নাম পরিবর্তনের হিড়িক লেগেছে বাংলাদেশের রাষ্ট্রায়ত্ত এবং বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে। প্রতি সপ্তাহেই নাম পরিবর্তন করছে কোনো না কোনো ব্যাংক।
সবশেষ রোববার (৮ অক্টোবর) নিজেদের নাম পরিবর্তন করেছে ব্র্যাক ব্যাংক এবং ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক। মূলত আসল নাম ঠিক রেখে মূল অংশের সঙ্গে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি (পিএলসি) যোগ করছে দেশের ব্যাংকগুলো।
অনেকের মনে প্রশ্ন জেগেছ, হঠাৎ করে ব্যাংকগুলো কেন নিজেদের নামের শেষে পিএলসি যোগ করছে। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চলতি বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ (বিআরপিডি) এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী, এখন থেকে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর নামের শেষে ‘পাবলিক সীমিতদায় কোম্পানি’ বা ‘পিএলসি’ লিখতে হবে।
এ আদেশের অংশ হিসেবেই ধাপে ধাপে প্রতিটি বাণিজ্যিক ব্যাংক নিজেদের নামের সঙ্গে পিএলসি যোগ করছে।
এতদিন ব্যাংকগুলোর নামের শেষে লিমিটেড থাকলেও, এখন লিমিটেড বদলে পিএলসি যোগ করা হচ্ছে। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের শেষেও যেমনি যোগ হচ্ছে পিএলসি, একইভাবে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর নামের শেষেও এই আদ্যক্ষর যুক্ত হচ্ছে।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা বলেন, আগে বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে গণহারে লিমিটেড শব্দটি ব্যবহার করা হতো। মূলত যেসব প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানের শেয়ার সহজে কেনাবেচা করা যায় না, তারা নামের শেষে লিমিটেড ব্যবহার করে থাকে। বাংলাদেশে বেশির ভাগ বাণিজ্যিক ব্যাংকের শেয়ার স্টক একচেঞ্জে কেনাবেচা হওয়ায় লিমিটেড শব্দের ব্যবহার এখানে ভুল। তাই সহজে পুঁজিবাজারে যেসব ব্যাংকের শেয়ার আছে, তা বেসরকারি হলেও নামের শেষে পিএলসি যোগ হচ্ছে।
এছাড়া কোম্পানি আইন ১৯৯৪-এ সন্নিবেশিত ১১ক (ক) ধারার বিধান অনুসারে, বাংলাদেশে নিবন্ধিত সীমিতদায় পাবলিক ব্যাংক-কোম্পানির নামের শেষে ‘পাবলিক সীমিতদায় কোম্পানি’ বা পিএলসি শব্দটি যোগ করার বিধান রয়েছে।
নাম পরিবর্তনের জন্য ব্যাংক-কোম্পানিগুলোর নামের শেষে ‘পাবলিক সীমিতদায় কোম্পানি’ বা ‘পিএলসি’ যোগ করার আনুষ্ঠানিকতা সম্পাদনের ক্ষেত্রে ব্যাংক-কোম্পানি আইন, ১৯৯১-এর যথাক্রমে ১১৬ ও ১১৭ ধারার আওতায় ব্যাংক-কোম্পানিগুলোকে বাংলাদেশ ব্যাংক বরাবর আলাদাভাবে আবেদন দাখিলের প্রয়োজন হবে না বলেও জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
তবে নাম পরিবর্তনের আনুষ্ঠানিকতা সম্পাদন করার পর বিষয়টি অবগতিসহ পরিবর্তিত নামের গেজেট প্রকাশের জন্য ব্যাংক-কোম্পানিগুলোকে বিআরপিডি বিভাগে আবেদন দাখিল করতে হবে।
এদিকে নাম পরিবর্তন নিয়ে অবগত নন সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোর গ্রাহকরা। এরকম একটি বেসরকারি ব্যাংকের গ্রাহক মোস্তফা মিন্টু বলেন, ‘যে ব্যাংকে তার অ্যাকাউন্ট রয়েছে, কয়েকদিন আগে সেটির নাম পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু এ ব্যাপারে খুদেবার্তা বা অন্য কোনো মাধ্যমে তাকে অবগত করা হয়নি। সংবাদপত্রের মাধ্যমে ও বিলবোর্ড দেখে জানতে পেরেছেন তার ব্যাংকের নাম পরিবর্তন হয়েছে।’
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, বড় রকমের একটি কর্মযজ্ঞের মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে তাদের। নাম পরিবর্তনের কারণে শুধু বিলবোর্ড না, ব্যাংকের নানা ধরনের নথি ও চেকবইতে পর্যন্ত পরিবর্তন আনতে হচ্ছে।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply