জয়পুরহাট প্রতিনিধি: ২৪ ঘণ্টা বিনামূল্যে অ্যাম্বুলেন্স ও মায়েদের ডেলিভারি সেবা দিয়ে সুনাম কুড়াচ্ছে জয়পুরহাট মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র। প্রতিদিন প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে রোগীরা আসছেন সেবা নিতে। তবে এই হাসপাতালটিতে রয়েছে জনবল সংকট। এছাড়া দীর্ঘদিনের পুরনো ভবন জরাজীর্ণ হওয়ায় ঝুঁকি নিয়েই চলছে স্বাস্থ্যসেবা। তাই দ্রæত এই ভবনটি সংস্কারের দাবি সচেতন মহলের।
জানা গেছে, ১৯৭৯ সালে জয়পুরহাট শহরের শহরের ধানমন্ডি এলাকায় প্রতিষ্ঠিত হয় সরকারি মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র। যা জয়পুরহাট মাতৃমঙ্গল হাসপাতাল নামেও বেশ পরিচিত। হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার পর থেকেই রোগীদের সেবায় কাজ করে যাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। গত কয়েকমাসে এই হাসপাতালে তিনশতাধিক মায়ের স্বাভাবিক ডেলিভারি হয়েছে। জয়পুরহাটসহ আশেপাশের জেলা থেকে আসা নারীদের সম্পূর্ণ বিনা খরচে ডেলিভারি হয়।
চিকিৎসাসেবায় হাসপাতালটি সুনাম কুড়ালেও বর্তমানে জনবল সংকটের পাশাপাশি ভবনের অনেক জায়গায় ফাটল ধরেছে। কিছু জায়গায় খুলে পড়েছে পলেস্তারা। কোথাও দেওয়াল দিয়ে বের হয়েছে গাছের শেকড়। ভারী
বর্ষণে ছাদের ফাটল দিয়ে বৃষ্টির পানি পড়ে হাসপাতালের ওয়ার্ডে। তাই ঝুঁকিপূর্ণ এ ভবন সংস্কারের দাবি রোগী ও স্বাস্থ্যকর্মীদের। এছাড়া জনবল কম হওয়ায় দায়িত্বপ্রাপ্ত স্টাফদের অনেক সময় ডাবল ডিউটি করতে হয়। এতে
রোগীদের পাশাপাশি চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে হাসপাতালের স্টাফদের।
সেবা নিতে আসা সদর উপজেলার পুরানাপৈল গ্রামের প্রসূতির স্বামী আনিছুর রহমান বলেন, আমার স্ত্রীকে এই হাসপাতালে নিয়ে এসেছি। মেয়ে সন্তান হয়েছে। এখানে সেবা মোটামুটি ভাল। তবে দীর্ঘদিনের পুরনো এ হাসপাতালের ভবনের অনেক জায়গায় ফাটল ধরেছে। এতে আমরা নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি। ভূমিকম্প হলে প্রাণের একটা ঝুঁকি থেকে যায়। সরকার হাসপাতালটি আবার নতুন করে করলে সবার জন্য ভাল হয়।
পাঁচবিবি উপজেলার বেড়া খাই গ্রাম থেকে আসা ফাতেমা আক্তার বলেন, কয়েকবছর আগে এখানে এসেছিলাম তখন এখানকার ভবন ভাল ছিল। কিন্তু আজ এসে দেখলাম ফাটল ধরেছে। হাসপাতালে স্টাফও অনেক কম। হাসপাতালের স্টাফ বাড়ালে আরও ভাল সেবা পাওয়া যেত।
রুমি আক্তার নামে একজন বলেন, আমি আমার ছোট বোনকে এ হাসপাতালে নিয়ে এসেছি। চিকিৎসার জন্য কোনো টাকা দিতে হয়নি।
হাসপাতালের স্টাফ শ্রদ্ধা ইয়াসমিন বলেন, প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে রোগীরা হাসপাতালে আসছেন। আমরা জনবল কম নিয়েও রোগীদের কাঙ্ধিসঢ়;ক্ষত সেবা দিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু হাসপাতালের ভবন অনেক পুরনো। অনেক জায়গায় ফাটল ধরায় আমরা অনেক টেনশনে থাকি, কখন ছাদ ভেঙে পড়ে।
এ বিষয়ে জয়পুরহাট পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ-পরিচালক ডা. কে.এম জোবায়ের গালীব বলেন, এখানে মায়েদের স্বাভাবিক প্রসবের পাশাপাশি সিজারিয়ান সেবাও দেওয়া হয়। মাতৃমৃত্যু কমিয়ে আনার লক্ষ্যে হাসপাতালটি কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, এই হাসপাতালে পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা, জুনিয়র- সিনিয়র কনসাল্টেন্ট, শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকসহ কিছু জনবল সংকট রয়েছে। জনবল বাড়লে সেবার পরিসরটা আরও বাড়বে। এছাড়া নতুন করে এই
হাসপাতালগুলো প্রতিটি জেলায় ৫০ শয্যা বিশিষ্ট করার প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। আমাদের এই হাসপাতালও সেই তালিকায় রয়েছে।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply