চট্টগ্রামের বে-টার্মিনাল গভীর সমুদ্রবন্দর উন্নয়নে বাংলাদেশকে ৬৫ কোটি ডলার সহায়তা দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক।
শুক্রবার (২৮ জুন) সংস্থাটির বোর্ড অব এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টরস এ অনুমোদন দেয় বলে এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানায় বিশ্বব্যাংক।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চট্টগ্রামের বে-টার্মিনাল গভীর সমুদ্রবন্দরের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোতে বিনিয়োগ ও উন্নয়নের জন্য ৬৫ কোটি অর্থ সহায়তা দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক। এটি বিশ্ববাণিজ্য প্রতিযোগিতায় উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন করবে বাংলাদেশকে। পাশাপাশি বন্দরের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে আমদানি-রফতানি ব্যয় কমিয়ে আনবে বলে মনে করে সংস্থাটি।
সামুদ্রিক এই অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প স্রোত এবং চরম আবহাওয়ার প্রতিকূল অবস্থা থেকে সমুদ্রবন্দরকে রক্ষা করতে ৬ কিলোমিটার জলবায়ু-স্থিতিস্থাপক ব্রেকওয়াটার নির্মাণ করা হবে। এটি বন্দর বেসিন, প্রবেশদ্বার এবং অ্যাক্সেস চ্যানেলগুলোর ড্রেজিংও পরিচালনা করবে। নতুন আধুনিক এই বে টার্মিনাল শীর্ষ আন্তর্জাতিক টার্মিনাল অপারেটরদের দ্বারা পরিচালিত হবে বলে জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, এর মাধ্যমে প্যানাম্যাক্স জাহাজের মতো বড় আকারের জাহাজগুলোকে ঘুরানো আগের থেকে অনেক সহজ হবে। এতে প্রতিদিন আনুমানিক ১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সাশ্রয় হবে বাংলাদেশের। এই বন্দর দিয়ে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের পরিমাণ প্রায় ৯০ শতাংশই, তবে বর্তমানে শুধুমাত্র ছোট জাহাজগুলোই নির্ধারিত সময়ের জন্য বাণিজ্য করতে পারে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ও ভুটানের জন্য বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক বলেন, ‘বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য চট্টগ্রাম বন্দরের ওপর অনেক বেশি নির্ভর করে। কিন্তু বন্দরটিকে মাঝে মাঝে সীমাবদ্ধতার সম্মুখীন হতে হয়। বে টার্মিনাল প্রকল্পটি একটি গেম চেঞ্জার হবে এই বন্দরের জন্য। এটি বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি পরিবহন খরচ ও সময় হ্রাসের মাধ্যমে বাংলাদেশের রফতানি প্রতিযোগিতার উন্নতি ঘটাবে এবং বিশ্ববাজারে নতুন সুযোগ উন্মোচন করবে।’
উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের পরে এ বন্দরে নৌ পথের পাশাপাশি সড়ক এবং রেল যোগাযোগের সুবিধাও থাকবে। আর এখানে বছরে কনটেইনার হ্যান্ডলিং করা হবে ৫০ লাখের বেশি। বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দর কনটেইনার হ্যান্ডলিং করা হচ্ছে ৩০ থেকে ৩২ লাখ।
বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র ট্রান্সপোর্ট স্পেশালিস্ট এবং প্রকল্পের প্রধান হুয়া টান বলেন, বাংলাদেশের সমুদ্রবন্দর অবকাঠামোর আধুনিকীকরণ এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বাজারে এর সংযোগ উন্নত করতে অবদান রাখবে বে টার্মিনাল।
বে টার্মিনাল স্থাপিত হলে বাংলাদেশের কন্টেইনারের ৩৬ শতাংশ হ্যান্ডলিং করা যাবে। শিপিং কোম্পানি, ব্যবসায়ীগোষ্ঠী, আমদানিকারক, রফতানিকারক এবং মালবাহী ফরওয়ার্ডার সহ ১০ লাখের বেশি মানুষের মাধ্যমে সরাসরি উপকার পাবে বলে আশা করছে বিশ্বব্যাংক।
২০২৩-২৪ অর্থবছরে বিশ্বব্যাংক এই প্রকল্পসহ বাংলাদেশকে ৩ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বলে জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply