বুধবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৫, ০৬:৫৭ অপরাহ্ন

ফুটপাতে খাবার বিক্রি বন্ধ চেয়ে ১০ আইনজীবীর লিগ্যাল নোটিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : বৃহস্পতিবার, ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩

রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতাল, স্কুল-কলেজ, মার্কেটের সামনেসহ ফুটপাত ও এর পাশে নোংরা পরিবেশে নানা ধরণের অস্বাস্থ্যকর মুখরোচক খাবার বিক্রি বন্ধে সরকারসহ সংশ্লিষ্টদের আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ নিরাপদ থানা কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক এবং ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের দুই প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাসহ মোট সাত জনকে নোটিশটি পাঠানো হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) জনস্বার্থে দেশের ১০ আইনজীবীর পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. জে আর খান রবিন নোটিশটি পাঠান। নোটিশপ্রেরণকারী ১০ আইনজীবী হলেন- সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শাম্মী আক্তার, ঢাকা জজ কোর্টের আইনজীবী মো. বাহাউদ্দিন আল ইমরান, মো. হাসান মিলু, আবিদ হোসেন, ইমরান হোসেন, জাহিদ হাসান ফাহাদ, এটিএম রেজাউন, শাহেন শাহ, মো. আরশাদ আলী এবং মো. সুমন হোসেন।

নোটিশে বলা হয়েছে, বেঁচে থাকার জন্য মানুষের খাবার গ্রহণ অপরিহার্য। কিন্তু খাবার যদি হয় অনিরাপদ, তাহলে তা হতে পারে মানুষের নানা রোগসহ মৃত্যুর কারণ। বর্তমানে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতাল, স্কুল-কলেজ ও মার্কেটের সামনেসহ ফুটপাত ও ফুটপাতের পাশে নোংরা পরিবেশে নানা ধরণের অস্বাস্থ্যকর মুখরোচক খাবার বিক্রি হয়, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি স্বরূপ।

বিশ্বের অনেক দেশেই রাস্তার খাবার তৈরি ও পরিবেশন করা হয় স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশে। কিন্তু বাংলাদেশে অধিকাংশ রাস্তার খাবার প্রস্তুত ও বিক্রির ক্ষেত্রে এসবের কোনও বালাই নেই। দূষিত পানি, ধুলাবালি, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ অধিকাংশ রাস্তার খাবারকে করে তুলেছে অনিরাপদ। ফলে যে বিপুলসংখ্যক মানুষ প্রতিদিন এসব খাবার খান, তারা বড় ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকিতে থাকেন। যে সড়ক ও ফুটপাতে এসব খাবার বিক্রি হয়, সেগুলো ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে রাস্তার খাবার দোকানের নিবন্ধন বা অনুমোদন দেওয়ার ব্যবস্থা নেই। কোনও কর্তৃপক্ষের কাছে রাস্তার খাবার বিক্রেতাদের কোনও তালিকাও নেই। খাবারের মান তদারকির দায়িত্বে থাকা নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের কার্যক্রমও রাস্তার খাবারের ক্ষেত্রে একেবারেই সীমিত। এই বিষয়ে গত ২ ফেব্রুয়ারি দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় ‘রাস্তার খাবার নিরাপদ করতে উদ্যোগ নেই’ এবং ৭ ফেব্রুয়ারি দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকায় ‘স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়াচ্ছে রাস্তার খাবার’ শিরোনামে দুইটি খবর প্রকাশিত হয়।

কিন্তু দুঃখের বিষয় হলেও সত্যি, বাংলাদেশে জুতাসহ আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র বিক্রি হয় স্বাস্থ্যকর পরিবেশে। অন্যদিকে খাবার বিক্রি হয় খোলা অবস্থায় নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে, যা কোনভাবেই কাম্য নয়। এটা ২০১৩ সালের নিরাপদ খাদ্য আইনের ২৫, ২৯, ৩৩ ধারার ও ২০০৯ সালের ভোক্তাঅধিকার সংরক্ষণ আইনের ২৭, ২৯, ও ৩৬ ধারার পরিপন্থী। তাছাড়া জনস্বাস্থ্যের বিষয়ে সংবিধানের ১৮(১) ও ৩২ অনুচ্ছেদে উল্লেখ থাকলেও নোটিশ গ্রহীতারা এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছেন। তাই উল্লেখিত মোয়াক্কেলরা সংবিধানের ২১ অনুচ্ছেদের বিধান অনুযায়ী অনুপ্রাণিত হয়ে জনস্বার্থে দেশের মানুষের মৌলিক অধিকার রক্ষার্থে এ নোটিশ পাঠাতে বাধ্য হয়েছেন।

উল্লেখিত কারণে এই নোটিশ পাওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতাল, স্কুল-কলেজ, মার্কেটের সামনেসহ ফুটপাত ও এর পাশে নোংরা পরিবেশে খাবার বিক্রি বন্ধ করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করাসহ কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের লক্ষ্যে বিশেষভাবে অনুরোধ জানানো হলো। তবে এর ব্যর্থতায় উল্লেখিত মোয়াক্কেলরা আপনাদের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে রিট দায়েরসহ দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবেন বলেও নোটিশে জানানো হয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS