সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫, ০১:১২ পূর্বাহ্ন

খুনি হাসিনার দোসরদের গ্রেফতারের দাবিতে ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনের বিক্ষোভ সমাবেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : বৃহস্পতিবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলন ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখার যৌথ উদ্যোগে ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ইং রোজ বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টায়, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে “চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ ছাত্রদের উপর নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ-আওয়ামী লীগের নৃশংস হামলা এবং ঢাকায় গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ভিপি নুরুল হক নুর-কে মারধর ও নীলফামারীতে গুলি চালিয়ে শ্রমিক হত্যাসহ সারাদেশে নৃশংস হত্যা নাশকতার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ” অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, জুলাই বিপ্লবের পর গঠিত ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জনগণের প্রত্যাশা পূরণে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। খুনি ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার দোসররা এখনো রাষ্ট্রযন্ত্রের বিভিন্ন পর্যায়ে সক্রিয়। নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ-আওয়ামী একের পর এক মিছিল করে যাচ্ছে, কাউকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না। অথচ ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম যোদ্ধা নুরুল হক নুরকে নির্মিম ভাবে পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়েছে। নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে একটি চক্র নির্বাচন বানচালের উদ্দেশ্যে দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির পায়তারা করছে। আমরা আশা করবো সরকার লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড ও সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতিকে একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপহার দেবে।

প্রধান বক্তা ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনের প্রধান উপদেষ্টা ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের প্রতিষ্ঠাকালীন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাবেক বিচারপতি আব্দুস সালাম মামুন বলেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হাজারো ছাত্রজনতার জীবন উৎসর্গের মধ্য দিয়ে যে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের প্রত্যাশা ছিল অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সেই বাংলাদেশ বিনির্মাণে সক্ষম নন। ছাত্র-জনতার খুনিরা এখনো প্রকাশ্য দিবালোকে ঘুরে বেড়াচ্ছে অথচ তাদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে না। দেশে মব কালচার তৈরি করে জুলাই বিপ্লবের বিচারকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করছে পতিত স্বৈরাচারের দোসররা।

সভাপতির বক্তব্যে ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির প্রধান সমন্বয়ক সাবেক ছাত্রনেতা এম. এ. হাশেম রাজু বলেন, দেশ এখনো ফ্যাসিবাদ মুক্ত হয়নি। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের ওপর  নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের মুখ ঢেকে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা তাই প্রমাণ করে। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ফ্যাসিবাদের সমর্থকরা আবারো সক্রিয় হতে শুরু করেছে। অথচ সরকার তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। জুলাই বিপ্লবে যে সকল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও আওয়ামী সন্ত্রাসী প্রকাশে গুলি চালিয়ে কুপিয়ে ছাত্র-জনতাকে হত্যা করেছে তাদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে না। উল্টো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনের সহযোদ্ধাদের উপর হামলা চালাচ্ছে। ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরকে হত্যার উদ্দেশ্যে যেভাবে পেটানো হয়েছে অবিলম্বে সেই হামলাকারীর ও পিছনের ইন্ধনদাতাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।

তিনি বলেন, নীলফামারীতে বেতন-ভাতার দাবিতে আন্দোলনরত নিরীহ শ্রমিকদের ওপর গুলি করে তাদের হতাহত করা আমাদেরকে ফ্যাসিস্ট হাসিনা রেজিমের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। সারাদেশে খুন-ধর্ষণ-লুটপাট চললেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের দমনে তেমন কার্যকর কোন ভূমিকা রাখছে না। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে ফ্যাসিবাদের দোসরা ঘোলাপানিতে মাছ শিকার করে ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে আবারো ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে। কিন্তু আমরা ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনের যোদ্ধারা মাঠে থাকতে তাদের সেই স্বপ্ন কোন ভাবেই বাস্তবায়ন হতে দেব না। তিনি দেশকে ফ্যাসিবাদ মুক্ত করতে দলমত নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।

ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সমন্বয়ক দেলোয়ার হোসেন ও ঢাকা উত্তরের আহ্বায়ক এনামুল হকের সঞ্চালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনের উপদেষ্টা সাবেক ছাত্রনেতা কাজী ছাব্বীর, মহিলা উইংয়ের আহ্বায়ক প্রফেসর জেসমিন আক্তার, কেন্দ্রীয় যুগ্ম সমন্বয়ক প্রফেসর মো. ইমাম হাসান ছাইফি, মুর্শিদুল হক বিদ্যুৎ, কেন্দ্রীয় যুগ্ম সচিব কামরুল ইসলাম মজুমদার, এস এম ফরিদ, মালেক কাজী, নুর আলম জিকু, মো. সালাউদ্দিন, রাশেদুল ইসলাম, প্রফেসর হাসান মাহমুদ, এ্যাড. সাইফুদ্দিন মুহাম্মদ খান, শ্রমিক নেতা আসিফ ইমাম, হাসান উদ্দিন মন্টু, সাবেক ছাত্রনেতা মবিনুল ইসলাম, যুবনেতা বাবর আলী প্রমুখ।

Please Share This Post in Your Social Media

Comments are closed.

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS