তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্পে বাড়িঘরের ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি ধসে পড়েছে বহু মহাসড়ক। ভেঙে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। যে কারণে তুরস্কের হাতায়া এবং সিরিয়ার আলেপ্পো শহরের দুর্গম এলাকায় পৌঁছাতে পারছেন না উদ্ধারকর্মীরা। দ্রুত উদ্ধার অভিযান শুরু করতে না পারায় বাড়ছে হতাহতের সংখ্যা।
বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) স্কাই নিউজের প্রতিবেদনে উঠে আসে এসব তথ্য।
স্মরণকালের ভয়াবহ ভূমিকম্পে তছনছ তুরস্কের গাজিয়ানতেপসহ আশপাশের এলাকা। বাড়িঘরের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বহু রাস্তা। ধসে পড়েছে সড়ক-মহাসড়ক। রাস্তাতেই পড়ে আছে অসংখ্য গাড়ি। শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর ভেঙে পড়েছে এসব অঞ্চলের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা।
ফলে দুর্গম এলাকায় পৌঁছাতে পারছেন না উদ্ধারকর্মীরা। ভূমিকম্পের চার দিন পার হলেও কোনো এলাকায় এখনও শুরু হয়নি উদ্ধার তৎপরতা। এমনকি পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না ত্রাণ সহায়তাও। বাড়িঘর হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে চরম মানবেতর দিন পার করছেন এসব অঞ্চলের বাসিন্দারা। দ্রুত উদ্ধার অভিযান শুরু না হওয়ায় বাড়ছে হতাহতের সংখ্যা।
তুরস্কের পাশাপাশি সিরিয়ার আলেপ্পো শহরেও একই অবস্থা। বিভিন্ন মহাসড়ক ধসে পড়ায় চলতে পারছে না কোনো যানবাহন। যুদ্ধকবলিত দেশটিতে ভূমিকম্প যেন মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দেখা দিয়েছে। ত্রাণ সহায়তা না পৌঁছায় দেখা দিয়েছে মানবিক সংকট।
সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) স্থানীয় সময় ভোরে সিরিয়া সীমান্তবর্তী তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে আঘাত হানে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প। মাত্র ৪৫ সেকেন্ডের ভূকম্পনেই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় ২ দেশের কয়েক হাজার বাড়িঘর। হতাহত হন হাজার হাজার মানুষ। ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল তুরস্ক ও সিরিয়ার সীমান্তবর্তী অঞ্চল। এখানেই সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ থেকে পালিয়ে আসা লাখ লাখ মানুষ আশ্রয় নিয়েছিলেন।
সিরিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম জানিয়েছে, ভূমিকম্পের ফলে অন্তত ৩ লাখ মানুষ তাদের ঘরবাড়ি হারিয়েছেন। রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সানা জানিয়েছে, বাস্তুচ্যুতদের আশ্রয় দিতে দেশজুড়ে ১৮০টি আশ্রয়কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। তবে এ পরিসংখ্যান কেবল সরকার নিয়ন্ত্রিত অংশের জন্যই প্রযোজ্য। বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলের হিসাব দামেস্কের সরকারের কাছে নেই।
দিন যত যাচ্ছে দেশ দুটিতে মৃতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এরই মধ্যে মৃতের সংখ্যা ১৭ হাজার ছাড়িয়েছে। এখনও নিখোঁজ রয়েছেন অনেকে। কেবল তুরস্কেই মৃতের সংখ্যা ১৪ হাজার ছাড়িয়েছে বলে জানায় দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে সিরিয়ায় মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৩ হাজার।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply