শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫, ১১:০১ অপরাহ্ন

কাতারকে হারিয়ে ‘কাতার বিশ্বকাপে’ ইকুয়েডরের দুর্দান্ত শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : সোমবার, ২১ নভেম্বর, ২০২২

কাতারকে হারিয়ে কাতার বিশ্বকাপে ইকুয়েডরের দুর্দান্ত শুরু। বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে ২-০ গোলে জয়ে পায় লাতিন আমেরিকার দলটি। দুটি গোলই করেন ইনার ভ্যালেন্সিয়া।

ভ্যালেন্সিয়ার জোড়া গোল, প্রথমার্ধে পাত্তাই পায়নি কাতার

ঘরের মাঠে বিশ্বকাপটা ভালো শুরু হয়নি কাতারের। প্রথমার্ধেই দুই গোল খেয়ে বসে স্বাগতিকরা। দুটি গোলই করেন ইনার ভ্যালেন্সিয়া। ৫ মিনিটে হেডে একটি গোল দিলেও সেটি বাতল হয় অফসাইডে। এরপর ১৫ মিনিটে পেনালটি থেকে গোল দিয়ে এগিয়ে দেন। ৩১ মিনিটে আবার হেডে এগিয়ে দেন ইকুয়েডরকে। দেশের হয়ে বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ গোলদাতা ভ্যালেন্সিয়া। পুরো ম্যাচে খাপ ছাড়া ছিল কাতার। ম্যাচের ৫৬ শতাংশ বল ছিল ইকুয়েডরের পায়ে। আক্রমণের পরিস্থিতিই তৈরি করতে পারেনি কাতার। মাত্র ২টি শট নিতে পারে স্বাগতিকরা। অন্যদিকে ৭টি শট নেয় ইকুয়েডর।

কাতারের জালে রেকর্ড গড়া ভ্যালেন্সিয়ার জোড়া গোল

আবারও গোল! আবারও ভ্যালেন্সিয়া! ৩১ মিনিটে ২-০ গোলে এগিয়ে ইকুয়েডর। ডি বক্সের মাঝে  ক্রস পেয়ে দারুণ হেডে বল কাতারের জালে জড়ান। এর আগেও ৫ মিনিটে হেডে গোল দিয়েছিলেন ভ্যালেন্সিয়া। কিন্তু সেটি বাতিল হয়। এরপর ১৬ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল দিয়ে ইকুয়েডরের হয়ে বিশ্বকাপের ইতিহাসে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড গড়েন। তার ১৫ মিনিট পর আবারও হেডে গোল দেন।

কাতার বিশ্বকাপের প্রথম গোল ভ্যালেন্সিয়ার, হলুদ কার্ড সাদের

কাতার বিশ্বকাপে ৫ মিনিটেই গোল দিয়েছিলেন ইকুয়েডরের ইনার ভ্যালেন্সিয়া। তবে অফসাইডে বাতিল হয়। ১৫ মিনিটে পেনালটি থেকে আবার গোল দেন। এই বিশ্বকাপের প্রথম গোলদাতা হিসেবে জায়গা করে নেন ইতিহাসের পাতায়। এ ছাড়া প্রথম হলুদ কার্ড দেখেন কাতারের সাদ আলশিব।

পেনালটি থেকে সেই ভ্যালেন্সিয়ার গোলে এগিয়ে ইকুয়েডর

সেই ভ্যালেন্সিয়াই পেনালটি থেকে গোল দিয়ে এগিয়ে দিলেন ইকুয়েডরকে। এর আগে ভুল করেন। এবার ফাউল করে বসেন কাতারি গোলরক্ষক সাদ আলশিব। ইনার ভ্যালেন্সিয়াকে ডি বক্সে ফাউল করে বসেন সাদ। সঙ্গে সঙ্গে হলুদ কার্ড দেখান রেফারি। এর আগে অফসাইডে বাতিল হয়েছিল ভ্যালেন্সিয়ার গোল। এবার আর ভুল করেননি। ১৬ মিনিটে এগিয়ে যায় ইকুয়েডর।

৫ মিনিটেই ইকুয়েডরের গোল এবং অফসাইডে বাতিল

৫ মিনিটেই কাতারের জালে বল জড়ায় ইকুয়েডর। কিন্তু অফসাইডে বাতিল হয় সেই গোল!  ম্যাচের ৫ মিনিটেই গোল পেয়ে যায় ইকুয়েডর। ফ্রি কিক থেকে ডি বক্স এরিয়ায় হুক করেন ফেলিক্স টরেস। বল পেয়ে দারুণ হেডে জালে বল জড়ান ইনার ভ্যালেন্সিয়া। কাতারি গোলরক্ষক সাদ আলশিব ফ্রি কিক ক্লিয়ার করতে গিয়ে হেডে গোল খেয়ে বসেন।

বাজলো বিশ্বকাপের বাঁশি 

এক যুগের প্রস্তুতিতে অবকাঠামোর দিক দিয়ে দারুণ করেছে কাতার। বিশ্বকাপ আয়োজনের প্রস্তুতিতে তারা লেটার মার্কসের চেয়েও বেশি পাওয়ার দাবিদার। কিন্তু মাঠের ফুটবলে পারফরম্যান্সের প্রশ্ন আসলেই ভাবতে হচ্ছে অনেক কিছু। আয়োজক হিসেবে তারা প্রথমবার সুযোগ পেয়েছে বিশ্বকাপে খেলার। এটা কেবল সুযোগ পাওয়ার জন্য পাওয়া নয়, এবার ময়দানি লড়াই দেখানোর পালা। এ লড়াই যে মর্যাদার লড়াই, নিজেদের ফুটবলের উন্নতি বিশ্বকে দেখানোর লড়াই। বাংলাদেশ সময় রাত ১০টায় বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে ইকুয়েডরের মুখোমুখি হয় কাতার।

এই ম্যাচটি হওয়ার কথা ছিল না 

অবশ্য এই ম্যাচটি হওয়ার কথা ছিল না। ২১ নভেম্বর সেনেগাল ও নেদারল্যান্ডসের ম্যাচের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়ার কথা ছিল বিশ্বকাপ। কিন্তু কাতার ফিফার কাছে আবেদন করে উদ্বোধনী ম্যাচটি যাতে তাদের খেলতে দেওয়া হয়। সেই আবেদনে সাড়া দেয় ফিফা। তাতে বিশ্বকাপ এগিয়ে আসে একদিন অর্থাৎ ২০ নভেম্বর। তাতে অবশ্য বিশ্বকাপের ঐতিহ্যও রক্ষা হয়। নিয়ম অনুযায়ী বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচ খেলে হয় আয়োজক দেশ, না হয় বর্তমান চ্যাম্পিয়ন। এ যাত্রায়ও সফল হয় কাতার। এবার তাদের মাঠে সফল হওয়ার পালা।

কাতারের প্রথম, ইকুয়েডরের চতুর্থ 

কাতার প্রথমবার বিশ্বকাপ খেললেও ইকুয়েডরের এটা চতুর্থ বিশ্বকাপ (২০০২, ২০০৬ ও ২০১৪)। তাও আট বছরের বিরতির পর।

ইকুয়েডরের শক্তি কতটা 

এর আগে একবারই তারা গ্রুপপর্বের গণ্ডি পেরুতে পেরেছিল। অর্থাৎ বিশ্বকাপে তাদের সেরা সাফল্য শেষ ষোলো। তাদের এবারের দলটি তরুণদের নিয়ে গড়া। তাদের রয়েছে গতি, ক্ষীপ্রতা আর দারুণ দম। বেশ কিছু উদীয়মান ও প্রতিভাবান তরুণ রয়েছেন এই দলে। তারা পাল্টে দিতে পারেন ম্যাচের গতিপথ। এই দিকটাই তাদের শক্তিমত্তার জায়গা। আর দুর্বলতার জায়গার নাম গোল করার দুর্বলতা। লা ট্রাইকালাররা সবশেষ পাঁচটি প্রীতি ম্যাচে খুব বেশি গোল হজম করেনি। আবার গোল দিতেও পারেনি খুব বেশি। তাদের এই ফিনিশিং দুর্বলতা কাতারের বিপক্ষে কাটিয়ে উঠতে পারে কিনা দেখার বিষয়।

কাতার দুর্বল ভাবলে ভুল 

অন্যদিকে কাতারকে আয়োজক কোটার দল হিসেবে ভাবলে ভুল করবেন। তাদের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স কিন্তু সমীহ করার মতো। তারা এশিয়ার বর্তমান চ্যাম্পিয়ন। তার মানে তারা উত্তর কোরিয়া, সৌদি আরব, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়ার মতো হেভিওয়েট দলগুলোকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। এছাড়া কনকাকাফ গোল্ড কাপে তারা সেমিফাইনাল খেলেছিল। তাদের আল মোয়েজ আলী গোল্ডকাপের সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছিলেন (৫ গোল)। সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছিলেন এশিয়ান কাপেও (৯ গোল)।

দুই দলের সবশেষ ৫ ম্যাচ

সবশেষ পাঁচটি আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচের পাঁচটিতেই জিতেছে কাতার। তারা গোল করেছে ৮টি। গোল হজম করেছে ২টি। সবশেষ ৯ নভেম্বর তারা ১-০ গোলে হারায় আলবেনিয়াকে। অন্যদিকে ইকুয়েডর তাদের সবশেষ পাঁচ ম্যাচে জিতেছে মাত্র ১টিতে, ১-০ গোলে হারিয়েছে কেপভার্দেকে। বাকি চারটি ম্যাচ হয়েছে ড্র, গোলশূন্য ড্র।

মুখোমুখি লড়াইয়ে অবশ্য দুটি দল সমানে সমান। তিন ম্যাচ খেলে উভয় দলের জয় একটি করে। গোলও সমান ৬টি করে। ফিফা র‌্যাংকিংয়েও তারা কাছাকাছি— কাতার ৫০, ইকুয়েডর ৪৪।

ঘরের মাঠে এগিয়ে কাতার 

তবে ঘরের মাঠে খেলা হওয়ায় কিছুটা এগিয়ে থাকবে কাতার। উদ্বোধনী ম্যাচের ভেন্যু আল বায়াত স্টেডিয়ামে এর আগে তিন ম্যাচ খেলে তিনতেই জিতেছে তারা। গোল ব্যবধান ৯-০। চেনা পরিবেশ, চেনা মাঠ, চেনা দর্শকদের সামনে অল্প চেনা ইকুয়েডরকে কাতার কুপোকাত করতে পারে কিনা দেখার বিষয়।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS