বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ০৬:৫৫ অপরাহ্ন

গাইবান্ধায় হিমালয়ান শকুন উদ্ধার

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : শনিবার, ১৫ এপ্রিল, ২০২৩

স্টাফ রিপোটারঃ গাইবান্ধা সদর উপজেলার কুপতলা ইউনিয়নের স্কুলবাজার এলাকা থেকে একটি হিমালয়ান প্রজাতির শকুন উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার বিকেলে শিক্ষার্থীদের পরিবেশবাদী সংগঠন তীর গাইবান্ধা সরকারি কলেজ শাখার সদস্যরা এ শকুন উদ্ধার করেন।

তীর সূত্রে জানা যায়, তীরের সদস্যরা বিকেলে মুঠোফোনে খবর পান, স্কুলবাজার এলাকায় একটি অসুস্থ শকুন আটক করে রেখেছেন এলাকাবাসী। পরে তীর কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রিফাত হাসান, আইইউসিএনের শকুন সংরক্ষণ প্রকল্পের মুখ্য গবেষক সারোয়ার আলম ও গাইবান্ধা বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শরিফুল ইসলামকে বিষয়টি সম্পর্কে অবগত করা হয়। তাঁদের সহায়তায় ও পরামর্শে শকুনটি উদ্ধার করা হয়।

উপস্থিত ছিলেন তীর গাইবান্ধা সরকারি কলেজ শাখার সদস্য ও সাবেক সভাপতি জিসান মাহমুদ, বর্তমান সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রহীম, সদস্য রাশেদুল ইসলাম প্রমুখ।

উল্লেখ্য, এই বছর তীর গাইবান্ধা সরকারি কলেজ শাখা মোট ৭টি হিমালয়ান শকুন উদ্ধার করে। শকুন উদ্ধার শেষে স্থানীয় লোকজনের মধ্যে জনসচেতনতামূলক প্রচারপত্র বিতরণ করা হয়। সন্ধ্যায় কর্তৃপক্ষের পরামর্শক্রমে শকুনটিকে গাইবান্ধা বন বিভাগে হস্তান্তর করা হয়।

জিসান মাহমুদ বলেন, হিমালয়ান শকুন হচ্ছে প্রকৃতির ঝাড়ুদার। শকুন বড় ডানার বৃহদাকার পাখি। এটি তীক্ষ্ণ দৃষ্টির অধিকারী ও মৃত প্রাণী ভক্ষণকারী পাখি। শকুনই একমাত্র প্রাণী, যারা রোগাক্রান্ত মৃত প্রাণী খেয়ে হজম করতে পারে এবং অ্যানথ্রাক্স, যক্ষ্মা, খুরারোগের সংক্রমণ থেকে জীবকুলকে রক্ষা করে।

জিসান মাহমুদ আরও বলেন, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘তীর’ শকুনসহ সব বন্য প্রাণী সংরক্ষণে ২০১১ সাল থেকে কাজ করে যাচ্ছে। বন্য প্রাণী সংরক্ষণে ভূমিকার জন্য সংগঠনটি ‘বঙ্গবন্ধু অ্যাওয়ার্ড ফর ওয়াইল্ড লাইফ অ্যান্ড কনজারভেশন-২০২১’-এ ভূষিত হয়।

তীর গাইবান্ধা সরকারি কলেজ শাখার সভাপতি জাহিদ রায়হান বলেন, বাংলাদেশে সাত প্রজাতির শকুন ছিল। এর মধ্যে রাজশকুন পুরোপুরি বিপন্ন হয়ে গেছে। এ দেশের স্থায়ী বাংলা শকুন ও সরুঠোঁটি শকুনও রয়েছে খুব কম। আইইউসিএনের হিসাবে, দেশে ২৬০টির মতো বাংলা শকুন টিকে আছে। এ ছাড়া দেশে তিন প্রজাতির পরিযায়ী শকুন দেখা যায়। এর মধ্যে হিমালয়ান গৃধিনী অন্যতম।

প্রকৃতি সংরক্ষণবিষয়ক সংস্থাগুলোর জোট আইইউসিএনের শকুন সংরক্ষণ প্রকল্পের এক কর্মকর্তা বলেন, হিমালয়ের ঠান্ডা ও হিমঝড়ে নভেম্বর-ডিসেম্বরের দিকে হিমালয়ান গৃধিনীগুলো সমতলের দিকে আসে। মার্চের দিকে আবার চলে যায়। একেকটা শকুনকে প্রায় এক হাজার কিলোমিটার আকাশপথ পাড়ি দিতে হয়। দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে সমতলে এসে তারা পর্যাপ্ত খাবার পায় না। তাই ভ্রমণক্লান্তিতে বিভিন্ন এলাকায় মাটিতে পড়ে থাকা অবস্থায় পাওয়া যায়।

আইইউসিএনের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলেন, প্রচারণার ফলে বর্তমানে উত্তরাঞ্চলের যেকোনো স্থানে অসুস্থ শকুন পেলে স্থানীয় লোকজন তীর-এর স্বেচ্ছাসেবীদের কাছে খবর দেন। স্বেচ্ছাসেবীরা সেগুলো উদ্ধার করে প্রাথমিক পরিচর্যার পর ‘শকুন উদ্ধার ও পরিচর্যাকেন্দ্রে’ হস্তান্তর করেন।

একেকটি হিমালয়ান গৃধিনীর ওজন ১৩ কেজি পর্যন্ত হয়। তবে বাংলাদেশে তাদের যখন পাওয়া যায়, তখন ওজন থাকে চার-পাঁচ কেজি। মরা প্রাণী তাদের প্রধান খাদ্য। খাদ্য ও বাসস্থানের অভাবে দেশে শকুনদের অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS