শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:১৪ পূর্বাহ্ন

বালু নদে নাব্যতা সংকট চরমে: আটকে আছে অসংখ্য বালুবাহী বালুভর্তি বাল্কহেড

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : শুক্রবার, ১৪ জানুয়ারী, ২০২২
  • ৩২৪ Time View

শাকিল আহম্মেদ  নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি 

রাজধানীর কোলঘেষা বালু নদে নাব্যতা সংকট দেখা দিয়েছে চরম আকারে। এ কারণে প্রতিনিয়ত ওই নদে আটকে যাচ্ছে বালুবাহী মাঝারি ও বড় বালুভর্তি বাল্কহেড। গত ৪ দিন ধরে ঢাকার ভাটারা থানাধীন বালু নদের বেরাইদ এলাকায় মক্কা মদিনা ৫, টিউলিপ ও অঞ্জুমান-২ নামে ২৬ হাজার ফুটের ৩ টি বড় বড় বাল্কহেড নাব্যতা সংকটে আটকে যাওয়ায় দীর্ঘ প্রায় ২ কিলোমিটার  বাল্কহেড যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। আর শুস্ক মৌসুমে প্রায়ই এ ধরণের ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ রয়েছে। এতে শীতকালে শত শত কোটি টাকার বাল্কহেড বিনিয়োগকারীদের কোটি কোটি টাকার লোকসান গুণতে হয় বলেও অভিযোগ রয়েছে। একই সঙ্গে বাল্কহেড শ্রমিকের মজুরিতেও চরম ভাটা পড়ে বলে পারিবারিকভাবে তারা অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটায়। এদিকে বাল্কহেডের
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, খনন বা ড্রেজিংয়ের অভাবে গত কয়েক বছর ধরে বালু নদে ফকিরখালি, বেরাইদ, নাওড়া ও নগরপাড়া এলাকায় নাব্যতা সংকট দেখা দিয়েছে। এ সব এলাকায় অন্তত ১২ হাত পানির প্রয়োজন হয় বাল্কহেড চলাচল করতে। এক্ষেত্রে এসব এলাকায় এখন ৭ হাত পানি পাওয়া যাচ্ছে। তবে এ নদের ৩১ টি মৌজায় বিআইডাব্লিউটিএ কর্তৃক ২০১৩-১৪ সালে রক্ষণাবেক্ষণ (মেইনট্যানেন্স) ড্রেজিং করা হয়েছে। তারপর আর কোন খনন বা ড্রেজিং করা হয়নি বলে নদের তলদেশ অনেক ভরাট হয়ে গেছে। আর এ নদ দিয়ে বাল্কহেডের মাধ্যমে বালু বহন করে শহরের নি¤œাঞ্চলগুলো ভরাট করে আধুনিক নগরে রূপান্তর করা হচ্ছে। অথচ নাব্যতা সংকটে তা ব্যহত হচ্ছে চরমভাবে। তবে শুস্ক মৌসুমে নাব্যতা সংকটে এ নদ দিয়ে ১২শ’ থেকে ১৬শ’ ফুটের বেশি বড় বাল্কহেড চলাচল করতে পারেনা।   সরেজমিন দেখা গেছে, ঢাকার ক্ষিলগাঁও থানাধীন বালু নদের ইটাখোলা থেকে ইদারকান্দি, ফকিরখালি ও ভাটারা থানাধীন বেরাইদ বাজার এলাকা পর্যন্ত বালুভর্তি বাল্কহেডের দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। আর নাব্যতা সংকটেই গত ৪ দিন ধরে এ যানজট সৃষ্টি হয়েছে বলে তা অপসারণ করা যাচ্ছেনা। এক্ষেত্রে জোয়ারের পানির অপেক্ষায় রয়েছে দীর্ঘ প্রায় দুই মাইলের বাল্কহেড যানজট। তাছাড়া প্রতিবছরই ঢাকার বালুরপাড়, ফকিরখালি, ইদারকান্দি, বেরাইদসহ বালু নদের অধিকাংশ এলাকায় নাব্যতা সংকট দেখা দেয়। নদের তলদেশ ইতিমধ্যে ভরাট হয়ে গেছে।
এ বিষয়ে বেরাইদ বাজার এলাকার বাল্কহেড ব্যবসায়ী আকবর হোসেন বলেন, বড় ৩ টি বাল্কহেড বালু নদে প্রবেশ করায় এ দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। তারা জানা সত্বেও কেন এত বড় লোড জাহাজ এ নদ দিয়ে আনল বুঝলামনা। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
এ বিষয়ে বেসরকারি সংগঠন বাংলাদেশ পরিবেশ ও নদী রক্ষা উন্নয়ন ফাউন্ডেশন (ইআরপিডিএফ) প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান  এইচ এম সুমন বলেন, বালু নদে নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে বৃহৎপরিকল্পনা প্রয়োজন যা নিয়ে আমরা কাজ শুরু করেছি। একই সঙ্গে নদী বাঁচাতে জলাবায়ু ঝুঁকি রাশের লক্ষ্যেও কাজ করছি। সরকারের একার পক্ষে সম্ভব নয় বলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষদের নিয়ে দ্রুত জরুরী এসব কাজ সমাধানে সবার এগিয়ে আসতে হবে।
এ বিষয়ে ঘটনাস্থলে টঙ্গী নদী বন্দরের সহকারী সমন্বয় কর্মকর্তা সমর কৃষ্ণ সরকার বলেন, নাব্যতা সংকট বালু নদে চরম। জরুরী ভিত্তিতে খনন প্রয়োজন, প্রয়োজন বৃহৎ পরিকল্পনারও। এত বড় বাল্কহেড যানজট লাগার একমাত্র কারণই হচ্ছে নাব্যতা সংকট। আর জোয়ারের পানি না আসা পর্যন্ত এ যানজট নিরসন সম্ভব নয়। রোইদ এলাকায় অনেকভাবে চেষ্টা করা হচ্ছে যানজট নিরসনে। এখানে ১২ হাত গভীর পানির প্রয়োজন,অথচ পাওয়া যাচ্ছে ৭ হাত।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2024 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS