শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:৪৭ অপরাহ্ন

গাইবান্ধায় পানিবন্দী ১৮ হাজার পরিবার

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : বৃহস্পতিবার, ৪ জুলাই, ২০২৪
  • ৭৫ Time View

গত ৬ দিনের ভারী বৃষ্টি এবং পাহাড়ি ঢলে ব্রহ্মপুত্র ও ঘাঘট নদের পানি বেড়ে বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। প্লাবিত হয়েছে গাইবান্ধা সদর, ফুলছড়ি, সাঘাটা ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ২৪ ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল। এতে প্রায় ১৮ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। তলিয়ে গেছে জমির পাট, কাউন, তিল ও শাকসবজিসহ বর্ষাকালীন ফসল। দুর্গত এলাকার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং দাখিল মাদ্রাসার ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন গ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে।

গাইবান্ধা পাউবোর বন্যা নিয়ন্ত্রণ কক্ষের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ৫৭ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমার ৭৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে এবং ঘাঘটের পানি ৫১ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমার ২৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় করতোয়ার পানি ৬২ সেন্টিমিটার এবং তিস্তার পানি ১৭ সেন্টিমিটার কমেছে। 

সুন্দরগঞ্জ উপজেলার লালচামার গ্রামের আব্দুল মতিন মিয়া জানান, বাড়ির উঠানে পানি উঠলেও এখনো ঘরের মধ্যে উঠেনি। তবে তার ২ বিঘা জমির মরিচ, পটল ও কঁচুক্ষেত ডুবে গেছে। তিনি আরও বলেন, বন্যা এলে তিস্তার চরাঞ্চলের মানুষের কষ্টের সীমা থাকে না। ফুলছড়ি উপজেলার বাউসী গ্রামের আবেদ আলী জানান, বন্যায় গবাদি পশু নিয়ে সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়েছি। সাঘাটা উপজেলার বরমতাইড় গ্রামের হানিফ মিয়া জানান, পানিবন্দী লোকজন বন্যা আসলে পরিবারের শিশু ও বৃদ্ধদের নিয়ে চরম বিপদে পড়েন। একই উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোজাহারুল ইসলাম জানান, পানি বাড়ায় তার গোটা ইউনিয়ন প্রায় ডুবে গেছে। তবে এখন পর্যন্ত আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার মত পরিস্থিতি হয়নি।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা জুয়েল মিয়া জানান, বন্যায় গাইবান্ধা সদর উপজেলা ২টি ইউনিয়নের ২ হাজার ১৫০ পরিবার, সুন্দরগঞ্জের ৭টি ইউনিয়নের ৪ হাজার ৭০০ পরিবার, সাঘাটার ৮টি ইউনিয়নের ৫ হাজার ১৭০ পরিবার এবং ফুলছড়ি উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের ৬ হাজার ৮০০ পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। এসব পরিবারের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র ও মেডিকেল টিম করা হয়েছে। এছাড়া ত্রাণ বিতরণ ও উদ্ধার কার্যক্রমের জন্য নৌকা এবং স্পিডবোট প্রস্তুত রাখা হয়েছে।  

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রোকসানা বেগম জানান, ভবন ও চত্বর বন্যার পানিতে নিমজ্জিত ও যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় গাইবান্ধা সদর উপজেলায় দু’টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও একটি মাদ্রাসা, এবং ফুলছড়ি উপজেলায় ৫টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও দু’টি মাদ্রাসার ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন গ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে। 

সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সোনালী সরকার জানান, বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হওয়া জেলার সদরে ১৭টি, ফুছড়িতে ১৪টি, সাঘাটাঙ ২১টি এবং সুন্দরগঞ্জে ১১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। 

গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী হাফিজুল হক বলেন, জেলার ব্রহ্মপুত্র, করতোয়া ও ঘাঘট নদীর পানি বাড়ছে। তবে তিস্তার পানি কমতে শুরু করেছে। জেলার নিম্নাঞ্চল বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড সব ধরনের ঝুঁকি মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2024 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS