নিজস্ব প্রতিবেদকঃ চুয়াডাঙ্গায় অসুস্থ ও খাবার অনুপযোগী গরু জবাই চেষ্টা কালে চুয়াডাঙ্গা স্যানিটারিং ইন্সপেক্টরের অভিযানে অভিযুক্ত কসাইয়ের দু-জন সহকারী ও অসুস্থ গরু জব্দ করা হয়েছে। একই সাথে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা,ভোক্তা অধিকার ও নিরাপদ খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তাদের পরিচালিত আদালতের সামনে হাজির না হওয়ায় অভিযুক্ত কসাইয়ের বিরুদ্ধে নিরাপদ খাদ্য আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা শহরের রেলবাজারের মাংস পটিতে অসুস্থ গরু জবাইয়ের জন্য একটি অসুস্থ গরু আনা হয়েছে। স্থানীয় সোর্স মারফত বিষয়টি অবগত হয়ে চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার স্যানেটারি ইন্সপেক্টর নার্গিস আক্তার ও চুয়াডাঙ্গা সদর থানার একদল টহল পুলিশ ঘটনাস্থলে হাজির হওয়ার খবর শুনে কসাই রনির লোকজন গরুটিকে দ্রুত ভ্যানে তুলে পালানোর চেষ্টা করছিল। এ সময় স্যানেটারি ইন্সপেক্টর ও চুয়াডাঙ্গা সদর থানার পুলিশ অসুস্থ গরু সহ কসাইয়ের দু-সহকারীকে তাড়িয়ে ধরে আটক করে।
ঘটনাটি ১৯ মার্চ আনুমানিক রাত ১১ দিকে ঘটে। পরে স্থানীয় কাউন্সিলর ও সদর থানার টহল পুলিশের সহযোগিতায় কসাইয়ের দু-সহকারী ও অসুস্থ গরু টিকে চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার হেফাজতে নেয়া হয়। মূল কসাই রনি ২০ মার্চ সকাল ১০টায় চুয়াডাঙ্গা পৌরসভায় উপস্থিত হওয়ার শর্তে কসাইয়ের দু সহকারীকে তাদের নিজ নিজ পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেয়া হয়। উল্লেখ্য গত তিন দিন আগেও অসুস্থ গরু জবাইয়ের প্রস্তুতির একই অভিযোগ ছিলো এই কসাইয়ের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত কসাই রনি পৌর এলাকার আরামপাড়ার মোহাম্মদ গান্ধীর ছেলে।
চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জানান, রাতে রেলবাজার এলাকায় জবাই অনুপযোগী রোগাক্রান্ত অসুস্থ একটি গরু নিয়ে আসেন স্থানীয় কসাই রনি। পরে রাতের আঁধারে গরুটি জবাই করার প্রস্তুতিও নেন। জবাই করার আগেই পৌরসভার স্যানেটারি ইন্সপেক্টর এর তদারকি টিম গেলে গরুটি নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। খবর পেয়ে গরুটি পরিবহনে ব্যবহৃত ভ্যানসহ কসাই এর দুই সহকারীকে আটক করে সদর থানার উপ-পরিদর্শক রাকিবুজ্জামান। পরে আমিসহ পৌরসভার স্যানেটারি ইন্সপেক্টর নার্গিস জাহান ও আরো কয়েকজন কাউন্সিলর সেখানে উপস্থিত হই। জবাই অনুপযোগী গরুটি জব্দ করে পৌরসভার ভিতরে রাখা হয়েছে এবং সহকারী দুইজন অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় তাদেরকে অভিভাবকের জিম্মায় ছেড়ে দেয়া হয়েছে। মাত্র তিন দিন আগেও একই ধরনের অসুস্থ ও বড় গরু জবাইয়ের প্রস্তুতিকালে ধাওয়া করা হয় এই রনি কসাইকে।
২০ মার্চ সকাল ১০টায় চুয়াডাঙ্গা পৌরসভায় হাজির হন জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা, ভোক্তা অধিকার ও সংরক্ষণ কর্মকর্তা, জেলা নিরাপদ খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা সহ চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার কাউন্সিলরবৃন্দ, স্থানীয় প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ। কিন্তু অভিযুক্ত কসাই রনি পৌরসভায় হাজির না হওয়ায় বিধি মোতাবেক জেলা নিরাপদ খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা নিরাপদ খাদ্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০২৩’র৩৪ ধারা মোতাবেক মামলা দায়েরসহ চুয়াডাঙ্গা পৌরসভা তার লাইসেন্স বাতিল ও দোকান বন্ধ করার নির্দেশনা দেন।
জেলা নিরাপদ খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা সজীব পাল বলেন, এ মামলার ৩৪ ধারা মোতাবেক অভিযোগ প্রমাণিত হলে বিচারিক আদালত অভিযুক্ত কসাইয়ের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ ৩বছর জেল ও ৬ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দন্ডে দণ্ডিত হতে পারেন। সর্বনিম্ন ১ বছর জেল ও তিন লাখ টাকা জরিমানা হতে পারে। অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারেন অভিযুক্ত।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply