সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫, ০৭:১৭ পূর্বাহ্ন

হবিগঞ্জ হাওর অঞ্চলে শ্রমিক সংকটে ব্যাহত বোরো ধান কাটা

লিটন পাঠান
  • আপডেট : মঙ্গলবার, ২ মে, ২০২৩

হবিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি: হবিগঞ্জ জেলার হাওর গুলোতে এখন বোরো ধান কাটার ভর মৌসুম বৈশাখের শুরুতে ধান কাটা শুরু হলেও এখন বিস্তৃর্ণ হাওর জুড়ে দোল খাচ্ছে পাকা ধান। তবে শ্রমিক সংকটের কারণে ‘ব্যাহত’ হচ্ছে ধান কাটা। ফলে সময় মতো কৃষকের স্বপ্নের ধান গোলায় তোলা নিয়ে দেখা দিয়েছে দুশ্চিন্তা। এছাড়াও নামে মাত্র যেসকল শ্রমিক ধান কাটছেন তারাও মুজুরি নিচ্ছেন অতিরিক্ত। যে কারণে চরম বিপাকে পড়েছেন কৃষকেরা। যদিও হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসন বলছে, হাওরে ধান কাটার শ্রমিকের কোন সংকট নেই। যদি এমন কোন কৃষক থাকেন শ্রমিক পাচ্ছেন না তা হলে জেলা প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করার জন্য বলা হয়। হবিগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেয়া তথ্যমতে, এবার জেলায় ১ লাখ ২২ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আবাদ হয়েছে বানিয়াচং উপজেলায়।

একই সাথে জেলার ভাটি অঞ্চল হিসেবেখ্যাত আজমিরীগঞ্জ ও লাখাই উপজেলায়ও ব্যাপক বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। ব্রি-২৮ ও ব্রি-২৯ জাতের ধান চিটায় নষ্ট হয়ে গেলেও জেলায় অন্যান্য জাতের ধানের বাম্পার ফল হয়েছে। তবে এবার সেই ধান গোলায় তোলা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে শ্রমিকের মধ্যে। জেলার বাহির থেকে পর্যাপ্ত পরিমান শ্রমিক না আসায় এই সংকট আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। আর যে সকল দেশীয় শ্রমিক ধান কাটছেন তারাও নিচ্ছেন অতিরিক্ত মুজুরি। সরেজমিনে বানিয়াচং উপজেলার মুরাদপুর গ্রামের হাওর ঘুরে দেখা যায়, বিস্তৃর্ণ মাঠ জুড়ে এখন দোল খাচ্ছে কৃষকের স্বপ্নের সোনালী ধান। অধিকাংশ জমিতে ধান পেকে গেলেও শ্রমিক সংকটের কারণে কাটতে পারছেন না কৃষকেরা। আবার যেসকল জমিতে ধান কাটা হচ্ছে সেইসকল জমিতেও নেই পর্যাপ্ত পরিমান শ্রমিক। ফলে সময় মতো ধান গোলায় তোলা নিয়ে এক ধরণের শঙ্কা কাজ করছে কৃষকদের মাঝে। কৃষকরা বলছেন।

এবার আগাম বন্যায় ধান তলিয়ে যাওয়ার শঙ্কা না থাকলেও ঝড়ো হাওয়ার সাথে যদি শিলাবৃষ্টি হয় তা হলে ধানের বড় ধরণের ক্ষতি হতে পারে। আর এতে জমির পাকা ধান ঝড়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে। এছাড়াও যেসকল কৃষক ধান কেটে বাড়ি নিয়ে গেছেন তাদেরকে আনন্দের সাথে বৈশাখী কাজে ব্যস্ত থাকতে দেখা গেছে।

কৃষক আব্দুল হান্নান বলেন, আরো এক সপ্তাহ আগেই আমার জমির ধান পেকে গেছে। কিন্তু শ্রমিক না পাওয়ায় ধান কাটতে পারছি না। প্রতিদিনই শ্রমিকদের কাছে ধান কাটার জন্য আসা যাওয়া করছি। কিন্তু তাদের সিরিয়ালই পাচ্ছি না। তিনি বলেন, জেলার বাহির থেকে এবার পর্যাপ্ত পরিমান শ্রমিক আমাদের এলাকায় আসেনি। যে কারণে এই সংকট বেড়েছে। এখন জমিতে পাকা ধান গোলায় তোলা নিয়ে আমি সংশয়ে আছি। কৃষক ছানাউর রহমান বলেন, একদিকে ব্রি-২৮ জাতের ধান জমিতেই নষ্ট হয়ে গেছে অন্যদিকে অন্যজাতের ধান পেকে গেলেও কাটার জন্য শ্রমিক পাচ্ছি না।

১ মন ধান দিয়েও এখন একজন শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না এছাড়াও প্রতি ক্ষের জমি নগদ ৩ থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা দিয়ে কাটতে হচ্ছে আমাদের। শাহ রামিম বলেন, উচু স্থানের জমিগুলোতে হারভেস্টারের মাধ্যমে ধান কাটা গেলেও নিচু এলাকার জমির ধান শ্রমিক দিয়ে কাটতে হচ্ছে। কিন্তু শ্রমিকরা আমাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত মুজুরি নিচ্ছেন। শ্রমিক সংকট থাকায় আমাদের বাধ্য হয়ে বেশি টাকা দিয়ে ধান কাটাতে হচ্ছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান বলেন, হাওরে শ্রমিকের কোন সংকট নেই। তবে কিছুটা মজিুরি হয়তো বেড়েছে। যদি সেরকম কিছু থাকে তা হলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করলে আমরা তাদেরকে সহযোগীতা করব।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS