শনিবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১:৪৬ অপরাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদ
ময়মনসিংহে বিএমএসএ বিভাগের নবগঠিত কমিটির অভিষেক-২০২৫ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত সাংবাদিকদের নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচারের আশ্বাস দিল সরকার নিরাপত্তা সতর্কতা: বাংলাদেশে থাকা নাগরিকদের জন্য মার্কিন দূতাবাসের নির্দেশনা ওসমান হাদির জানাজা অনুষ্ঠিত হবে দুপুরে, রয়েছে বিশেষ নির্দেশনা শহীদ ওসমান হাদীর চেতনা ধারণ করে আধিপত্যবাদভুক্ত দেশ গঠন করতে হবে : জাতীয় ঐক্য জোট নেতৃবৃন্দ শরিফ ওসমান হাদির মাগফিরাত কামনায় চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজে ছাত্রশিবিরের দোয়া মাহফিল মাধবপুর, ডেভিল হান্ট, ফেজ-২ অভিযানে ছাত্রলীগের ২ নেতা গ্রেফতার  প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার সম্পাদকের টেলিফোনে কথা রূপগঞ্জে পুলিশের অভিযানে দূর্ধর্ষ সন্ত্রাসী নাজমুল হাসান টিপু গ্রেফতার বিমান চলাচল রুটে ড্রোন উড়াতে বেবিচকের নিষেধাজ্ঞা

ফাইনালে ভারত নেই বলে ৭৫ ডলারের টিকিট ২৫ ডলার

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : শনিবার, ১২ নভেম্বর, ২০২২
  • ১৫১ Time View

ওমর মোহাম্মদ হারিছের এখন নিজের চুল নিজে ছেঁড়ার মতো অবস্থা। নেদারল্যান্ডস দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে দেওয়ার পরই মেলবোর্নপ্রবাসী এই পাকিস্তানি তরুণ বুঝে গিয়েছিলেন বাবর আজমদের সেমিফাইনালের দুয়ার খোলা। আর সেমিফাইনাল মানেই তো ফাইনালের সুবাস ছড়াতে থাকা!

হারিছ তখনই অনলাইন থেকে প্রায় ৩০০ অস্ট্রেলিয়ান ডলার দিয়ে নিজের আর তিন বন্ধুর জন্য ফাইনালের চারটি টিকিট কিনে ফেলেন। পাকিস্তান যদি বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলে, মেলবোর্নে থেকেও সেটি না দেখা তো তাঁর জন্য অন্যায়ই হবে। কিন্তু অ্যাডিলেডের সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডের কাছে ভারতের হারের পর যা দেখছেন, তাতে উবার–চালক হারিছের আফসোস কেবলই বাড়ছে। ৭০-৭৫ ডলারের ফাইনালের টিকিট যে এখন মেলবোর্নে মিলছে মাত্র ২৫ ডলারে!

অস্ট্রেলিয়ার অন্যান্য শহরের মতো এখানেও ভারতীয় প্রবাসীরাই সংখ্যায় বেশি, প্রায় আড়াই লাখের মতো। মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে (এমসিজি) আগামীকালের ফাইনালে ভারত থাকবে ধরে নিয়ে তাঁদের অনেকেই অগ্রিম টিকিট কিনে রেখেছিলেন। কিন্তু সেমিফাইনালে জস বাটলারদের কাছে রোহিতদের ১০ উইকেটের হার তাঁদের মনটাই দিয়েছে ভেঙে দিয়েছে। যে ফাইনালে ভারত নেই, সে ফাইনাল তাঁরা আর দেখতে চান না। অনেকেই তাই এখন সস্তায় টিকিট ছেড়ে দিচ্ছেন। এই সুযোগে কম দামে সেসব টিকিট কিনে নিচ্ছেন পাকিস্তানিরা।

উপমহাদেশ তো বটেই, বিশ্ব ক্রিকেটেই ভারত-পাকিস্তান লড়াইয়ের রসায়ন বহুমুখী। ক্রিকেটের সঙ্গে ইতিহাস আর রাজনীতি যোগ হয়ে সেটিকে নিয়ে যায় অন্য মাত্রায়। ভারত ফাইনালে উঠতে না পারায় পাকিস্তানের অনেক মানুষ যেমন উৎসব করেছেন, আবার হারিছের মতো কেউ কেউ মনে করেন ইংল্যান্ডের জায়গায় শিরোপার লড়াইয়ে রোহিত-কোহলিরা থাকলেই বরং বেশি ভালো হতো। ফাইনালটা তখন আরও উত্তেজনাপূর্ণ হতো। কারণ, সামনে ভারত থাকলেই নাকি পাকিস্তান বেশি তেতে ওঠে। ভারতকে হারিয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়া গেলে আনন্দটাও বেড়ে যেত কয়েক গুণ।

অবশ্য জাতিবিশেষকে আনন্দে ভাসাতে বয়েই গেছে ইংল্যান্ডের। সেমিফাইনালের আগে থেকেই ওঠা ভারত-পাকিস্তান ফাইনালের রব যে রকম দাপুটে ব্যাটিংয়ে থামিয়ে দিয়েছেন বাটলার-হেলসরা, তারপরও ‘ভারত কেন ফাইনালে উঠল না’ আক্ষেপ ইংল্যান্ডের সাফল্যকে অবজ্ঞা করার মতোই। এসব কথা বাটলারের কানে গেলে নিশ্চিত তিনি আরেকবার হুংকার ছাড়বেন, ‘এতই যখন ভারত-পাকিস্তান ফাইনালের শখ, যাও…বিশ্বকাপটাকে আমরা উপমহাদেশেই যেতে দেব না।’

আসলে ক্রিকেট এখন যে দেশেই যাক, সেটাকে ঘিরে ভারতীয়দের ভিড়ই বেশি লেগে থাকে। বাটলাররা বারবার ভারত-পাকিস্তান শুনে রাগ করতে পারেন, কিন্তু বাস্তবতা এটাই। দর্শক, সাংবাদিক, টেলিভিশন সম্প্রচারের লোকজন, ধারাভাষ্যকার বা ক্রিকেট যাঁরা চালান, সেই আইসিসি এবং ক্রিকেটের বাজার—কোথাও কি ভারতীয় আধিপত্য অস্বীকার করার উপায় আছে!

একসময় ব্রিটিশদের হাতে থাকা উপমহাদেশ যেমন এখন আর তাদের হাতে নেই, ক্রিকেটের নাটাইও আরও আগেই ইংলিশদের হাত থেকে ফসকে গেছে। খেলাটাকে এখন যারা রংচং করে মাতিয়ে রাখছে, বিশ্বকাপের ফাইনাল তাদের কিছুটা মিস তো করতেই পারে।

গতকাল অ্যাডিলেড বিমানবন্দরের একটা ঘটনা শুনুন। মেলবোর্নে আসার সময় দেখা দৃশ্যটা চোখে আটকে গেছে। এই ফ্লাইটেই মেলবোর্নে এসেছেন ভারত ও ইংল্যান্ডের সাবেক দুই ওপেনার কৃষ্ণমাচারি শ্রীকান্ত এবং মাইক আথারটন। এখন দুজনই ধারাভাষ্যকারের ভূমিকায়। কিন্তু সহযাত্রীদের মধ্যে দেখা গেল আথারটনের চেয়ে শ্রীকান্তের ভক্ত অনেক অনেক বেশি। বোর্ডিং ব্রিজে যাওয়ার আগে শ্রীকান্ত পদে পদে থেমেছেন অটোগ্রাফ আর সেলফির দাবি মেটাতে। অন্যদিকে আথারটনকে যেন কেউ চেনেই না! অবশ্য তিনি যখন এক পাশে দাঁড়িয়ে ভক্তদের সঙ্গে শ্রীকান্তের ব্যস্ততা দেখছিলেন, এক ভারতীয় তরুণ তাঁর কোটের হাতায় মৃদু টান দিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, ‘আপনি আথারটন না!’ আথারটন মৃদু হেসে সম্মতি দিয়ে চলে যান বোর্ডিং ব্রিজের দিকে।

শ্রীকান্তের পাশে যতটা অখ্যাত মনে হচ্ছিল তাঁকে, ইংল্যান্ডের হয়ে ১১৫টি টেস্ট ও ৫৪টি ওয়ানডে খেলা আথারটন অবশ্যই অতটা অখ্যাত নন। ক্রিকেট পরিসংখ্যানের পাতায় বরং উল্টো ছবিই পাবেন। কিন্তু ওই যে বললাম, ক্রিকেটকে ঘিরে এখন ভারতীয়দের ভিড়ই বেশি। আথারটনদের তাই এগুলো মেনে না নিয়ে উপায় নেই।

তবে আথারটনদের উত্তরসূরি বাটলার-হেলসদের যে এসবের জবাব দেওয়ার উপায় জানা আছে, সেটা অ্যাডিলেড ওভালে সবাই দেখেছে। বৃষ্টির চোখ রাঙানো উপেক্ষা করে ফাইনালটা ঠিকঠাক হতে পারলে হয়তো এমসিজিতেও সেটা দেখা যাবে।

১৮৭৭ সালে ক্রিকেট ইতিহাসের প্রথম টেস্ট ম্যাচটা স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এখানেই খেলেছিল ইংল্যান্ড। ১৯৭১ সালে এই মাঠেই ইংলিশরা অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলেছিল ইতিহাসের প্রথম ওয়ানডেটাও। এমসিজির সঙ্গে তাই ইংলিশ ক্রিকেটের সম্পর্কটা রক্তের। এ মাঠে সব সংস্করণ মিলিয়ে অস্ট্রেলিয়ার পর সবচেয়ে বেশি ম্যাচ (৯২টি) ইংল্যান্ডই খেলেছে, সংখ্যাটা পাকিস্তানের (৩৫) দ্বিগুণের চেয়ে বেশি।

অস্ট্রেলিয়া তো নেই, এমসিজিকে তাই নিজেদের মাঠ ভাবতেই পারে ইংল্যান্ড।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS