লিটন পাঠান, হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
হবিগঞ্জের মাধবপুরে আউশ ধানের কাঙ্ক্ষিত দাম না পেয়ে হতাশ কৃষকরা। তারা বলছেন, চাষের জন্য প্রয়োজনীয় কৃষি উপকরণ ও শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধি পাওয়ায় ধানের উৎপাদন খরচ বেড়েছে। এ অবস্থায় বাজারে ধানের দাম কম থাকায় ঠিকমতো উৎপাদন খরচই উঠছে না তাদের। মাধবপুরের অন্যতম বড় ধানের হাট তেলিয়াপাড়া ও মনতলা বাজার। এখানে আমনের দাম মণপ্রতি ১০০ থেকে ১৫০ টাকা কমেছে। শুরুতে প্রতিমণ আমন ধানের বিক্রি ছিল এক হাজার ২০০ টাকা, যা কমে ৯০০ টাকা থেকে এক হাজার টাকায় নেমে এসেছে। মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি বস্তা (৮০ কেজি) ধান দুই হাজার ৪০০ টাকা থেকে কমে এক হাজার ৯০০ টাকায় নেমেছে। এবার আউশ আবাদে খরচ বেশি হয়েছে। বাজারে ধানের দামও কম। উৎপাদন খরচ উঠছে না। মনতলা এলাকার কৃষক শহিদুল ইসলাম জানান, কৃষকদের হিসাবে এবার আউশ চাষে বিঘাপ্রতি উৎপাদন ব্যয় হয়েছে বেশি। এক বিঘা জমিতে ধান পাওয়া যাচ্ছে ১০ থেকে ১২ মণ। অর্থাৎ, ৯০০ টাকা মণ ধরলেও এক বিঘায় ধান বিক্রি হচ্ছে ৯ হাজার টাকা।
অথচ গত বছরও এক মণ ধান বিক্রি হয়েছে ১হাজার ২০০ থেকে এক হাজার ৪০০ টাকায়।আপৎকালীন সেই ফসল চাষ করে দাম না থাকার কারণে কৃষকরা বিপদে পড়েছেন। এ ব্যাপারে সরকারের নজর দেওয়া প্রয়োজন। মাধবপুর উপজেলার পরমানন্দপুর গ্রামের কৃষক আব্দুর রহিম জানান, প্রতিবিঘা জমিতে আউশ আবাদ করতে সব মিলিয়ে খরচ হয়েছে আট হাজার টাকা। সেই জমির প্রতিমণ ধান বিক্রি হয়েছে ৯০০ টাকা দরে। এতে তার উৎপাদন খরচই উঠছে না। তেলিয়াপাড়া বাজারের ধানের আড়তদার দুলাল মিয়া জানান, মিল মালিকরা ঠিকমতো ধান কিনতে শুরু না করায় দাম কমতে শুরু করেছে। ধান কেনার মৌসুমে মিল মালিকরা ধান কেনা কমিয়ে দিয়েছেন। দর কমাতে কৌশল অবলম্বন করেছেন তারা। এ কারণে ধানের দাম কমে গেছে। মাধবপুর খাদ্য কর্মকর্তা রেজাউল ইসলাম জানান, এখন আউশ ধান কাটা-মাড়াইয়ের ভরা মৌসুম। এই সুযোগে এক শ্রেণির ব্যবসায়ী ধান কেনার চাহিদা ইচ্ছাকৃত ভাবে কমিয়ে দিয়েছেন। তাই আপাতত ধানের বাজার পড়ে গেছে। আর সরকারিভাবে আউশ মৌসুমে এখনও ধান কেনার কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS