ভারতে নির্বাচনের আগে একের পর এক মুসলমানবিরোধী পদক্ষেপ নিচ্ছে বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকার। এবার উত্তর প্রদেশে নিষিদ্ধ করা হলো মাদ্রাসা। স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে এ খবর উঠে এসেছে।
ভারতের মাদ্রাসাগুলোয় মানসম্পন্ন শিক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে ২০০৯-১০ সালে কংগ্রেস সরকার উত্তর প্রদেশে ‘স্কিম ফর প্রোভাইডিং কোয়ালিটি এডুকেশন ইন মাদ্রাসাজ’ নামের একটি বিশেষ প্রকল্প চালু করে। তবে ২০২২ সালের মার্চে ওই প্রকল্পে অর্থায়ন বন্ধ করে দেয় বিজেপি সরকার।
এরপর মাদ্রাসা শিক্ষাকে ‘অসাংবিধানিক’ আখ্যা দিয়ে একেবারে নিষিদ্ধ করা হলো। অংশুমান সিং রাঠোর এক ব্যক্তির দায়ের করা মামলায় শুক্রবার (২২ মার্চ) মাদ্রাসা নিষিদ্ধের আদেশ দেয় এলাহাবাদ হাইকোর্ট।
এ রায়ের মাধ্যমে মূলত উত্তর প্রদেশে মাদ্রাসা পরিচালনার জন্য করা ২০০৪ সালের একটি আইন বাতিল করা হয়েছে। রায়ে বলা হয়, এই আইন ভারতের সাংবিধানিক ধর্মনিরপেক্ষতার লঙ্ঘন। রায়ে মাদ্রাসার অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের প্রচলিত স্কুলে স্থানান্তরের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
লোকসভা নির্বাচন সামনে করে চলতি মাসে (১১ মার্চ) বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন কার্যকর করা হয়েছে। এ আইনে মুসলিম বাদে প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে আসা অন্যান্য সকল ধর্মের মানুষকে নাগরিকত্ব দেয়ার কথা বলা হয়েছে।
এ নিয়ে দেশটির রাজনৈতিক অঙ্গন এখন উত্তপ্ত। এর মধ্যেই এবার দেশটির সবচেয়ে বড় রাজ্য উত্তর প্রদেশে মুসলমানদের প্রধান শিক্ষা ব্যবস্থা মাদ্রাসা শিক্ষা নিষিদ্ধ করা হলো। রাজ্যের ২ কোটি ৪০ লাখ মানুষের এক পঞ্চমাংশই মুসলমান।
আগামী এপ্রিল থেকে ভারতে সাধারণ নির্বাচন শুরু হতে যাচ্ছে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিজেপি আবারও তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে নির্বাচনের আগে এসব রায় মুসলিম ভোটের ওপর প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
উত্তরপ্রদেশ বিজেপির মুখপাত্র রাকেশ ত্রিপাঠি বলেছেন, এটি মাদ্রাসার বিরুদ্ধে নয় এবং মুসলিম ছাত্রদের শিক্ষা নিয়ে উদ্বিগ্ন। তবে উত্তর প্রদেশের মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের প্রধান ইফতিখার আহমেদ জাভেদ বলেন, আদালতের এই আদেশের পর মাদ্রাসাগুলোতে দেয়া সরকারি অনুদান বন্ধ হয়ে যাবে। ফলে বিপাকে পড়বেন রাজ্যের ২৫ হাজার মাদ্রাসার ২০ লাখ ৭০ হাজার শিক্ষার্থী এবং অন্তত ১০ হাজার শিক্ষক।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply