ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল), ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট লিগের ইতিহাসে নিঃসন্দেহে সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং ব্যয়বহুল টুর্নামেন্ট। বর্ণিল এবং জাঁকজমক টুর্নামেন্ট ঘিরে বিশ্বব্যপী উন্মাদনাও থাকে ব্যাপক। আর থাকবেই-বা-না কেন! বিশ্বের সব দেশের তারকা ক্রিকেটাররাই যে পারফর্ম করেন এই লিগে।
অন্যসব দেশের মতো বাংলাদেশ থেকেও প্রতিবছর দু-একজন তারকা সুযোগ করে নেন আইপিএলে। এবার তো সেই সংখ্যাটা গিয়ে ঠেকেছিল তিনে। তবে পারিবারিক সমস্যার কারণে টুর্নামেন্টের চলতি আসরে খেলতে পারছেন না সাকিব আল হাসান। বাকি দুজনের মধ্যে লিটন দাস জায়গা পেয়েছেন কলকাতা নাইট রাইডার্সে আর দিল্লি ক্যাপিটালসের হয়ে খেলবেন মুস্তাফিজুর রহমান।
আইপিএল খেলতে বাংলাদেশের দুই তারকাই এখন অবস্থান করছেন ভারতে। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ শেষ করে আজই কলকাতায় গিয়ে পৌঁছেছেন লিটন আর মুস্তাফিজ দিল্লি টিমের সঙ্গে আছেন বেশ কিছুদিন ধরেই।
এবারের আইপিএলের শুরু থেকেই এনওসি পাওয়া নিয়ে ছিল তুমুল নাটক। টুর্নামেন্ট শুরুর আগেই এনওসির জন্য আবেদন করেন টাইগারদের তিন তারকা। তবে বোর্ড কর্মকর্তাদের স্পষ্ট জবাব, আন্তর্জাতিক বিরতির সময়েই যেতে হবে আইপিএলে। তবে আইরিশদের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের পর হুট করেই এনওসি পেয়ে যান মুস্তাফিজ। বিষয়টা অবশ্য বেশ বোধগম্য। বাংলাদেশের টেস্ট দলে খুব একটা বিবেচিত হন না তিনি।
সব নাটকের শেষে আইপিএল শুরুর পরদিনই দিল্লিতে গিয়ে পৌঁছান মুস্তা। মুস্তাফিজ যেদিন সেখানে পৌঁছান, সেদিনই খেলা ছিল দিল্লি ক্যাপিটালসের। অনেকেই ধারণা করে নিয়েছিলেন, প্রথম ম্যাচেই খেলবেন কাটার মাস্টার। ধারণা করার অবশ্য কারণও রয়েছে। প্রথম ম্যাচের আগে প্রাইভেট বিমানে করে মুস্তাকে নিয়ে গিয়েছিল দিল্লি ফ্র্যাঞ্চাইজি। এতটা গুরুত্ব দিয়ে একজন খেলোয়াড়কে উড়িয়ে নিয়ে যে বসিয়ে রাখা হবে সেটা কেই-বা জানত।
প্রথম ম্যাচে হেরে টুর্নামেন্ট শুরু করার পর দ্বিতীয় ম্যাচেও মুস্তাফিজের প্রতি আগ্রহ দেখায়নি দিল্লি। এমনকি ইমপ্যাক্ট খেলোয়াড়ের তালিকায়ও ছিলেন না তিনি। তৃতীয় ম্যাচেও একই ঘটনা। তবে তাকে যে একদমই প্রয়োজন পড়ছে না ফ্র্যাঞ্চাইজিটির, এমনটাও না! মাঠে না নামলেও ফ্র্যাঞ্চাইজি দলটির সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিয়মিত মুখ তিনি।
এবারের আইপিএল খেলতে মুস্তাফিজের দিল্লিতে পা রাখার নবম দিন আজ। এই নয় দিনে দিল্লির অফিশিয়াল ফেসবুকে শুধু মুস্তাফিজের একক ছবিই আপলোড হয়েছে আটটি। অথচ দলের অধিনায়ক থেকে শুরু করে কোচ, কারোরই এর অর্ধেক ছবিও নেই সেই পেজে। প্রতিদিনই কোনো না কোনো পোস্ট লেগেই থাকে এই কাটার মাস্টারকে নিয়ে। নেটিজেনদের অনেকেরই ধারণা, এসব পোস্টের মাধ্যমে নিজেদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অ্যাকটিভ ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়াচ্ছে ফ্র্যাঞ্চাইজি দলটি।
বাংলাদেশ অনেক ক্রিকেটপ্রেমী দেশ। তাই স্বাভাবিকভাবেই আইপিএলে বাংলাদেশি কোনো খেলোয়াড়ের প্রতিনিধিত্ব করলে তার দিকে নজর থাকে দেশের ক্রিকেটভক্তদের। প্রভাবটা লক্ষ করা যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও। বাংলাদেশি কোনো ক্রিকেটারকে নিয়ে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট দলগুলো কোনো ধরনের পোস্ট করলেই বাংলাদেশি সমর্থকদের ব্যাপক সাড়া পাওয়া যায়। নেটিজেনদের ধারণা, এ বিষয়টিকে ব্যবহার করেই ফায়দা নিচ্ছে আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো।
শুধু মুস্তাফিজ নয়, এবারের আইপিএলে পা রাখার আগেই লিটন দাসকে নিয়েও এমন অনেক প্রচারণা চালিয়েছে কলকাতা নাইট রাইডার্স। তবে রোববার কলকাতার বিমানে ওঠার আগে এই ওপেনার নিজেই জানিয়ে গেছেন, খেলবেন কি না নিশ্চিত নন তিনি নিজেও। নিজের প্রথম আসরে খেলতে গিয়ে আদৌ কোনো ম্যাচ পান কি না লিটন, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply