেটাই প্রত্যাশা করছি।’

রংপুরে পুলিশের গুলিতে নিহত আবু সাঈদের মৃত্যু কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না চিত্রনায়িকা শাহ হুমায়রা সুবাহ।

নিজের ফেসবুকে তিনি লিখেছেন, ‌‘আবু সাঈদ আমার ভাই৷ সে আমার দাদার দেশের মানুষ। বাড়ি পীরগঞ্জ রংপুর। তাকে তো মেরে ফেলা হয়েছে দেখেছেন সবাই। শুধু আমার না আপনারও ভাই। আমি সুবাহ ১৯৭১ দেখিনি কিন্তু আবু সাইদকে বীরের মতো শহিদ হতে দেখেছি। কিন্তু কথা হলো কে নিবে তার প্রতিশোধ আপনি? আমি? আমরা!! হাহাহা কেউ না। আজ এত হইচই করছেন যারা তারাই কালকে নীরব হয়ে যাবেন। সবাই ভুলে যাবে সব কিছু বাংলাদেশ এক জিনিস বেশি দিন চলে না রে ভাই। অনেক কিছুই লিখতে চাই কিন্তু আমরা তো গোলাম তাই চাইলেও লিখতে পারবেন না মন খুলে উচিত কথা বলতে পারবে না। আগে বাক স্বাধীনতার জন্য প্রতিবাদ করুন তার পর না হয় অন্য কিছু।’

উল্লেখ্য, শিক্ষার্থীদের তুমুল আন্দোলনের মুখে ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর সরকারি চাকরিতে নারী কোটা ১০ শতাংশ, মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৩০ শতাংশ এবং জেলা কোটা ১০ শতাংশ বাতিল করে পরিপত্র জারি করে সরকার। সেখানে বলা হয়েছিল, ৯ম থেকে ১৩তম গ্রেডের পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দিতে হবে। ওইসব গ্রেডের পদে সরাসরি নিয়োগে বিদ্যমান কোটা বাতিল করা হলো।

এ পরিপত্র চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্ম কমান্ড কাউন্সিলের সভাপতি অহিদুল ইসলামসহ সাত শিক্ষার্থী। এর প্রেক্ষিতে গত ৫ জুন ২০১৮ সালের জারিকৃত পরিপত্রটিকে অবৈধ বলে ঘোষণা করেন হাইকোর্ট।

এরপর থেকেই সারা দেশে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ফুঁসে ওঠেন। কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে নানা স্থানে বিক্ষোভ করেন কোটাবিরোধীরা। ঢাবি ছাড়াও বিক্ষোভ হয় জাবি, জবি, রাবি, সাত কলেজসহ দেশের স্বনামধন্য বিভিন্ন কলেজে।

আন্দোলন যখন তীব্র থেকে আরও তীব্রতর হচ্ছিল ঠিক তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ (ঢাবি) দেশে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে সোমবার (১৫ জুলাই) কোটা সংস্কার দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় অন্তত ২৫০ জন আহত হয় বলে খবর পাওয়া যায়। আহতরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।

মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) দেশের বিভিন্ন স্থানে আবারও আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়। এতে ছয়জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছেন শতাধিক শিক্ষার্থী।

নিহতদের মধ্যে চট্টগ্রামের তিনজন, ঢাকার দুইজন ও রংপুরের একজন রয়েছেন।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2024 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS