মঙ্গলবার, ০৫ অগাস্ট ২০২৫, ০৫:৫৪ পূর্বাহ্ন

জি-সিরিজের প্রতারণা, দিশেহারা প্রযোজকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : সোমবার, ২৭ মে, ২০২৪

লেবেল কোম্পানি জি-সিরিজের নামে অডিও গান, সিনেমা ও সিনেমার গান কপিরাইট আইন লঙ্ঘন করে দিনের পর দিন প্রতারণা করে আসছে বলে অভিযোগ তুলেছে প্রখ্যাত সুরকার এবং সংগীত পরিচালক সত্য সাহার স্ত্রী রমলা সাহা ও শিরোনামহীন ব্যান্ড দলের লিডার জিয়াউর রহমান। শুধু তাই নয়, শিরোনামহীন ব্যান্ড থেকে দুদকে জি-সিরিজের দুর্নীতি অনুসন্ধানের জন্য আবেদনও করেন জিয়াউর রহমান।

সত্য সাহার স্ত্রী রমলা সাহা অভিযোগ করেন, প্রযোজকের অনুমতি ছাড়া ‘ছুটির ঘণ্টা’, ‘অশিক্ষিত’, ‘বিনিময়’, ‘পুরস্কার’ ও ‘রাম রহিম জন’ নামক ৫টি চলচ্চিত্রের গান জি-সিরিজের কর্ণধার প্রতারণা করে বাণিজ্যিকভাবে তার প্রতিষ্ঠানের ইউটিউব চ্যানেলসহ বিভিন্ন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে প্রদর্শন করে যাচ্ছেন।

অন্যদিকে বোর্ডের সিদ্ধান্ত তোয়াক্কা না করেই শিরোনামহীন ব্যান্ডদলের বেশকয়েকটি জনপ্রিয় গান বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করছে জি-সিরিজ। বোর্ডকে বৃদ্ধাঙ্গলি দেখিয়ে শিরোনামহীন ব্যান্ডের নিজস্ব এবং কপিরাইটকৃত বেশকিছু গান (বন্ধ জানালা, হাসিমুখ, জাহাজি, পাখি, ইচ্ছে ঘুড়ি, ভালোবাসা মেঘ, ক্যাফেটেরিয়া) বিদেশি কিছু কোম্পানির কাছে বিক্রি করে অবৈধভাবে প্রচুর অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১০ সালে দেশে সিডি ও ডিভিডির ব্যবসার প্রচলন খুব বেশি জনপ্রিয় ছিল। সেসময় সিডি ও ডিভিডির জন্য চুক্তিপত্র করতো প্রতিষ্ঠানটি। পরবর্তীতে দেশে প্রযুক্তির ক্রমবিকাশ হলে বাণিজ্যিকভাবেও ইন্টারনেটে সিনেমা ও গান প্রদর্শনের সুযোগ মেলে। সে সময় প্রতিষ্ঠানগুলো প্রযোজকদের কাছে গিয়ে পুনরায় চুক্তিপত্র ঠিক করার কথা বলেন। সে সময় চুক্তিপত্রে এনালগ ও ডিজিটাল যত প্ল্যাটফর্ম আছে সেগুলোতে যুক্ত করে চুক্তি পত্র করেন। এবং সেই চুক্তির মেয়াদ দেয়া হয় ৬০ বছর।

চুক্তি অনুযায়ী, সিনেমা ও সিনেমার গানগুলো নিজেরা মালিক বলে এককভাবে ব্যবসা করে যাচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন প্রযোজক। এ সব একপেশে চুক্তির বিরুদ্ধে কপিরাইট অফিসে আবেদন করেও কোনো সুরাহা হয়নি; এমনকি কপিরাইট অফিসও নিশ্চুপ। এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন প্রযোজক খোরশেদ আলম খসরু।

আরও তথ্য পাওয়া যায় জিসিরি প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে প্রযোজক, সুরকার ও শিল্পীদেরও।

জানা গেছে, বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে সত্তর-আশির দশকের কালজয়ী অনেক ছবির প্রযোজক এ কে এম জাহাঙ্গীর খান। তার সিনেমাগুলোও সিডি ও ডিভিডির সময় চুক্তিপত্র করে জিসিরিজ। আলমগীর পিকচার্সের ব্যানারে ‘যাহা বলিব সত্য বলিব’, ‘এখানে আকাশ নীল’, ‘অপবাদ’, ‘সূর্যকন্যা’, ‘কি যে করি’, ‘আলিঙ্গন’, ‘সেতু’, ‘সীমানা পেরিয়ে’, ‘মা’, ‘নোলক’সহ প্রায় জাহাঙ্গীর খানের প্রায় ৫০টি সিনেমা ডিজিটাল স্বত্ব না নিয়েও অবৈধভাবে বাণিজ্যিক ব্যবহার করছেন।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জাহাঙ্গীর খানের স্ত্রী নাহার বলেন, ‘আমাদের সিনেমাগুলো আমরা ডিজিটাল স্বত্ব কাউকে দেয়নি। কিন্তু সিনেমাগুলো জি-সিরিজ তাদের ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করেছে। তারা কীভাবে নিয়েছে সে বিষয়েও আমরা জানি না।’

অভিযোগের বিষয় জানতে চাইলে জি-সিরিজের কর্ণধার নাজমুল হক ভূঁইয়া সময় সংবাদকে বলেন, ‘আমাদের হয়রানি করার জন্যই এ ধরনের ঘটনা ঘটাচ্ছে। শিরোনামহীন যে অভিযোগ করেছে সেই গানগুলো আমাদের স্টুডিওতে করা। আমরা অর্থ লগ্নি করি। সে সময় চুক্তিও হয় আমাদের সঙ্গে। আসলে ব্যবসা করতে গেলে অনেকে শত্রুতা তো করবেই।’

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS