সূর্যের আলো ভিটামিন ডি’র অন্যতম প্রধান উৎস। এ ছাড়াও বিভিন্ন খাবার থেকে ভিামিন ডি পাওয়া যায়। শীতকালে অনেকের শরীরে ভিটামিন ডি’র ঘাটতি দেখা দিতে পারে। এই সময় দেহে ক্যালশিয়ামের বিপাক যথাযথ বজায় রাখার জন্য প্রতি দিন ১০-১৫ মিনিটের সরাসরি সূর্যালোক প্রয়োজন। শরীরের ভিটামিন ডি’র ঘাটতি হলে কিছু লক্ষণ দেখা দেয়।
তবে অনেকেই সকালের রোদ শরীরে লাগাতে পারে না। অন্যদিকে পুষ্টিকর খাবার না খেলে পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি মেলে না। তাই এই ভিটামিনের অভাব দেখা দেয় অনেকের শরীরেই।
১. সবসময় ক্লান্তিবোধ করা: অকারণে ক্লান্তিভাব, ঝিমুনি এবং শুয়ে বসে থাকার ইচ্ছে হতে পারে শরীরে ভিটামিন ডি-এর অভাবে। ভিটামিন ডি-এর মাত্রা বেশি কমে গেলে আপনার ক্লান্তি পিছু ছাড়বে না। কোনো কাজও ঠিকমতো করা সম্ভব হবে না।
২. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া: শরীরে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমতে শুরু করে ভিটামিন ডি-এর অভাবে, ঘা শুকাতেও অনেকটাই সময় লেগে যায়। যদি প্রায়ই অসুস্থ হয়ে পড়েন, বিশেষ করে সর্দি-কাশি বা ফ্লুতে ভোগেন তবে ভিটামিন ডি-এর কম মাত্রা এর কারণ হতে পারে।
৩. হাড় ও পিঠে ব্যথা: হাড় এবং পিঠের নিচের ব্যথা অপর্যাপ্ত ভিটামিন ডি মাত্রার লক্ষণ হতে পারে। ভিটামিন ডি শরীরের ক্যালসিয়াম শোষণ উন্নত করে হাড়ের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। হাড়, পেশিতে দুর্বলতা এবং ব্যথা, অস্থিসন্ধিগুলির বিকৃতি এবং দীর্ঘস্থায়ী পিঠে ব্যথা ভিটামিন ডি-এর ঘাটতির সাধারণ লক্ষণ হতে পারে।
৪. বিষণ্ণতা: শরীরে ভিটামিন ডি-এর মাত্রা কম হলে মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ দেখা দিতে পারে, যা ঘন ঘন মেজাজের পরিবর্তন ঘটাতে পারে। বিষণ্ণ লাগে সবসময়।
৫. ক্ষত শুকাতে দেরি হওয়া: যেকোনো ক্ষত নিরাময় হতে দেরি হলে অনেক কারণ থাকতে পারে তারমধ্যে ভিটামিন ডি-এর অভাবও অন্যতম। তাই চিকিৎসক আপনাকে বলতে পারবে ঠিক কোন কারণটিতে আপনি এই সমস্যায় ভুগছেন।
৬. হাড় ক্ষয়: অস্টিওপোরোসিস বা হাড় ক্ষয় রোগ এক নীরব ঘাতকের নাম। এটি এমন একটি অবস্থা, যেখানে শরীরের হাড়গুলো ঘনত্ব হারায় এবং আস্তে আস্তে ভঙ্গুর হতে শুরু করে। ফলে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হাড় ক্ষয় হতে শুরু করে। ভিটামিন ডি-এর মাত্রা কমে গেলে এমনটা হতে পারে।
৭. চুল পড়া: অতিরিক্ত চুল পড়া বিশেষ কিছু রোগের লক্ষণের মধ্যে পড়ে। ভিটামিন ডি-এর মাত্রা কমও এর একটি লক্ষণ। ভিটামিন ডি এর অভাবে মাত্রাতিরিক্ত চুল পড়ে যায়।
৮. পেশী ব্যথা: একটি গবেষণায় দেখা গেছে, দীর্ঘস্থায়ী ব্যথায় আক্রান্ত ৭১ শতাংশ লোকের ভিটামিন ডি প্রয়োজনের তুলনায় কম। তাই এমন সমস্যা হলে ভিটামিন ডি চেক করা প্রয়োজন।
৯. ওজন বৃদ্ধি: স্থূলকায় ব্যক্তিদের ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে কারণ মেদবহুল কোষগুলো শরীরে ভিটামিন ডি নিঃসরণে বাধা দেয়। আবার হঠাৎ ওজন কমতে থাকা শরীরের জন্য ভালো লক্ষণ নয়। ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়ার পরও ওজন কমা ভিটামিন ডি-এর অভাব হতে পারে।
১০. উদ্বেগ: শরীরে ভিটামিন ডি-র মাত্রা কম হলে মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ দেখা দিতে পারে। তা থেকে ঘন ঘন মেজাজ বিগড়ে যেতে পারে। স্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে, ভাল ভাবে বিশ্রাম নিয়েও যদি আলস্য কাটতে না চায় এবং ক্লান্ত বোধ করেন, তবে এটি ভিটামিন ডি-র অভাবের কারণে হতেই পারে।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply