জয়পুরহাট প্রতিনিধি: উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা জয়পুরহাট। উত্তরের হিমেল বাতাস আর ঘন কুয়াশায় প্রায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। হাসপাতালে বাড়ছে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীদের ভিড়। রাতে বৃষ্টির ফোঁটার মতো পড়ছে শিশির। এ দিকে কয়েক দিন ধরে দেখা মেলেনি সূর্যের। ফলে হাঁড় কাঁপানো শীতে কাবু হয়ে পড়েছেন মানুষ। বেশিরভাগ বিপাকে পড়েছেন শ্রমজীবী ও নি¤œআয়ের মানুষ। আর তার সঙ্গে যোগ দেয় ঘন কুয়াশা। এতে করে দিনের বেলায়ও যানবাহনকে লাইট জ্বালিয়ে চলতে হচ্ছে।
গ্রামীণ নারীরা জানান, বৃষ্টি না থাকলেও খুব ঠান্ডা। রাতে বৃষ্টির ফোটার মতো শিশির ঝরা শব্দ শোনা যায়। ঘরের মেঝে থেকে শুরু করে আসবাবপত্র ও বিছানা পর্যন্ত বরফ হয়ে উঠে। সকালে গৃহস্থালী কাজ করতে গিয়ে কনকনে ঠান্ডায় হাত-পা অবশ হয়ে আসে। দিনের বেলায় গ্রামীণ জনপদের নি¤œ আয়ের মানুষরা শীত নিবারণ করছে খড়কুটো জ্বালিয়ে।
জেলা আধুনিক হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা: শহিদ হোসেন জানান, শীত জনিত নানা রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। শিশু ও বয়স্করা বেশি পরিমাণে আক্রান্ত হচ্ছেন। বিশেষ করে শ্বাস কষ্ট জনিত রোগী বেশি পরিমাণে আক্রান্ত হচ্ছেন। রোদ ছাড়া শিশুদের বাইরে বের না হওয়া এবং গরম খাবার খাওয়ানোর পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। চিকিৎসকরা চিকিৎসা প্রদানের পাশাপাশি শীতজনিত রোগ থেকে নিরাময় থাকতে বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করছেন।
এদিকে তাপমাত্রা কমায় ব্যস্ততা বেড়েছে জেলার লেপ-তোশকের দোকানে। পাশাপাশি বিভিন্ন গরম কাপড়ের দোকানেও বিক্রি বেড়েছে। শীতের পিঠাপুলি তৈরির ধুম পড়েছে। সন্ধ্যায় সড়কের পাশের দোকানগুলোতে ভিড় করে মানুষ পিঠার স্বাদ উপভাগ করছেন। রেলওয়ে হকার্স মার্কেটে কমদামি কাপড়ের দোকানগুলোতে ছিন্নমূল মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।
ভ্যানচালক রাব্বি ইসলাম বলেন, গতকয়েক দিন থেকে সূর্যের দেখা মেলেনি। ঘন কুয়াশার কারণে বাসায় বসে আছি। বৃষ্টি নেই তবে কনকনে শীত। শীত বেশি হওয়ায় সকাল ও সন্ধ্যায় রাস্তায় মানুষের চলাচল কিছুটা কমে গেছে। ঠিকমতো ভ্যান ভাড়া হচ্ছে না।
বদলগাছী আবহাওয়া অধিদপ্তরের উচ্চ পর্যবেক্ষক হামিদুল হক বলেন, মেঘাচ্ছন্ন আকাশ আর ঘনকুয়াশার কারনে দুই দিন ধরে বদলগাছীতে সূর্যের দেখা নেই। শনিবার সকালে ১০ টা ৪৫ মিনিটে বদলগাছীতে ৮ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। গতকাল শুক্রবার রেকর্ড করা হয়েছিল ১০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঘন কুয়াশার সঙ্গে উত্তরের হিমেল বাতাস প্রবাহিত হওয়ায় কয়েকদিন ধরেই তাপমাত্রা নি¤œমুখী হতে শুরু করেছে। সর্বোচ্চ ও সর্বনি¤œ তাপমাত্রার ব্যবধান কমে যাওয়ায় তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতা ছিল ১০০
ভাগ।
জেলা ত্রাণ, পুনর্বাসন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা আব্দুল করিম জানান, জয়পুরহাট জেলার পাঁচ উপজেলায় ইতোমধ্যে প্রথম ধাপে ১৫ হাজার ১৫০ টি শীতবস্ত্র হিসেবে কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে ৪ হাজার ৭০ টি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে এবং তৃতীয় ধাপে ২ হাজার ৫০০ টি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে যার বিতরণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এ ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও বেসরকারি সংস্থা ছিন্নমূল মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ করছে।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply