রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫, ০৬:৪১ অপরাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদ
পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘাতে ভারতের ২৫০ সেনা নিহত টেক্সাসে আকস্মিক বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫০ একদিনে আরও ৩ জনের করোনা শনাক্ত জামায়াতের আমিরের সঙ্গে বিদেশি প্রতিনিধিদের সৌজন্য সাক্ষাৎ পরীক্ষায় নকল করলেই ৪ বছর নিষিদ্ধ মাধবপুর মাদ্রাসার ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে শাহ আলম আটক স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক-এর ১১তম এমটিও ব্যাচের ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত কমিউনিটি ব্যাংকের উদ্যোগে “বাংলাদেশ ব্যাংক কম্প্রিহেনসিভ ইনস্পেকশন কমপ্লায়েন্স” শীর্ষক বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত লুকিয়ে রাখা বাচ্চা আমার কাছে পৌঁছে দিলে ২০ হাজার ডলার দেব: তিশা গ্লোবাল সুপার লিগে খেলবেন সাকিব আল হাসান

আবারও সিলেটে বন্যায় চোখ রাঙাচ্ছে, তলিয়ে যাচ্ছে শত শত গ্রাম

আবুল কাশেম রুমন
  • আপডেট : বৃহস্পতিবার, ২২ আগস্ট, ২০২৪

সিলেট প্রতিনিধি: গত কয়েক দিনের ভারি বৃষ্টিপাত ও ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাসিদে সিলেটে বন্যায় আবারও নতুন করে চোখ রাঙাচ্ছে। প্রতিদিন বন্যার পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে শত শত গ্রাম। বাড়ছে সিলেটে বিভাগের সব কয়েকটি নদ-নদীর পানি। প্লাবিত হচ্ছে নিম্নাঞ্চল।

সিলেটে বৃস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত শেষ ২৪ ঘন্টায় ৬৩ দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। আগের ২৪ ঘন্টার তুলনায় বৃষ্টি কমলেও বাড়ছে সিলেটের বিভিন্ন পয়েন্টের নদ-নদীর পানি। এর মধ্যে কুশিয়ারা নদীর তিন পয়েন্টে পানি বিপদসীমা অতিক্রম করেছে।

এর মধ্যে কুশিয়ারা নদীর ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্ট, অমলশিদ ও শেরপুর পয়েন্টে পানি বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। তবে অন্য কোনো নদ-নদীর পয়েন্টে বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বিপদসীমা অতিক্রম না করলেও বিপদসীমার কাছাকাছি রয়েছে। কুশিয়ারা নদীর  ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে বিপদসীমার ১০ দশমিক ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। নদীর ওই পয়েন্টে বিপদসীমা ৯ দশমিক ৪৫ সেন্টিমিটার।

কুশিয়ারা নদীর অমলশিদ পয়েন্টে বুধবার সন্ধ্যা ৬টায় পানি বিপদসীমার ১৫ দশমিক ৪৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। নদীর ওই পয়েন্টে পানির বিপদসীমা ১৫ দশমিক ৪০ সেন্টিমিটার। কুশিয়ারা নদীর শেরপুর পয়েন্টে বুধবার সন্ধ্যা ৬টায় বিপদসীমার ৮ দশমিক ৫৮ ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। নদীর ওই পয়েন্টে বিপদসীমা ৮ দশমিক ৫৫ সেন্টিমিটার। সে সব পয়েন্টে আর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে।

এছাড়া বিপদসীমার কাছাকাছি রয়েছে কুশিয়ারা নদীর শেওলা, সুরমা নদীর সিলেট ও কানাইঘাট পয়েন্ট। বৃষ্টি না কমলে আজকের মধ্যে এসব পয়েন্ট বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের সিলেট কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, সিলেটে বৃষ্টিপাত কমে এলেও বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না। সিলেটের বৃষ্টিপাতের ওপর এই অঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি নির্ভর করে না। মূলত ভারত সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় পাহাড়ি ঢলের ফলে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। তিনি বলেন, চলতি সময়ে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হলেও ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ কম হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর শুক্রবার পর্যন্ত সিলেটসহ দেশের কয়েকটি অঞ্চলে হালকা  থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি ইতিমধ্যে  দেশের মধ্যাঞ্চল ও আশপাশ এলাকায় অবস্থান করছে।
সিলেট আবহাওয়া অধিদপ্তরের উপসহকারী আবহাওয়াবিদ অমর চন্দ্র তালুকদার বলেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমে এসেছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী ২৪ ঘণ্টায় ৮৮ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টিপাত হলে অতি ভারী বৃষ্টিপাত ধরা হয়। আবার ২৪ ঘণ্টায় ৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হলে ভারী বৃষ্টিপাত ধরা হয়।

মৌলভীবাজার তলিয়ে গেছে শতাধিক গ্রাম:
টানা বৃষ্টিপাত ও ভারত থেকে আসা ঢলে মৌলভীবাজার জেলার ৫টি নদ-নদীর পানি বিপদসামীর ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কুশিয়ারা নদী, মনু, ধলাই ও জুড়ী নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে। এতে জেলা সদর, রাজনগর, কুলাউড়া, কমলগঞ্জ ও কুলাউড়া, জুড়ী এবং বড়লেখা উপজেলায় শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে হাজার-হাজার ঘরবাড়ি। কয়েক দিনের টানা বর্ষণ, পাহাড়ি ঢল এবং উজান থেকে নেমে আসা পানিতে জেলার সবকটি নদ-নদীতে পানি বাড়ছে বলে জানিয়েছে মৌলভীবাজারের পাউবো। সংশ্লিষ্টরা জানান, টানা বর্ষণে মনু ও ধলাই নদীর অন্তত পাঁচটি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে।

মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, জেলার মনু নদী (রেলওয়ে ব্রিজ) বিপদসীমার ১০৫ সেন্টিমিটার চাঁদনীঘাট এলাকায় ৭০ সেন্টিমিটার, ধলাই নদীতে ৮  সেন্টিমিটার ও জুড়ী নদীতে বিপদসীমার ১৭৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কুশিয়ারা নদীর পানিও বিপদসীমা স্পর্শ করেছে। বন্যা কবলিত মানুষরা বলছেন, স্থানীয় জন প্রতিনিধি ও প্রশাসন মাঠে না থাকায় বিগত বন্যার মতো তারা সহযোগিতা পাচ্ছেন না। অনেক নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে পারছেন না। মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন  বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জাবেদ ইকবাল বলেন, ধলাই নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে আটটি স্থান দিয়ে বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। মনু নদীরও বাঁধও ভেঙে গেছে। ভারতের ত্রিপুরায় বৃষ্টি হওয়াতে নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। বৃষ্টি কমে গেলে পানি নেমে যাবে। এছাড়া যে সব স্থানে বাঁধ ভেঙেছে সেগুলোতে কাজ চলছে বলে তিনি জানান। এদিকে সিলেট বিভাগ জুড়ে সময় যথ গড়াচ্ছে তাতে বন্যার পানি বাড়তেছে তীব্র গতিতে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS