শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫, ০১:৪৩ পূর্বাহ্ন

হোঁচট খাবে না তো ব্রাজিল?

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : বৃহস্পতিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২২

আর্জেন্টিনার হারার পর ব্রাজিলের সমর্থকরাও বেশ চাপে পড়ে গেছে। পুঁচকে সৌদি আরব পারলে ইউরোপীয় প্রতিপক্ষ সার্বিয়ারও ধাক্কা দেওয়ার সামর্থ্য আছে ব্রাজিলকে। এবারের বিশ্বকাপে যে ছেড়ে বলছে না কেউই। তাই সবার মনে একই প্রশ্ন। হোঁচট খাবে না তো ব্রাজিল ?

মনের ভয় বড় সাংঘাতিক। এটার আগ্রাসনে পড়লে আপনার বিশ্বাস ও সামর্থ্য সব গুলিয়ে যাবে। অনেক সমর্থকের সেটা গুলিয়ে গেলেও তার প্রভাব পড়েনি ব্রাজিল দলে। তারা বিশ্বাস করে, অঘটন বারবার ঘটে না। নেইমারের দুর্দান্ত ফর্ম ও তারুণ্যের মহাজাগরণে লুসাইল স্টেডিয়ামে সেলেসাওদের বিশ্বকাপ শুরু হবে হেক্সা জয়ের বার্তা দিয়ে। এখানে চাপ আছে, আনন্দ আছে। তাই তিতে মুখ ফুটে শিরোপার কথা বলে যেন বাড়তি চাপ অনুভব করতে চাননি, কিন্তু শেষ পর্যন্ত বলতেই হয়েছে, ‘চাপ সব সময় আছে। তবে চাপটা হলো পুরো দেশ আমাদের সঙ্গে আছে, আমাদের ভালোবাসে। আমরা স্বপ্ন দেখি; কিন্তু একটি দলই চ্যাম্পিয়ন হবে। তাই চাপ কোনোভাবেই এড়ানো যাবে না। ’

তাদের সর্বশেষ বিশ্বজয়ের ঘটনা ২০০২ সালে কোরিয়া-জাপান বিশ্বকাপে। ২০ বছর বাদে বিশ্বকাপ ফিরেছে এবার ফিরেছে সেই এশিয়ায়। এর পরও অনেকের মন খচ খচ করে সার্বিয়া-

সুইজারল্যান্ডের গ্রুপ বলে। ইউরোপীয় বলেই ভয়। গত চার আসরে ইউরোপীয় প্রতিপক্ষের কাছে হেরেই বিদায় নিয়েছিল সেলেসাওরা। ২০০৬ সালে হারে জিনেদিন জিদানের ফ্রান্সের কাছে, চার বছর পর অরিয়েন রোবেনের নেদারল্যান্ডসের কাছে। ২০১৪ সালে নিজেদের মাঠে জার্মানির কাছে লজ্জাকর হারে শোকস্তব্ধ হয়েছিল পুরো ব্রাজিল। নতুন উদ্যমে ২০১৮ সালে রাশিয়া বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে তারা বিদায় নেয় রবার্তো মার্তিনেজের ‘ট্যাকটিক্যাল মাস্টার ক্লাসে’।

বেলজিয়ামের কাছে সেই হারের রাতটা এখনো ভুলতে পারেননি তিতে। সারা ম্যাচ খেলল ব্রাজিল, থিবো কর্তোয়া প্রাচীর হয়ে দাঁড়িয়ে ঠেকিয়ে দিল সব শট। এরপর রবার্তো মার্তিনেজের ‘ট্যাকটিক্যাল মাস্টার ক্লাসে’ স্বপ্ন ভেঙে চুরমার তিতের। সারা রাত নির্ঘুম কাটিয়ে নিজের ভুলটা নিশ্চিতভাবে ধরতে পেরেছিলেন তিতে। এর পর থেকে উঠে পড়ে লাগেন মধ্যমাঠ নিয়ে। আসল খেলাটা তৈরি হয় ওখানে, তাই ব্রাজিল কোচের নজর মাঝমাঠের ভারসাম্যের ওপর, ‘আমাদের গোল করার রেকর্ড খুব ভালো। বাছাই পর্বে ২৯ ম্যাচের ২২টি কোনো গোল খাইনি আমরা। আক্রমণভাগ কিংবা রক্ষণভাগ ঠিক থাকলেই হয় না। দলের ভারসাম্যের জায়গা হলো মধ্যমাঠ, ওখানে গতি থাকলে বুঝতে হবে দলের ভারসাম্য আছে। ’ এই ভারসাম্যপূর্ণ দলটি নিয়ে কোচ কিছুই বলতে চাননি। সাংবাদিকরা বিভিন্নভাবে খুঁচিয়ে কিছু বের করতে পারেননি, ‘দলের কথা আমি কখনো বলব না। এটা ফলাও করে জানিয়ে আমি প্রতিপক্ষকে সুযোগ দিতে চাই না। একাদশে কেউ থাকবে, কেউ বাইরে থাকবে। যারা বিভিন্ন ক্লাব দলে বেশ দাপটের সঙ্গেই খেলে তারাই থাকবে দলে। ’

কোচ এড়িয়ে গেলেও এই কয়েক দিনের ট্রেনিংয়ে সার্বিয়ার বিপক্ষে চূড়ান্ত একাদশ আঁচ করা যায়। ৪-১-৪-১ ফরমেশনে কাসেমেরো খেলবেন ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডে। এরপর পাকেতা, নেইমার, ভিনিসিয়ুস ও রাফিনহার খেলার সম্ভাবনা প্রবল। তাঁদের সামনে, অর্থাৎ নাম্বার নাইন পজিশনে জেসুস। এ রকমই ইঙ্গিত মিলেছে সংবাদ সম্মেলনে। তাঁর পেছন থেকে নেইমারই দলে সৃষ্টিশীলতা যোগ করবেন কিংবা চূড়ান্ত পাস বাড়াবেন। আগের মৌসুমটা ভালো না খেললেও পিএসজির এই তারকা বিশ্বকাপের মৌসুমটা দারুণ শুরু করেছেন। পিএসজির জার্সিতে ২০ ম্যাচে ১৫ গোল ও ১২ অ্যাসিস্ট নিয়ে তিনি এসেছেন কাতারে। মজা করে ঘোষণাও দিয়েছেন ‘মেসিকে হারিয়ে’ বিশ্বকাপ জিতবেন বলে হুমকিও দিয়েছেন। সেটা মুখের কথা হলেও ব্রাজিলের মনের কথাও এটা।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS