মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫, ১০:৪০ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদ
মাধবপুর থানার ওসি শহিদ উল্ল্যা জেলার শ্রেষ্ঠ অফিসার ইনচার্জ নির্বাচিত ইউনিয়ন ব্যাংকে রয়েছে আকর্ষণীয় বিশেষ আমানত প্রকল্প ভিভো ভি৬০ লাইট: ছবি এখন শিল্পের ক্যানভাস রবি এলিট সদস্যদের ফ্যাশন অভিজ্ঞতা উন্নত করতে এপেক্স ফুটওয়্যারের সঙ্গে অংশীদারিত্ব চুয়াডাঙ্গায় বিএনপি-সনাতন ধর্মাবলম্বীসহ ১০৫ জনের জামায়াতে যোগদান সেমস-গ্লোবালের আয়োজনে ১৩–১৫ নভেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী ৩০তম বিল্ড সিরিজ, ২৭তম পাওয়ার সিরিজ ও ওয়াটার এক্সপো ২০২৫ স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব সংবিধানের চার মূলনীতি সুরক্ষা ও দ্রুত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবি গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের আবারও বেড়েছে স্বর্ণের দাম কালিয়া ভিডব্লিউবি কার্ড বিতরণে ব্যপক অনিয়মের অভিযোগ, ইউপি সদস্যের স্ত্রীও খাচ্ছেন দুস্থদের চাউল রাঙামাটিতে এসআইসিআইপি, বাংলাদেশ ব্যাংক ও ট্রাস্ট ব্যাংকের উদ্যোক্তা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কর্মসূচির সমাপ্তি

দক্ষিণাঞ্চলে গ্যাসের বৃহৎ সঞ্চালন নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার উদ্যোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : রবিবার, ৯ জানুয়ারী, ২০২২

বরিশাল অফিস : দেশের দক্ষিণাঞ্চলের শিল্প এলাকাগুলোয় গ্যাসের বৃহৎ সঞ্চালন নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে জ্বালানি বিভাগ। এ লক্ষ্যে সাড়ে ৯ হাজার কোটি টাকার এক বিনিয়োগ পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। বৃহৎ ছয় প্রকল্পে বিভক্ত এ পরিকল্পনাটি বাস্তবায়ন হলে গ্যাস সংযোগের আওতায় আসবে দক্ষিণাঞ্চলের ১১ জেলা। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করবে গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি লিমিটেড (জিটিসিএল)। বর্তমানে প্রকল্পগুলোয় বিনিয়োগের জন্য বিদেশি অর্থায়নের উৎস খুঁজছে সংস্থাটি। বর্তমানে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে শিল্প-কারখানা স্থাপনে ব্যাপক কর্মযজ্ঞ শুরু হয়েছে। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে সেখানে জ্বালানি হিসেবে গ্যাসের চাহিদা ব্যাপক হারে বাড়বে। তবে এ চাহিদা পূরণে গ্যাস সরবরাহের জন্য প্রয়োজনীয় গ্যাস সঞ্চালন অবকাঠামো এখনো গড়ে তোলা সম্ভব হয়নি। জ্বালানি বিভাগ-সংশ্লিষ্টদের প্রত্যাশা, পরিকল্পনা সফল হলে আগামী চার-পাঁচ বছরের মধ্যেই এসব সঞ্চালন অবকাঠামো নির্মাণ সম্ভব হবে। সেক্ষেত্রে গোটা দক্ষিণাঞ্চলেই অর্থনীতির গতিচিত্র পাল্টে যাবে। জিটিসিএল জানিয়েছে, পরিকল্পনার অধীন ছয় প্রকল্পের মধ্যে চারটি ২০২৫ সাল নাগাদ বাস্তবায়নের লক্ষ্য ধরা হয়েছে। বাকি দুটির মধ্যে একটি ২০২৯ ও অন্যটি ২০৩৪ সালের মধ্যে শেষ করতে চায় সংস্থাটি। এ ছয় প্রকল্পের আওতায় মোট ৫৮২ কিলোমিটার লাইন নির্মাণ করা হবে। মূলত খুলনা, বরিশাল ও পদ্মার জাজিরা প্রান্তের ক্রমবর্ধমান শিল্পায়নকে ঘিরে এ সঞ্চালন লাইন নির্মাণ পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে।এ বিষয়ে জানতে চাইলে জিটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী রুখসানা নাজমা ইছহাক বলেন, গ্যাসপ্রাপ্তি সাপেক্ষে দেশের যেকোনো প্রান্তে সঞ্চালন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে জিটিসিএল বদ্ধপরিকর। এ লক্ষ্যে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে গ্যাস সরবরাহ বাড়ানোর জন্য বেশকিছু প্রকল্প প্রস্তাব তৈরি করা হয়েছে। অর্থায়ন নিশ্চিত হলে আশা করছি লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী আমরা কাজ সম্পন্ন করতে পারব।প্রকল্প প্রস্তাবে উল্লিখিত তথ্য অনুযায়ী, এর মধ্যে খুলনা ও বরিশাল বিভাগকে গ্যাস নেটওয়ার্কের আওতায় নিয়ে আসতে পটুয়াখালীর পায়রা থেকে বরিশাল সদর পর্যন্ত এবং বরিশাল থেকে খুলনা পর্যন্ত সঞ্চালন লাইন নির্মাণে গৃহীত প্রকল্পটিতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। আমদানীকৃত তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) পায়রা বন্দরে রিগ্যাসিফিকেশনের মাধ্যমে বরিশাল, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বাগেরহাট ও খুলনা অঞ্চলে বিতরণ করা হবে। এজন্য পায়রা থেকে বরিশাল পর্যন্ত ৮৫ কিলোমিটার এবং বরিশাল থেকে খুলনা পর্যন্ত ১০৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পাইপলাইন নির্মাণ করা হবে। আগামী বছর শুরু করে ২০২৫ সাল নাগাদ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে এ প্রকল্পে অর্থায়নের উৎস এখনো নিশ্চিত করা যায়নি। ক্রস বর্ডার পাইপলাইনের মাধ্যমে ভারত থেকে আমদানীকৃত এলএনজি জাতীয় গ্রিডে সরবরাহের জন্য সাতক্ষীরার ভোমরা থেকে খুলনা পর্যন্ত ৬৫ কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন নির্মাণে প্রস্তাবিত আরেকটি প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার কোটি টাকা। এরই মধ্যে এ প্রকল্পের রুট জরিপকাজ শেষ হয়েছে। ভারতের সাথে জিআইএ সই হওয়া সাপেক্ষে প্রকল্পের কাজ শুরু করবে জিটিসিএল। এ প্রকল্পে বিদেশি সহায়তার জন্য প্রস্তাবিত প্রকল্পের সংশোধিত পিডিপিপি চলতি বছরের ২৪ জুন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের নীতিগত অনুমোদন পেয়েছে।পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তে বাণিজ্য সম্প্রসারণের জন্য মাদারীপুরের টেকেরহাটে গড়ে তোলা হচ্ছে বাণিজ্যিক হাব। সেখানে শিল্প-কারখানা, বিদ্যুৎকেন্দ্র ও সার কারখানা নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। এসব শিল্প-কারখানায় গ্যাসের চাহিদা পূরণের জন্য খুলনা থেকে গোপালগঞ্জ হয়ে টেকেরহাট পর্যন্ত ৭৭ কিলোমিটার গ্যাস সঞ্চালন লাইন নির্মাণ করবে জিটিসিএল। ১ হাজার ১৭৭ কোটি ২২ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রস্তাবিত এ প্রকল্পে অর্থায়নের বিদেশি উৎস খুঁজছে সংস্থাটি। গত বছরের ডিসেম্বরে ইআরডি থেকে সংশ্লিষ্ট এক দাতা সংস্থার অনুবিভাগে অর্থায়নের জন্য এ-সংক্রান্ত একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে প্রকল্পের সম্ভাব্যতা সমীক্ষার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে জিটিসিএল। ঢাকার সাথে গ্যাস সঞ্চালন নেটওয়ার্ক তৈরির লক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জের লাঙ্গলবন্দ থেকে মুন্সিগঞ্জের মাওয়া এবং পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্ত থেকে টেকেরহাট পর্যন্ত সঞ্চালন পাইপলাইন নির্মাণের আরেকটি প্রকল্পের প্রস্তাব দিয়েছে জিটিসিএল। ৭৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সঞ্চালন লাইন নির্মাণ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ১৪৭ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। এ প্রকল্পের নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে সরকার। সম্ভাব্যতা সমীক্ষা সম্পাদনের কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এছাড়া, ফরিদপুর ও মাদারীপুরে গ্যাস সরবরাহের লক্ষ্যে ১১৫ কিলোমিটার গ্যাস পাইপলাইন নির্মাণের পরিকল্পনা তৈরি করেছে জিটিসিএল।ঢাকার সাথে গ্যাস সঞ্চালন নেটওয়ার্ক তৈরির লক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জের লাঙ্গলবন্দ থেকে মুন্সিগঞ্জের মাওয়া এবং পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্ত থেকে টেকেরহাট পর্যন্ত সঞ্চালন পাইপলাইন নির্মাণের আরেকটি প্রকল্পের প্রস্তাব দিয়েছে জিটিসিএল। ৭৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সঞ্চালন লাইন নির্মাণ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ১৪৭ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। এ প্রকল্পের নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে সরকার। সম্ভাব্যতা সমীক্ষা সম্পাদনের কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এছাড়া, ফরিদপুর ও মাদারীপুরে গ্যাস সরবরাহের লক্ষ্যে ১১৫ কিলোমিটার গ্যাস পাইপলাইন নির্মাণের পরিকল্পনা তৈরি করেছে জিটিসিএল। দীর্ঘমেয়াদি এ পরিকল্পনায় ১ হাজার ৬০৮ কোটি টাকা ব্যয়ে টেকেরহাট থেকে বরিশাল পর্যন্ত সঞ্চালন লাইন নির্মাণ করা হবে। গ্যাসপ্রাপ্তি সাপেক্ষে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে সংস্থাটি। ভোলা থেকে বরিশাল পর্যন্ত ৩০ ইঞ্চি ব্যাসের ৬০ কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন নির্মাণের আরেকটি পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে জিটিসিএল। আগামী ১০ বছরের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে সংস্থাটি। এর সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৪ কোটি টাকা। দেশের জ্বালানি সংকট মোকাবেলায় সরকার বিদেশ থেকে উচ্চমূল্যে এলএনজি আমদানি করে জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করছে। এরই মধ্যে খুলনা অঞ্চলে গ্যাস সরবরাহের লক্ষ্যে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা থেকে খুলনা পর্যন্ত দীর্ঘ একটি সঞ্চালন লাইন নির্মাণ করা হয়েছে। যদিও গ্যাস সংকটে এ সঞ্চালন লাইন সক্রিয় করা যায়নি। সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আবদুল বায়েস বলেন, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় দক্ষিণ অঞ্চলে গ্যাস পাইপলাইন নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করার লক্ষ্য হলো মূলত ওই অঞ্চলে শিল্পায়নকে প্রসারিত করা। এ পরিকল্পনা সফল হলে সাগর, নদী ও স্থলবন্দরকেন্দ্রিক অর্থনীতি ব্যাপক হারে সম্প্রসারিত হবে। বিনিয়োগকারীরাও সেখানে প্রচুর বিনিয়োগ শুরু করবেন। এতে করে সেখানে ব্যবসা-বাণিজ্যের নতুন নতুন খাত সৃষ্টি হবে ।দেশে গ্যাস সঞ্চালন ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত একমাত্র রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি জিটিসিএল। ১৯৯৩ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকেই বিতরণ কোম্পানিগুলোকে সঞ্চালন লাইনের মাধ্যমে গ্যাস সরবরাহ করে আসছে কোম্পানিটি।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS