নিজস্ব প্রতিবেদক: সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার ‘পয়লা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়’ ভবনটি প্রায় তিন বছর আগে যমুনা নদীর ভাঙনে বিলীন হয়েছে । নতুন ভবন নির্মাণের জন্য প্রকল্পও বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে ভবন তৈরি না হওয়ায় খোলা আকাশের নিচে চলছে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম। এবারের হাড় কাঁপানো কনকনে শীতের মধ্যেও শিক্ষার্থীদের খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করতে হচ্ছে। এতে শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে বিভিন্ন ঠান্ডাজনিত রোগে।
জানা যায়, ২০২১ সালে যমুনার ভাঙনে চৌহালীর ভুতের মোড়ে পয়লা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনটি নদীতে বিলীন হয়ে যায়। এরপর থেকে বাঘুটিয়া ইউনিয়নের চরসলিমাবাদ দক্ষিণপাড়া এলাকায় একটি ভাড়া বাড়িতে টিনের ছাপরা ঘর তুলে শুরু হয় পাঠদান কার্যক্রম। এদিকে ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি-৪ প্রকল্পের আওতায় প্রায় ৩৩ লাখ টাকা ব্যয়ে পয়লা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়। উমারপুর ইউনিয়নের পয়লা চরে পাঁচ কক্ষ বিশিষ্ট টিনের ঘরটি নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করা হয়। ৬ মাসের মধ্যে ওই ঘরটি নির্মাণের কথা থাকলেও গত দেড় বছরে তিন ভাগের এক ভাগ কাজও করেনি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।
এদিকে ভাড়া নেওয়া ওই ছাপরা ঘরটি ছেড়ে দিয়ে নির্মাণাধীন নতুন ভবনের পাশে তীব্র শীতেও পাঠদান কার্যক্রম চালানো হচ্ছে প্রতিষ্ঠানটির।
স্থানীয় বেশ কয়েকজন অভিভাবক বলেন, তীব্র শীতে খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করতে খুব কষ্ট হচ্ছে শিশুদের। তাদের কেউ কেউ ঠান্ডাজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। ৬ মাসের মধ্যে ঘরটি নির্মাণের কথা থাকলেও দেড় বছরে তিন ভাগের এক ভাগ কাজও করেনি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ৪ প্রকল্পের আওতায় প্রায় ৩৩ লাখ টাকা ব্যয়ে পয়লা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রেহেনা পারভীন জানান, নদী ভাঙনে স্কুল বিলীনের পর থেকে টিনের ছাপরা ঘর তুলে পাঠদান কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হয়েছে। ঘর না থাকায় বই, হাজিরা খাতা, টেবিল, চেয়ার, ব্ল্যাকবোর্ড, গুরুত্বপূর্ণ ফাইলসহ আসবাবপত্র বাইরে পড়ে থেকে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সাবেক সভাপতি আব্দুল হালিম জানান, ঠিকাদারের গাফিলতির জন্য শিক্ষার্থীদের খোলা আকাশের নিচে কষ্ট করে ক্লাস করতে হচ্ছে। ঘরের কাঠামো তৈরি করেই ঠিকাদার উধাও হয়েছে। এখনো ঘরের মূল কাজ বাকি।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এসকে টিমবারের মালিক মো. কোহিনূর জানান, একসঙ্গে দুই স্কুলের কাজ করায় বেশি সময় লাগছে। আশা করছি, মার্চের মধ্যেই শেষ হবে।
চৌহালী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদ বলেন, স্কুলটি নদীতে বিলীন হওয়ায় পয়লা চরে টিনের ছাপরায় পাঠদান কার্যক্রম চলছে। কিন্তু পাঠদানে কষ্ট হচ্ছে। সেখানে চর মডেলের একটি নতুন ঘর তৈরি হচ্ছে। ঠিকাদারকে দ্রুত নির্মাণকাজ শেষের তাগিদ দিচ্ছি বলেও জানান তিনি।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply