শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:২৬ অপরাহ্ন

পাবনায় শীতের তীব্রতার সঙ্গে হাসপাতালে বাড়ছে রোগীর চাপ

মোহাম্মদ আলী স্বপন
  • আপডেট : সোমবার, ১৫ জানুয়ারী, ২০২৪
  • ২০৭ Time View

নিজস্ব প্রতিবেদক: পাবনায় দেখা নেই সূর্যের। হিমেল হাওয়ায় কাঁপছে জনপদের সাধারণ মানুষ। গত কয়েক দিন যাবৎ ভোর থেকে কুয়াশার প্রকোপ কম থাকলেও বেড়েছে শীতের তীব্রতা। এই দিকেও দেখা পাচ্ছে না  সূর্যের, অন্য দিকে বইছে উত্তরের তীব্র বাতাস-সব মিলিয়ে শীতে জবুথবু পাবনার প্রান্তিক জনপদের সাধারণ মানুষ।

সরেজমিন দেখা যায়, সকাল থেকে শীতের তীব্রতা থাকায় বিপাকে পড়ছেন কর্মজীবী থেকে বয়ষ্ক ও শিশু এবং শহরমুখী সাধরাণ মানুষরা। বিশেষ করে দৈনন্দিন খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ পড়েছেন চরম ভোগান্তির কাতারে।

শীতের কারণে মাঠ-ঘাট প্রায় ফাঁকা। ফসলের ক্ষেতে  কৃষকেরা তেমন একটা কাজ করতেও দেখা যায়নি। বিশেষ করে রিক্সাভ্যান-ইজিবাইকের সংখ্যাও কম রয়েছে রাস্তায়। অতি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাহিরে বের হচ্ছে না সাধারণ মানুষ। ফলে জেলার তৃণমূল পর্যায়ের হাট-বাজারেও লোকসমাগম অনেক অংশে কম।

ভ্রমণকালে কথা হয় অটোচালাক মোঃ রিপন এর সাথে তিনি বলেন, সকাল থেকেই প্রচুর শীত। এই কয়েক দিন যাবৎ কিন্তু সকালে তেমন কোনো যাত্রীর দেখা নাই। যাত্রী হয় অল্প তাও আবার ১০ টার দিকে থেকে দুপুর ও বিকাল এর দিকে। আমাদের মত সাধারণ মানুষ এই ঠাণ্ডার ভিতর রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো বহু কষ্টকর। আজকে সারাদিন বেশি ভাড়া মারতে পারি নাই।

আটঘরিয়ার বাসিন্দা মোঃ আঃ রহমান জানান, গত কয়েকদিন ধরেই প্রচুর শীত পড়ছে। তবে আজ সকাল থেকে শীত বেশি। উত্তরের বাতাসের কারণে শীত বেড়েছে। এর মধ্যে আবার রোদ নেই। সব মিলিয়ে মানুষের জীবন অনেক কষ্টের।

স্থানীয় কৃষক মোঃ সালাম, মোঃ আজিজুল , মোঃ সোহাগ জানান, শীতের কারণে কিছুদিন যাবৎ ক্ষেতে যেতে পারিনি। ঘর থেকে বাইরে বের হওয়া কষ্টকর। আমাদের মতো বয়স্কদের কাছে শীত বেশি মনে হয়। হাত-পা ঠাণ্ডা হয়ে আসে। এই দিকে শীতের কারণে শিশুদের ঠাণ্ডাজনিত রোগ বেড়েছে বলে মানুষের মুখে শুনতে পাচ্ছি। ফলে বেড়েছে শিশুদের ঠাণ্ডাজনিত রোগের ওষুধ বিক্রি।

উত্তরের হিমেল বাতাস আর মেঘে ঢাকা সূর্য। দুইয়ে মিলে কনকনে শীত বিরাজ করছে । আর এই কনকনে ঠাণ্ডায় জেলার প্রান্তিক পর্যায়ের জন সাধারণ আর ছিন্নমূল মানুষেরা পড়েছেন চরম বিপাকে। এই দিকে এই বৈরি আবহাওয়া বিরাজ করতে থাকলে জনজীবন বিপর্যস্ত হবে বলে জানান খেটে খাওয়া মানুষেরা।

পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. আবু মো. শফিকুল হাসান বলেন, শীতের শুরু থেকে উত্তরবঙ্গের অন্যসব জেলার মতো পাবনা জেলা সদর হাসপাতালেও ঠাণ্ডাজনিত রোগী বেড়েছে। কিছুদিন ধরে শীতজনিত রোগীর চাপ বেশি। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। শিশুর ক্ষেত্রে শ্বাসতন্ত্রের তীব্র সংক্রমণ (অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইনফেকশন) বেশি দেখা যাচ্ছে। অতিরিক্ত ঠাণ্ডায় স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাকের মতো রোগীও আসছে। হাসপাতালের মেডিসিন ইউনিটে ৭২টি শয্যার মধ্যে অর্ধেকের বেশি ঠাণ্ডাজনিত রোগী ভর্তি রয়েছে। যাদের বেশির ভাগের বয়স পঞ্চাশের ওপরে।

অধ্যাপক ডা. আবু মো. শফিকুল হাসান আরো বলেন, ছোট-বড় সবাইকে সুস্থ রাখতে শীতের কাপড় পরতে হবে, মাথা ঢেকে রাখতে হবে। শিশুর মাথায় ঠাণ্ডা লাগানো যাবে না এবং বাড়ির বাইরে শিশুদের নিয়ে অহেতুক ঘোরাঘুরি করা যাবে না। শিশুর পাঁজরের নিচের অংশ দেবে যাওয়া, জ্বর, শ্বাস নেওয়ার সময় শব্দ, বমি, নিউমোনিয়ার এসব লক্ষণের প্রতি সতর্ক থাকতে হবে। এসব লক্ষণ দেখা দিলে দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে নিতে হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2024 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS