মহান আল্লাহ সর্বোত্তম অবয়বে মানুষ সৃষ্টি করেছেন। করেছেন সম্মানিত ও মর্যাদাবান। মানুষের প্রতিটি অঙ্গ মহান আল্লাহর দেয়া আমানত। এ আমানত রক্ষা করা মুমিনের দায়িত্ব ও কর্তব্য। আর ট্রান্সজেন্ডার মহান আল্লাহর দেয়া আমানতের বিরুদ্ধে চরম সীমালঙ্ঘন। এটি আল্লাহর সৃষ্টিতে ইচ্ছাকৃত পরিবর্তন আনা হয়।
ট্রান্সজেন্ডার বিশ্লেষণ ও উদ্দেশ্য-
ট্রান্সজেন্ডার হলো দুটি ইংরেজি শব্দ Trans ও gender-এর সংমিশ্রণ। Trans অর্থ পরিবর্তন করা এবং gender মানে লিঙ্গ। Transgender এমন একজন পুরুষ বা নারীকে বোঝায়, যাকে আল্লাহ তাআলা একজন পূর্ণ পুরুষ বা নারী হিসেবে সৃষ্টি করেছেন, কিন্তু তারা এই সৃষ্টিতে অসন্তুষ্ট। তারা আল্লাহর সিদ্ধান্ত ও তাদের জন্মগত লিঙ্গ পরিবর্তন করে পুরুষ থেকে নারী বা নারী থেকে পুরুষ হতে চায়।
ট্রান্সজেন্ডার প্রসঙ্গে ইসলাম কী বলে?
মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি সুন্দরতম গঠনে।’ (সুরা ত্বিন ৪) মহান আল্লাহ মানুষকে যে স্বাভাবিক দেহাবয়ব দিয়ে সৃষ্টি করেছেন, সেটাই তার জন্য উৎকৃষ্ট নেয়ামত। ইসলামি বিধি-বিধানের বাইরে গিয়ে একে পরিবর্তন-পরিবর্ধনের অধিকার কারও নেই। লিঙ্গ পরিবর্তন ইসলামে জঘন্যতম হারাম ও কবিরা গুনাহ। ইসলামে এর কোনো সুযোগ নেই।
মহান আল্লাহ পুরুষকে পুরুষালি বৈশিষ্ট্য দিয়ে সৃষ্টি করছেন, তা সেভাবেই বজায় রাখা এবং নারীকে যে নারীত্বের বৈশিষ্ট্য দিয়ে সৃষ্টি করেছেন তা-ও সেভাবে ধরে রাখাই ইসলামের বিধান। এটা এমনই এক ব্যবস্থা, যা না হলে মানবজীবন যথাযথভাবে চলবে না। হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নারীর বেশধারী পুরুষদের এবং পুরুষের বেশধারী নারীদের অভিসম্পাত করেছেন। (বুখারি ৫৮৮৫)
ইসলামি আইনবিদেরা এ বিষয়ে একমত যে, ট্রান্সজেন্ডার হচ্ছে মহান আল্লাহর সৃষ্টিতে বিকৃতিসাধন, যা সুস্পষ্ট হারাম। আবার অনেকের ভাষ্য মতে এটি কুফুরি। তাফসিরে কুরতুবিতে ইমাম কুরতবি (রহ.) বলেন, মহান আল্লাহর সৃষ্টিতে কোনোরূপ পরিবর্তন করা নাজায়েজ। (তাফসিরে কুরতুবি ৫/৩৯৩)
হাদিসেও এ ব্যাপারে কঠোর হুঁশিয়ারি বাক্য উচ্চারণ করা হয়েছে এবং যারা আল্লাহর সৃষ্টিতে বিকৃতি ঘটায় তাদের অভিসম্পাত করা হয়েছে।
হজরত আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) এমন সব নারীর ওপর অভিসম্পাত করেছেন, যারা অঙ্গে উলকি আঁকে ও অন্যকে দিয়ে উলকি আঁকায় এবং সৌন্দর্যের জন্য ভ্রুর চুল উপড়ে আল্লাহ তায়ালার সৃষ্টিকে পরিবর্তন করে (তিরমিজি ২৭৮২)।
আমাদের সমাজে হিজড়া বা তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের ধারণা আছে। ট্রান্সজেন্ডারবাদের কথা শুনলে বেশিরভাগ মানুষ মনে করে, এটা হয়ত হিজড়াদের অধিকার নিয়ে কোনো আন্দোলন। এটা মারাত্মক ভুল ধারণা। এই দুটি জিনিস একেবারেই আলাদা। নারী-পুরুষের মাঝামাঝি একটা অবস্থা আছে, পুরুষও নয়, নারীও নয়, অথবা নারী-পুরুষ উভয়ের সংমিশ্রণ; কোনো এক দিক চূড়ান্ত হওয়ার আগপর্যন্ত সেটিকে তৃতীয় লিঙ্গ বা হিজড়া বলা হয়। হিজড়াদের অধিকার ইসলামে স্বীকৃত।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply