মধ্যম আয়ের ফাঁদ থেকে বেরিয়ে আসার জন্য বাংলাদেশের অর্থনীতি আরও উন্মুক্ত হওয়া উচিত। মধ্যম আয়ের স্তর দ্রুত অতিক্রম করতে হলে বিদ্যমান কাঠামোতে শৃঙ্খলা আনতে হবে, যোগ্যতাকে পুরস্কৃত করতে হবে এবং সংকটকে কাজে লাগাতে হবে বলে জানিয়েছেন বিশ্বব্যাংক-এর মুখ্য অর্থনীতিবিদ ইন্দরমিত এস গিল।
শনিবার (৭ ডিসেম্বর) ঢাকায় বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) আয়োজিত বার্ষিক উন্নয়ন সম্মেলনে (এবিসিডি) বক্তব্য দেওয়ার সময় তিনি এ কথা বলেন।
ইন্দরমিত বলেন, বর্তমানে মধ্যম আয়ের দেশগুলোর ছয় বিলিয়ন মানুষ সময়ের সঙ্গে লড়াই করছে। তিনি বলেন, “বাইরের পরিবেশ এই চ্যালেঞ্জগুলো আরও কঠিন করে তুলছে। মধ্যম আয়ের ফাঁদ থেকে মুক্তি পেতে দেশগুলোকে দুটি রূপান্তরের মধ্য দিয়ে যেতে হবে, একটি নয়।”
তিনি আরও বলেন, “বিনিয়োগ, উৎপাদন এবং উদ্ভাবনের মধ্যে পরিবর্তন আনতে হবে। মধ্যম আয়ের স্তর দ্রুত অতিক্রম করতে হলে বিদ্যমান কাঠামোতে শৃঙ্খলা আনতে হবে, যোগ্যতাকে পুরস্কৃত করতে হবে এবং সংকটকে কাজে লাগাতে হবে।”
গিল বলেন, “আপনাকে অর্থনীতিকে উন্মুক্ত করতে হবে, বিশেষ করে যখন বিনিয়োগ-নির্ভর পর্যায় থেকে উৎপাদন-নির্ভর পর্যায়ে স্থানান্তরিত হয়েছেন। অন্যরা যা-ই করুক না কেন, এখানে বাংলাদেশকে আরও বেশি উন্মুক্ত হতে হবে।”
“এটি যেন যুক্তরাষ্ট্র ও চীন, উৎপাদন ও সেবা, অথবা আন্তর্জাতিক ও দেশীয় নীতি সংস্কারের মধ্যে কোনও একটি বেছে নেওয়ার বিষয় না হয়,” তিনি জোর দিয়ে বলেন।
গিল বলেন, “মধ্যম আয়ের আরও অনেক দেশ রয়েছে। কিন্তু তারা তাদের প্রাকৃতিক সম্পদ এবং বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সম্পর্কের দিক থেকে আলাদা। আমরা দেখেছি, বৈষম্য সামান্য বেড়েছে। তবে এটি খুব বেশি গুরুতর নয়, যদি আর্থ-সামাজিক গতিশীলতা বাড়তে থাকে।”
তিনি বলেন, “আবার যদি আর্থ-সামাজিক গতিশীলতা কমে যায়, তবে বৈষম্য বাড়ুক বা কমুক, তা কোনো গুরুত্ব বহন করে না,”
বিশ্বব্যাংক-এর এই মুখ্য অর্থনীতিবিদ বলেন, “জ্বালানি খাতে বাংলাদেশ শুধু এটাই দেখছে, জ্বালানি কোথা থেকে আসছে– পুনর্নবীকরণযোগ্য খাত থেকে নাকি জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে। এটি সম্পূর্ণ ভুল দৃষ্টিভঙ্গি।”
ইন্দরমিত বলেন, “আমাদের দেখতে হবে, বাংলাদেশ জ্বালানি থেকে উৎপাদন করতে কতটা দক্ষ। যদি দক্ষ না হয়, তাহলে এটি বোঝায়, মাথাপিছু উৎপাদনের তুলনায় কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ অনেক বেশি।”
অনুষ্ঠানে পরিকল্পনা ও শিক্ষা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদও উপস্থিত ছিলেন। উদ্বোধনী বক্তব্যে বিআইডিএসের মহাপরিচালক বিনায়ক সেন উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্যে এবিসিডি ২০২৪-এর মূল বিষয় “আন্তঃসংযোগ: সমতা, সুযোগ, স্বাধীনতা এবং মর্যাদা” তুলে ধরেন।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply