গত ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অন্তত ৬৪০ জন নিহত হয়েছে। আহতের সংখ্যা ১৯ হাজার ২০০ জনেরও বেশি। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সাবেক সিনিয়র সচিব ও আন্দোলনে হতাহতদের পরিপূর্ণ তালিকা তৈরিতে গঠিত কমিটির প্রধান মুহাম্মদ হুমায়ুন কবির বিবিসি বাংলাকে এমন তথ্যের পাশাপাশি বলেছেন, এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। তিনি বলেন, এই আন্দোলনে হতাহতদের পরিপূর্ণ তালিকা তৈরি করতে গত ১৫ আগস্ট স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কমিটি গঠন করে। গত বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয়ে কমিটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
‘খসড়া তালিকা’র কথা উল্লেখ করে মুহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, ‘নিহতের সংখ্যা আরও বাড়বে। কারণ সাভারে যারা মারা গিয়েছিল এবং যাদের কোনো কাগজ ছাড়া দাফন করা হয়েছিল, তাদের রিপোর্টিংয়ের সুযোগ দিতে হবে। ফলে আরও বাড়বে নিহতের সংখ্যা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৪৫০ জনেরও বেশি মানুষকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। এই ২১ দিনের মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৮১ জন মারা গেছেন।
সিনিয়র সচিব বলেন, ‘আহত ১৯ হাজারেরও বেশি। এর মধ্যে কিছু ব্যক্তি আছেন গুরুতর আহত। যারা হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। ইনডোরে ভর্তি ছিল সাড়ে সাত হাজারের মতো লোক।’
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, আহতদের মধ্যে ১৬ হাজার জনের বেশি সরকারি হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন। অন্তত তিন হাজার জন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
হুমায়ুন কবির বলেন, ‘এটি একটি খসড়া তালিকা। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এর তথ্য আরও আপডেট করছেন। আরও ডেটা কালেক্ট করতে হবে। যেহেতু লোকগুলো চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতাল থেকে চলে গেছে তাই তাদের তথ্য কালেক্ট করতে হবে। ৫ তারিখ পর্যন্ত অনেকে কারেক্ট তথ্য দেয়নি।’
সব হাসপাতালে রেজিস্ট্রারও সেইম স্ট্রাকচারে মেইনটেইন করে না। এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করেই এই তথ্যগুলো তৈরি করা হয়েছে। তবে প্রতি মুহূর্তেই এসব তথ্য বদলাবে। কম্পিউটারাইজড ডাটাবেইজের ধর্ম হচ্ছে একটা লাইভ ডাটা যখন ঢুকবে প্রতি মুহূর্তেই তা বদলাবে,’ বলেন তিনি। পূর্ণাঙ্গ তথ্য পেতে আরেও মাসখানেক সময় লাগবে বলে জানান সিনিয়র সচিব। ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি ১১ হাজার মানুষ আহত হয়েছেন বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। চট্টগ্রামে আহতের সংখ্যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দুই হাজার।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঢাকা বিভাগে নিহতে সংখ্যা সর্বোচ্চ। এ বিভাগে নিহত হয়েছেন ৪৭৭ জন। নিহতের সংখ্যা সবচেয়ে কম বরিশালে একজন। চট্টগ্রাম ও খুলনায় নিহতের সংখ্যা যথাক্রমে ৪৩ ও ৩৯ জন। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, হাসপাতালে ভর্তি গুরুতর আহত তিন হাজার ৪৮ জন। আঘাতের কারণে স্থায়ীভাবে শারীরিক অক্ষম হয়ে পড়েছেন অন্তত ৫৩৫ জন। স্বাস্থ্য অধিদফতরের অধীনে ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম আন্দোলনে আহত ও নিহতদের তালিকা তৈরি করছে বলে জানান হুমায়ুন কবির।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply