মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫, ০৫:৪৬ পূর্বাহ্ন

সাফকো স্পিনিংয়ের শেয়ারে কারসাজি তদন্তে বিএসইসির কমিটি

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : বৃহস্পতিবার, ১৯ মে, ২০২২

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বস্ত্র খাতের কোম্পানি সাফকো স্পিনিং মিলস লিমিটেডের শেয়ারে কারসাজির আলামত পেয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। দেশের প্রধান এই স্টক এক্সচেঞ্জটির তদন্তে নানা অনিয়ম ও আইন লংঘনের ঘটনা উঠে এসেছে।

এদিকে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনও (বিএসইসি) কোম্পানিটির শেয়ারের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে। এ লক্ষ্যে বিএসইসি গত ১১ মে উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আসিফ ইকবালকে প্রধান করে দুই সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কমিটিকে তদন্ত শেষ করে কমিশনের কাছে রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য ৩০ দিন সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে।

এদিকে ডিএসই সম্প্রতি তার তদন্ত প্রতিবেদন বিএসইসির কাছে জমা দিয়েছে। এই রিপোর্টে সাফকো স্পিনিংয়ের শেয়ারের মূল্য বৃদ্ধির পেছনে কারসাজির আলামত পাওয়া গেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। রিপোর্টে ৬ জন বিনিয়োগকারীর নাম উল্লেখ করে বলা হয়েছে, তারা কোম্পানিটির শেয়ার কেনাবেচায় সিকিউরিটিজ আইনের বিভিন্ন ধারা লংঘন করেছেন।

আলোচিত বিনিয়োগকারীরা হচ্ছেন- আবুল খায়ের হিরো, মোঃ সজিব হোসেন, কাজী ফরিদ হাসান, মোঃ আব্দুল কুদ্দুস আমিন, মোঃ সুলাইমান ও নুরুন্নেসা সাকি।

রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, মোঃ সজিব হোসেন, কাজী ফরিদ হাসান ও আবুল খায়েরের সহযোগীরা বিএসইসির উল্লেখযোগ্য শেয়ার ধারণ সংক্রান্ত বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শেয়ার অর্জন, অধিগ্রহণ ও কর্তৃত্ব গ্রহণ) বিধিমালা, ২০১৮ এর ৪(১) নং ধারা লংঘন করেছেন। বিধিমালার শর্ত পূরণ না করেই তারা সাফকো স্পিনিংয়ের ১০ শতাংশের বেশি শেয়ার কিনেছেন।

আলোচিত ধারা অনুসারে, কোনো কোম্পানির ১০ শতাংশ বা তার বেশি শেয়ার কিনতে চাইলে বা ধারণ করলে স্টক এক্সচেঞ্জে তার ঘোষণা দিতে হয়। কিন্তু আলোচিত ব্যক্তিরা এই ঘোষণা না দিয়ে আইন লংঘন করেছেন।

তদন্তে ডিএসই দেখতে পেয়েছে, মোঃ সজিব হোসেন, কাজী ফরিদ হাসান, মোঃ আব্দুল কুদ্দুস আমিন, মোঃ সুলাইমান ও নুরুন্নেসা সাকি এমন কিছু লেনদেন করেছেন, যা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স, ১৯৬৯ এর ১৭(ই) ধারার লংঘন।

ডিএসইর তদন্ত রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, মোঃ সজিব হোসেন ও তার সহযোগীরা সিরিজ লেনদেনের মাধ্যমে শেয়ারটির দাম বাড়িয়েছেন, যা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স, ১৯৬৯ এর লংঘন।

গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে কোনো মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ছাড়া-ই সাফকো স্পিনিং মিলসের শেয়ারের দাম ক্রমাগত বাড়তে থাকে। চার মাসে শেয়ারটির দাম বাড়ে প্রায় ২৪৬ শতাংশ। গত বছরের ১৩ এপ্রিল ডিএসইতে সাফকোর শেয়ারের দাম ছিল ৯ টাকা ৬০ পয়সা। ওই বছরের ৮ সেপ্টেম্বর কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বেড়ে দাঁড়ায় ৩৩ টাকা ২০ পয়সা।

গত বছরের এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে যখন সাফকো স্পিনিং মিলসের শেয়ারের দাম বাড়তে থাকে তখন পর্যন্ত কোম্পানিটির অর্ধবির্ষিক আর্থিক ফলাফল প্রকাশিত হয়েছিল। আর ওই ৬ মাসে (জুলাই’২০২০-ডিসেম্বর’২০২০) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি লোকসান ছিল ৪ টাকা ৪৩ পয়সা। ঠিক আগের অর্থবছরেও কোম্পানিটি লোকসান দিয়েছিল। ওই বছরে কোম্পানির শেয়ার প্রতি লোকসান ছিল ৫ টাকা ৬৯ পয়সা।

এমন একটি লোকসানি কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়ে হঠাৎ তিনগুণ হয়ে যাওয়ার বিষয়টি বড় রকমের অস্বাবিক ঘটনা হিসেবে সবার নজরে আসে। আর এর প্রেক্ষিতেই পরবর্তীতে বিষয়টির তদন্তে নামে ডিএসই।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS