চুয়াডাঙ্গা: জনপ্রিয় পত্রিকা দৈনিক আমার সংবাদ ও দা ডেইলি পোস্টের সম্পাদক- প্রকাশক, চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের দাতা সদস্য, আওয়ামী লীগ নেতা হাশেম রেজার বিরুদ্ধে মিথ্যা হামলা- মামলা, ভাংঙচুর, অপহরণ, হত্যা চেষ্টাসহ নানা ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ, মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করেছেন হাশেম রেজা সমর্থক গোষ্ঠী। গতকাল দুপুর সাড়ে ১১টায় চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সামনে হাশেম রেজার সমর্থক গোষ্ঠীর শতশত সাধারণ মানুষ মানববন্ধন প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কুড়ুলগাছি আদর্শ কৃষক সমবায় সমিতির সভাপতি মিজানুর রহমান, সহ-সভাপতি ফিরোজ উদ্দিন, কুলগাছি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন, উপদেষ্টা তারিফুজ্জামান মিন্টু, আব্দুল কুদ্দুস, আফতাব উদ্দিন, আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ আলী, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা জুলফিকার আলী জুলুম, যুবলীগ নেতা হাবিবুর রহমান হবি, সমাজসেবক আবু হানিফ, আশরাফুল মেম্বার, জসিম মেম্বার, আবুল হাশেম মেম্বার, শাহিন শাকিল সহ এলাকার বিশিষ্টজনেরা।
এ সময় মানববন্ধন প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশে সকলের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন হাশেম রেজা। হাশেম রেজা সকলকে শান্ত করে বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করে প্রশাসন সহ মিথ্যা হামলা-মামলা অপহরণকারীদের উদ্দেশ্যে জানাতে চাই, আমি জনগণকে কখনো বিপদে ফেলাতে চাই না। বরং জনগণের উপকার করতে গিয়ে আমি বারবার মিথ্যা হামলা -মামলা অপহরণ, হত্যা চেষ্টার একাধিক মিথ্যা মামলার শিকার হয়েছি। আমি প্রশাসন, সাংবাদিক বন্ধুগণ সহ সাধারণ মানুষের উদ্দেশ্যে বলতে চাই আপনারা সরেজমিনে গিয়ে আমার বিরুদ্ধে যে মিথ্যা অভিযোগ করেছে কথিত কিছু ব্যক্তি সেটি যাচাই-বাছাই ও তদন্ত করলেই মূল ঘটনা সকলের সামনে আসবে। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা হামলা মামলা দিয়ে বারবার আমাকে তারা ফাঁসাতে চেয়েছে। কিন্তু ফাঁসাতে না পেরে আমাকে এখন পুরোপুরি হত্যার পরিকল্পনা করেছে। যার অডিও রেকর্ডটি এখন এলাকার মানুষের হাতে হাতে পৌঁছে গেছে।
মানববন্ধন, বিক্ষোভ প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সম্মেলন কক্ষে দুপুর ১২ টায় সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সাংবাদিক সম্মেলনে হাশেম রেজা সমর্থকগোষ্ঠীর পক্ষে লিখিত বক্তব্য পেশ করেন দৈনিক আমার সংবাদ, দ্যা ডেইলি পোস্টের সম্পাদক- প্রকাশক কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক উপ- কমিটির সদস্য হাশেম রেজা ।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন,”আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা ভিত্তিহীন ও বানোয়াট। নিজেদের দোষ ঢাকতেই আমাকে ফাঁসাতে চেয়েছে ওরা।”
লিখিত বক্তব্যে উপরোক্ত কথাগুলো বলেন, তিনি আরো বলেন, ঢাকা থেকে প্রকাশিত একটি আন্ডারগ্রাউন্ড পত্রিকার কথিত সম্পাদকের আপন বড় ভাই কুড়ুলগাছি ইউপি চেয়ারম্যান পদে নৌকা প্রতীক নিয়ে ২০২১ সালে নির্বাচন করেছিলেন। তাদের পরিবার রাজাকার, স্মাগলার ও চোরাকারবারির সাথে যুক্ত হওয়ার কারণে কুড়ুলগাছি ইউনিয়নের বঙ্গবন্ধুর সৈনিক এবং আওয়ামী লীগ পরিবারের লোকজন তাকে প্রত্যাখ্যান করেন। ভীন্ন পথে কারসাজির মাধ্যমে এবং নেতৃবৃন্দকে ভুল বুঝিয়ে যে ব্যক্তি নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন, তার সুস্পষ্ট জবাব তাকে হারিয়ে দিয়ে প্রমাণ দিয়েছিল জনগণ। এই নির্বাচনে পাঁচজন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী অংশ নিয়েছিলেন কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করা ওই কথিত সম্পাদকের বড় ভাই পঞ্চম স্থান অধিকার করেছিলেন।
নির্বাচন-পরবর্তী সময়ে ওই কথিত সম্পাদক চুয়াডাঙ্গা-২ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী আমাকে দোষারোপ করেন এবং বিভিন্নভাবে আমার সম্মানহানি ও অর্থনৈতিক ক্ষতির চেষ্টা করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ২ জুলাই রোজ রোববার সকাল সাড়ে ১২টায় মাইকিং করে কুড়ুলগাছি সমবায় সমিতির মিটিং ভাঙ্গাকে কেন্দ্র করে একটি মারামারি সংঘটিত হয়। পূর্ব নির্ধারিত মিটিংয়ে ওই কথিত সম্পাদক প্রধান অতিথি হতে চেয়েছিলেন, যার ফলশ্রুতিতে এই মারামারি সংঘটিত হয়। এ মারামারিকে কেন্দ্র করেই কথিত ওই সম্পাদক নারী কেলেংকারি ও ধর্ষণ মামলার আসামি আমার নামে তিনটি মিথ্যা মামলা করিয়েছে। এর প্রেক্ষিতে আমরা বলতে চাই, কথিত এসব মিথ্যাবাদী ও ব্যক্তিস্বার্থ হাসিলকারীরা আমার (হাশেম রেজার) রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ও সমাজে হেয়প্রতিপন্ন করার মানসেই এসব অপকর্ম করে চলেছে।
এখানেই শেষ নয়, তিনি বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন অধিদপ্তরে আমার (‘হাশেম রেজা’ )নামে ভুয়া সার্টিফিকেট তৈরি করে জমা দিয়ে বিভিন্নভাবে মানহানির চেষ্টা করেছেন। কিন্তু এনএসআই, ডিএসবি, পিবিআই, ডিবিসহ বাংলাদেশ পুলিশের তদন্তে এর কোনো সত্যতা না পাওয়ায় তারা আমার কোনো ক্ষতি করতে পারেনি। এছাড়াও আমাকে হত্যার পরিকল্পনাও করেছে ওই কথিত সম্পাদক। ইতিপূর্বে এ সংক্রান্ত একটি অডিও ফাঁস হয়, যেখানে আমাকে হত্যার পরিকল্পনা করার বিষয়টি উল্লেখ রয়েছে।
এত কিছু করে আমার কোনো ক্ষতি করতে না পেরে তারা গ্রামের একজন সাজাপ্রাপ্ত চোর বাবুর আলীর সহযোগিতা নেয়। এই বাবুর আলী কথিত সাংবাদিকের ডান হাত হিসেবে পরিচিত। তিনি তক্ষক সাপের ব্যবসা করেন এবং কয়েন-মূর্তির ব্যবসা করেন। এছাড়াও তিনি কুড়ুলগাছি মাঠপাড়ার ইছার গরু, কামারপাড়া বাড়াদির ইমান আলীর মহিষ, ধান্যঘরার সেলিমের গরু ও কুড়ুলগাছির সাইদুরের মহিষ চুরি করেও জরিমানা গোনেন। এই চোর কুড়ুলগাছি আদর্শ কৃষক সমবায় সমিতির গভীর নলকূপের ট্রান্সফরমার চুরি করেন, যাতে হাজার হাজার কৃষকের ফসল নষ্ট হয়ে যায়। ওই চুরি ধরা পড়লে আমরা তার বিচার করি। আর সেই রাগে প্রতিনিয়ত তিনি আমার (হাশেম রেজার) ক্ষতিসাধনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কথিত ওই সম্পাদকের ডান হাত হিসেবে পরিচিত আশরাফুল হক জাকির- যে সাবেক শিবির নেতা ও ছাত্রলীগ নেতা হত্যামামলার আসামি।
এখন ওই কথিত সম্পাদকের বড় ভাই দর্শনা প্রেস ক্লাবের সামনে ‘কুড়ুলগাছি ইউনিয়নে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, মারামারি, ঘরবাড়ি ভাঙচুর, মানুষ হত্যাচেষ্টা ও বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও ন্যায়বিচারের দাবিতে মানববন্ধন’ এবং ‘সাংবাদিক শিমুল রেজাকে অপহরণ করে হত্যাচেষ্টা করায় আমাকে গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন’ শিরোনামে দুই ব্যানারে মানববন্ধন করেছে। যে মিথ্যা ও বানোয়াট কার্যক্রমের কোন ভিত্তি নেই। কথিত ওই সম্পাদকের বড় ভাইয়ের নির্দেশে এই মানববন্ধনের নেতৃত্ব দেন বিএনপি নেতা মাসুদ রানা নামের এক সন্ত্রাসী।
ওই মাসুদ রানা বলেছেন, আমি (হাশেম রেজা) আমার মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে আমাকে হত্যার চেষ্টা করেছেন। এ বিষয়ে আমি বলতে চাই, আমার নামে “সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, মারামারি, ঘরবাড়ি ভাঙচুর, মানুষ হত্যার চেষ্টা ও বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের কথা উল্লেখ করেছে ” তারা যেন উল্লিখিত ‘টাইটেলগুলো’ প্রমাণ করে। আর কথিত সাংবাদিক শিমুল রেজা গ্রামের মানুষদের ভয় দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে এক-দুই’শ টাকা চাঁদা নিয়ে থাকে এবং তার বাবা একজন দাগী চোর। সার্বিক বিষয়ে আলোচনা করার জন্য তাকে ডাকা হয়েছিল এবং আমাদের অফিসে বসে তার সাথে আমরা আলোচনা করেছিলাম। পুলিশ এসে তাকে কোনো হাত বাঁধা অবস্থায় দেখেনি। অথচ সে ৯৯৯-এ ফোন করে বলেছে হাশেম রেজা তাকে হাত বেঁধে অপহরণ করেছেন। সে আরও বলেছে, কার্পাসডাঙ্গা বাজার থেকে তাকে উঠিয়ে আনা হয়েছে। আমরা চাই তার ভিডিও ফুটেজ জনগণের সামনে প্রকাশ করা হোক। তিনি আরও বলেন, হাশেম রেজা তার মোবাইল ফোন চুরি করেছেন।
আমরা বলতে চাই, আমি হাশেম রেজা স্বনাধন্য দুটি জাতীয় দৈনিকের সম্পাদক ও প্রকাশক, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের শিক্ষানবিশ আইনজীবী, ব্যবসায়ী, আওয়ামী লীগের সেন্ট্রাল সাব-কমিটির মেম্বার ও চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী। আমার বিরুদ্ধে এ ধরনের মন্তব্য মারাত্মক মানহানিকর। এ বিষয়ে আমরা চুয়াডাঙ্গায় কর্মরত সকল সম্মানিত সম্পাদক ও সাংবাদিকদের কাছে অনুরোধ করব, ইতিপূর্বে আমার বিরুদ্ধে যেসব সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে, সে বিষয়গুলো যদি আপনারা আমাদের এলাকার জনসাধারণের কাছে গিয়ে সত্য ঘটনা শুনে-বুঝে সংবাদ প্রকাশ করেন, তাহলে জনসাধারণ সত্য ঘটনাটি জানাতে পারবে। আর চুয়াডাঙ্গা জেলার পুলিশ সুপার, দামুড়হুদা থানার অফিসার ইনচার্জ ও দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জের কাছে অনুরোধ থাকবে- বিষয়গুলো তদন্ত করে সঠিক বিচারে সহযোগিতা করার জন্য এবং সম্পাদক হাশেম রেজার বিরুদ্ধে যেসব সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে, সে বিষয়গুলো তদন্ত করে দামুড়হুদা থানায় শিমুল রেজা যে মিথ্যা মামলা করেছে, তার সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক দ্রুত সঠিক প্রতিবেদন দেয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।
পরিশেষে আমি বলতে চাই, উপরোক্ত আন্ডারগ্রাউন্ড ওই পত্রিকাটির সম্পাদক কর্তৃক আমার বিরুদ্ধে এ যাবৎ যেসব মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে, তা যদি দুষ্টুচক্রটি প্রমাণ করতে পারে, তাহলে এর সম্পূর্ণ দায়দায়িত্ব আমি হাশেম রেজা বহন করবো। এ ব্যাপারে আমি এলাকাবাসীসহ সাংবাদিক ও প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করছি।
লিখিত বক্তব্য শেষে হাশেম রেজা সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। এ সময় তিনি বলতে থাকেন সাংবাদিকরা জাতির বিবেক,সমাজের দর্পণ। আপনারা ইচ্ছা করলেই তদন্ত করে মূল ঘটনা উদঘাটন করতে পারেন। তাই আপনারা কারোর বানানো গল্প ও নাটকের গল্প শুনে নিউজ না করে, সরাসরি স্পটে গিয়ে তদন্ত করে সেই অনুযায়ী রিপোর্ট করলে দেশ জনগণ ও জাতি সঠিক তথ্যগুলো পাবে, উপকৃত হবে সাধারণ খেটে খাওয়া কৃষক সমাজ।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply