চাঁদপুর প্রতিনিধি: চাঁদপুর লঞ্চটার্মিনাল এখন বিশেষ কিছু লঞ্চের ব্যক্তিগত ঘাটে পরিনত হয়েছে। অনিয়মতান্ত্রিক ভাবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা এসব লঞ্চ টার্মিনাল দখল করে রাখছে। বিআইডব্লিউটিএ-ও এ ব্যাপারে নির্বিকার।
এই টার্মিনালে নিয়ম মেনে চলা বিভিন্ন লঞ্চের সুপার ভাইজারদের অভিযোগ বিআইডব্লিউটিএ- এর টিআই শাহ আলম এসব লঞ্চ থেকে ব্যক্তিগত সুবিধা নিচ্ছেন। সে কারণে লঞ্চ টার্মিনালে এই বিশৃঙ্খলা চলছে।
শুক্রবার (১৫ এপ্রিল) রাত দেড় টায় চাঁদপুর লঞ্চ টার্মিনালে গেলে দেখা যায়, রফ রফ, ঈগল-৫, সোনার তরী-৫, এম.ভি শম্পা পুরো টার্মিনালই দখল করে রেখেছে।
ঈগল-৩ লঞ্চের সঙ্গে জড়িত কালু বললেন, ঘাটে টিআই শাহআলম সাবকে ম্যানেজ করেই লঞ্চ ভিড়ানো হয়। তার সুনজর না থাকলে তো লঞ্চ ঘাটে রাখা সম্ভব হতো না।
এম. ভি শম্পা লঞ্চের মাস্টার মো. নাসির উদ্দীন বলেন, টিআই শাহ-আলমের নির্দেশেই ঘাটে লঞ্চ ভিড়িয়ে রেখেছি। তাছাড়া ঘাটে আরো অন্যান্য লঞ্চও ভিড়িয়ে রেখেছে, কই টিআই তো এ বিষয়ে কখনো কিছু বলেন না।
রফ রফ লঞ্চের লস্কর মো. সুমন বলেন, ঘাটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লঞ্চ ভিড়িয়ে রাখার বিষয়ে টিআই শাহআলম সাহেব তো কখনো আমাদের কিছু বলেননি। তিনি তো জানেন, আমরা এখানে লঞ্চ ভিড়িয়ে রাখি। তার সাথে বোজাপড়া না করে ঘাট থেকে লঞ্চ সরাবো না।
ঈগল-৫ লঞ্চের লস্কর আব্দুল জলিল বলেন, টিআই শাহআলম সাহেবকে ম্যানেজ করেই আমরা ঘাটে সব সময় লঞ্চ ভিড়িয়ে রাখি। তিনি বললে আমরা আর ঘাটে লঞ্চ ভিড়িয়ে রাখবো না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন লঞ্চের স্টাফ সাংবাদিকদের জানান, টার্মিনালে এভাবে লঞ্চ ভিড়িয়ে রাখার কোন নিয়ম নেই। অথচ অনিয়মকে নিয়ম বানিয়ে দীর্ঘক্ষণ টার্মিনালে অবৈধভাবে লঞ্চ পল্টুনে বেঁধে রাখা হচ্ছে। আবার টাকা দিলে লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রীও নেওয়া যায় এবং সিডিউল বিপর্যয় করেও কেউ কেউ লঞ্চ ঘাট থেকে ইচ্ছে মতো ছাড়ছেন। তারপর বিভিন্ন রুটের লঞ্চও চাঁদপুর লঞ্চটার্মিনালে ভিড়ে এবং ব্যাপক হারে শব্দদূষণ করে।
চাঁদপুর নৌ থানার এস আই বাবুল বালা বলেন, অবৈধভাবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লঞ্চ চাঁদপুর নৌ টার্মিনালে রেখে আমাদের সরকারি আলামত বলগেটেরও অনেক ক্ষতি করা হচ্ছে। বিষয়টি আমাদের নৌ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
নানা অভিযোগের তীর বিআইডব্লিউটিএ-এর ট্রাফিক ইন্সপেক্টর শাহ আলমের দিকে উঠলেও তিনি সব অস্বীকার করে বলেন, বিভিন্ন রুটের লঞ্চ অহেতুক শব্দদূষণ করে বিষয়টি আমি চিঠি আকারে উর্ধ্বতনকে জানিয়েছি। তাছাড়া ঘণ্টার পর ঘণ্টা লঞ্চ পল্টুনে বেঁধে যেন না রাখা হয়, এ ব্যাপারে তদারকি করা হচ্ছে। টাকা পেলে অতিরিক্ত যাত্রী, ইচ্ছে মতো সিডিউল- এসব তথ্য সঠিক নয়। আমি লঞ্চ টার্মিনালের সৌন্দর্য রক্ষায় সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply