বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:২২ অপরাহ্ন

ঈদুল আজহার দিনের গুরুত্বপূর্ণ আমলসমূহ

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : শুক্রবার, ১৪ জুন, ২০২৪
  • ১২৬ Time View

ঈদ অর্থ আনন্দ। এর শাব্দিক অর্থ হলো ‘বারবার ফিরে আসা’। এ দিনটি বারবার ফিরে আসে বলে এর নামকরণ করা হয়েছে ঈদ শব্দ দিয়ে। আল্লাহ তাআলা এ দিনে তার বান্দাকে নেয়ামত ও অনুগ্রহ দ্বারা বারবার ধন্য করে থাকেন, বারবার ইহসান করেন। রমজানের পানাহার নিষিদ্ধ করার পর আবার পানাহারের আদেশ প্রদান করেন।

ফিতরা প্রদান ও গ্রহণ, হজ পালন ও কোরবানির মাংস খাওয়া ইত্যাদি নেয়ামত বছর ঘুরিয়ে তিনি বারবার বান্দাদেরকে ফিরিয়ে দেন। এতে মানুষের প্রাণে আনন্দের সঞ্চার হয়। এসব কারণে এ দিবসের নাম ঈদ।

ইসলাম ধর্মে উৎসবের দিন দুটি এক. ঈদুল ফিতর, দুই. ঈদুল আজহা। এই দুটিই মূলত মুসলিম জাতির ধর্মীয় ও জাতীয় উৎসবের দিন। ইসলাম ধর্মে ঈদের প্রচলন শুরু হয় রসুলুল্লাহ (সা.)-এর মদিনায় হিজরতের প্রথম বছর অর্থাৎ প্রথম হিজরি থেকে। (কিতাবুল ফিকহ ১/৫৪৮) এখানে কোরবানি ঈদের দিনের কিছু আমল তুলে ধরা হলো।

এক. ঈদুল আজহার দিনে শ্রেষ্ঠ আমল হচ্ছে কোরবানি করা। কেননা এই দিনে আল্লাহ তাআলার কাছে সবচেয়ে পছন্দনীয় আমল হচ্ছে পশু জবাই করা।

দুই. ৯ জিলহজ দিবাগত রাত তথা ঈদের রাতে বেশি বেশি নেক আমল করা, তওবা ও ইস্তেগফার করা। (তারগিব ও তারহিব ২/৩৮৪)

তিন. পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পর ৯ জিলহজ্জ (১৬ জুন) ফজররের পর থেকে ১৩ জিলহজ (২০ জুন) আসর পর্যন্ত তাকবিরে তাশরিক পাঠ করা সকল নর-নারীর ওপর ওয়াজিব। (দুররে মুখতার ১/৭৯৮)

চার. ঈদের সকালে না খেয়ে গোসল, সুগন্ধি, মেসওয়াক করে ও তাকবির বলতে বলতে ঈদের মাঠে যাওয়া এবং মাঠ থেকে ফিরে এসে কোরবানি করে নিজের হাত-পায়ের নখ ও গোপনাঙ্গের লোম পরিষ্কার করে কোরবানির পশুর গোশত দিয়ে প্রথম খাবার শুরু করা। (আত-তারগিব ১/৩৩৫)

পাঁচ. কোরবানি ওয়াজিব নামাজ ও পর্দা করা ফরজ। অতএব ওয়াক্ত হলে সময়মতো নামাজ আদায় করবে, বেপর্দা হয়ে নারীপুরুষ অবাধে গোশত না কাটা এবং নাচ-গান ইত্যাদি অপসংস্কৃতি থেকে বিরত থাকতে হবে। (সুরা রুম ১৮, বুখারি ৩৪৯)

ছয়. ফ্রিজে গোশত সংরক্ষণ না করে গরিব-অসহায়দের মাঝে বিতরণ করা এবং ছোট পশু বা ভাগ হলেও নিকটতম গরিব-অসহায় আত্মীয় স্বজন, প্রতিবেশীদের জন্য কিছু অংশ বিতরণ করা বা একসাথে ও পাক করে কিছু বণ্টন করা সুন্নতও বটে। (তিরমিজি ১৫১০)

সাত. নিজের পশু নিজের হাতে জবাই করা সুন্নত। (বুখারি ৫৬২৪)

আট. ঈদের রাতে বা আগে পরে কবর জিয়ারত করা। (ফাতওয়ায়ে মাহমুদিয়া ২/২৭৭)

নয়. ঋণ থাকলে পরিশোধ করা এবং হক্কুল ইবাদ অর্থাৎ বান্দার হক আদায় করা। এক্ষেত্রে ঋণ যত দ্রুত সম্ভব পরিশোধ করা জরুরি। তবে দাতার সম্মতিতে ঋণ দেরিতে পরিশোধ করে কোরবানি দেওয়ায় কোনো বাধা নেই। আর যদি ঋণ আদায় করে দিলেও নেসাব পরিমাণ সম্পদ বাকি থাকে তাহলে তার ওপর কোরবানি ওয়াজিব হবে। (বাদায়েউস সানায়ে ৪/১৯৬)

সর্বোপরি রসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন যাদের সামর্থ্য আছে তারা যদি কোরবানি না করে, তাহলে সে যেন ঈদগাহে আমাদের নিকটবর্তী না হয়। (তারগিব ২/৩৯৪) অতএব, কোরবানি হোক আল্লাহপাকের সন্তুষ্টির জন্য। কেননা আল্লাহপাকের দরবারে গোশত ও রক্ত পৌঁছায় না বরং আমাদের আন্তরিকতা, শ্রদ্ধা ও তাকওয়া পৌঁছায়। (সুরা মায়িদা ২৭)

আল্লাহপাক আমাদের এই সকল আমলগুলো পালন করার যথাযথ তাওফিক দান করুক, আমিন।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2024 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS