বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৪২ অপরাহ্ন

আপনি মানসিক রোগে ভুগছেন না তো?

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : শুক্রবার, ৭ জুন, ২০২৪
  • ১০০ Time View

মস্তিষ্কের স্বাভাবিক বিকাশ ও কর্মক্ষমতার বিপর্যয় ঘটলে মানসিক রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়তে শুরু করে। বর্তমান ব্যস্ত সময়, প্রতিযোগিতাময় জীবন ও নানা জটিলতার সম্মুখীন হলে মানুষকে এ সমস্যায় ভুগতে দেখা যায়।

মানসিক ব্যাধি বা রোগ মানসিক স্বাস্থ্যেরই একটি দিক। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানসিক সমস্যা অন্যসব সমস্যার মতোই একটি সমস্যা। অথচ অনেকেই এই সমস্যাটাকে তেমন গুরুত্ব দেন না। আবার অনেকে বুঝতেই পারেন না তার মানসিক সমস্যা তৈরি হয়েছে। শারীরিক অন্যান্য সমস্যার মতো মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত হলেও এর চিকিৎসা প্রয়োজন। সঠিক কাউন্সেলিং ও চিকিৎসায় পুরোপুরি আরোগ্য লাভ করা যায় এ সমস্যা থেকে।

বাংলাদেশে মানসিক সমস্যায় ভুগছেন এমন রোগীর সমস্যা কম নয়। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই চিকিৎসকরা বলছেন, রোগটিকে তেমন গুরুত্ব না দেয়ায় দেশের বেশির ভাগ মানুষ মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের কাছে যাওয়ার ক্ষেত্রে অনীহা দেখান।

আবার অনেকেই বোঝেন না, কখন আসলে তাদের চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। মানসিক, পারিবারিক বা সামাজিক নানা ট্যাবুও এক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু এ ধরণের সমস্যায় চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত। তাই আসুন জেনে নিই, কী ধরণের আচরণ বা উপসর্গ স্পষ্ট হয়ে উঠলে বুঝবেন আপনি মানসিক সমস্যায় ভুগছেন।

মানসিক রোগের যেসব লক্ষণ হতে পারে:

১. হঠাৎ হঠাৎ করে বেশি উত্তেজিত হয়ে ওঠা।

২. অনেকদিন ধরে নিজেকে সবার কাছ থেকে সরিয়ে গুটিয়ে রাখা।

৩. টানা দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে মন খারাপ থাকা।

৪. অন্যদের সঙ্গে একেবারে কথা বলতে না চাওয়া।

৫. সবার সাথে ঝগড়া করা।

৬. গায়েবি আওয়াজ বা কথা শুনতে পাওয়া।

৭. অন্যদের অকারণে সন্দেহ করতে শুরু করা।

৮. গোসল বা দাঁত মাজার মতো নিয়মিত প্রাত্যহিক কাজ করা বন্ধ করে নিজের প্রতি যত্ন না নেয়া।

৯. যেসব কাজে আনন্দ পাওয়া সেসব কাজে নিরানন্দ ও আগ্রহ কমে যাওয়া।

১০. সামাজিক সম্পর্ক থেকে নিজেকে সরিয়ে নেয়া।

১১. নিজেকে নিয়ে নেতিবাচক চিন্তা করা বা নিজেকে দায়ী মনে হওয়া সবকিছুতে।

১২. সিদ্ধান্তহীনতা বা মনোযোগ কমে যাওয়া এবং খুব তীব্র হলে আত্মহত্যার চিন্তা, পরিকল্পনা ও চেষ্টা করা।

১৩. অতিরিক্ত শুচিবায়ুগ্রস্ত হয়ে ওঠা।

১৪. ঘুম অস্বাভাবিক কম বা বাড়তে পারে।

১৫. খাবারে অরুচি তৈরি হওয়া বা রুচি বেড়ে যাওয়া।

১৬. বাসার, অফিসের বা পেশাগত কাজের প্রতি অনীহা তৈরি হওয়া বা আগ্রহ হারিয়ে ফেলা।

তবে এই সমস্যাগুলোর মানেই যে তিনি মানসিক রোগে আক্রান্ত, এমন তা নয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব উপসর্গ বা লক্ষণ দেখা গেলে নিজে থেকে সমস্যার সমাধানে চেষ্টা করতে হবে। ভালো লাগার কাজগুলোতে নিজেকে ব্যস্ত রাখতে হবে। তারপরও যদি আপনি এ সমস্যা থেকে বের হতে না পারেন তবে একজন মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে দ্রুতই আপনার কথা বলা উচিত।

একমাত্র মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকই আপনার অবস্থা সঠিকভাবে পরীক্ষা ও বিশ্লেষণ করে বুঝতে পারবেন যে, এখানে আসলে কোন ব্যবস্থা নেয়া উচিত আপনার ক্ষেত্রে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যখন কোন ব্যক্তির আচরণ, ব্যবহারে বড় ধরণের পরিবর্তন দেখা যায়, বিশেষ করে তার আবেগ প্রকাশে পরিবর্তন আসে এবং সেটা তার দৈনন্দিন কর্মকাণ্ডে, সম্পর্কে প্রভাব ফেলতে শুরু করে, তখনি সেদিকে মনোযোগ দিতে হবে। মনের অবস্থার কারণে যদি কারও স্বাভাবিক বা প্রাত্যহিক কর্মকাণ্ড ব্যাহত হতে থাকে, তখন বুঝতে হবে যে, সে হয়তো মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2024 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS