সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫, ০৭:১৩ পূর্বাহ্ন

হবিগঞ্জে কাপড়ের দোকান গুলোতে বঙ্গবাজারে আগুণের প্রভাব পড়েছে

লিটন পাঠান
  • আপডেট : রবিবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৩

হবিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি: হবিগঞ্জের বিভিন্ন কাপড়ের দোকান গুলোতে ছড়া ও উচ্চ মূল্যে বিক্রি করা হচ্ছে কাপড়। এতে বিপাকে পড়েছে মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষরা। ক্রয় মূল্যে চেয়ে কয়েক গুন বেশি মূল্য নির্ধারণ করে রাখা হয় কাপড়ের গায়ে। একই অবস্থা জেলার অন্যান্য উপজেলা গুলোতেও। হবিগঞ্জ শহরের বাজার ও বিপনী বিতান গুলো ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র। এ অবস্থায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা প্রয়োজন বলে দাবী জানিয়েছেন ক্রেতা সাধারণ।

পবিত্র ঈদুল ফিতর এর এখনও বাকি আরো ১০ দিন। এরই মাঝে মার্কেট, শপিংমল ও বিপনী বিতান গুলোতে ক্রেতাদের আনাগোনা বেড়েছে। অনেকেই ঈদের কেনাকাটা শুরু করেছেন। অফিস-কিংবা বাড়ির কাজের কারণে দিনের বেলা কম হলেও সন্ধ্যার পরপরই ক্রেতাদের উপস্থিতি বাড়তে থাকে।

কেনা কাটা চলে মধ্য রাত্র পর্যন্ত। তবে ঢাকার বঙ্গবাজার পাইকারী মার্কেটে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে সব কিছু পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়ায় এর প্রভাব পড়েছে হবিগঞ্জে। বঙ্গবাজারে অগ্নিকান্ডকে পুজি করে অনেক অসাধু কাপড় ব্যবসায়ী লেভেল পাল্টিয়ে নতুন লেভেল স্থাপন করেছে কাপড়ের গায়ে। এতে মুহুর্তেই কাপড়ের দাম বাড়িয়ে দেয়া হয়। অনেকে ক্রয় ভাউচারেও কারসাজি করেছেন ভ্রাম্যমান আদালতের ভয়ে। হবিগঞ্জ শহরের ঘাটিয়া বাজার, রামকৃষ্ণ মিশন রোড, তিনকোণা পুকুর পাড়, খাজা গার্ডেন সিটি, রওশন রেজা এমপায়ার, টাউন হল রোড এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, ক্রেতাদের চাহিদা মূলত গজ কাপড়, রেডি-আনরেডি থ্রিপিস, শার্ট ও পাঞ্জাবিতে। এই চারটির পাশাপাশি শাড়ি, লেহেঙ্গা ও গাউনসহ অন্যান্য পোশাকও বিক্রি হচ্ছে দেদারছে।

দোকান গুলোও গ্রাহকদের আকৃষ্ট করতে সারিসারিভাবে সাজিয়ে রেখেছে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রকার পণ্য। বিক্রেতারা হাজার টাকা মূল্যের কাপড়ে ১ হাজার থেকে ১৫০০ টাকা মুনাফা করছেন। অর্থাৎ ক্রেতারা কয়েক দিন আগেও যে পোশাক ১ হাজার থেকে ১৫০০ টাকায় ক্রয় করেছেন বর্তমানে সেটা বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকায়। এতে বিপাকে পড়েছে মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষরা। ক্রেতা খলিলুর রহমান সোহেল জানান, ঈদকে সামনে রেখে ক্রেতাদের পকেট কাটছে ব্যবসায়ীরা। পোশাকে শতকরা ১০০ থেকে ২০০ শতাংশ দাম বেশি রাখছেন বিক্রেতার। কিছু কিছু শিশুদের পণ্যের দাম বেড়েছে তিনগুণ। ঘাটিয়া বাজারে স্বামীকে নিয়ে কেনাকাটা করতে আসা এক গৃহবধূ বলেন, দোকান গুলোতে দম ফেলার জায়গা পাওয়া যায় না।

কিন্তু দাম শুনে অবাক হয়ে যাই ১ হাজার টাকার থ্রিপিস ক্রয় করতে হচ্ছে ৩ হাজার টাকায়। মহাপ্রভু আখড়া রোডের এক লুঙ্গি বিক্রেতা বলেন, এবার ঈদ উপলক্ষ্যে ৫০০ থেকে ১৫০০ টাকার লুঙ্গি আমি দোকানে এনেছি। কিন্তু বিকিকিনি কম, দামও বেশি। এবার লুঙ্গি প্রতি দাম বেড়েছে ২০০ থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত। একজন ব্যবসায়ী জানান, ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে একদিকে ডলারের দাম বেড়েছে। এতে করে গত বছরের তুলনায় ডলার প্রতি ২০-২৫ টাকা বেশি খরচ হচ্ছে। এছাড়া গ্যাস ও বিদ্যুৎ সহ উৎপাদন খরচ বেড়েছে। তা ছাড়া বঙ্গ বাজার পাইকারী মার্কেটে আগুন লেগে কয়েক কোটি টাকার কাপড় পুড়ে যাওয়ায় আমাদেরকে অন্য জায়গা থেকে ক্রয় করে আনতে হচ্ছে। তাই পণ্যের দাম বেশী পড়ছে। এ কারণে আমাদের বেশী দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।

হবিগঞ্জ মার্চেন্ট এসোসিয়েশনের প্রচার সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম তৌহিদ জানান, বর্তমান বাজারে কাপড়, জুতা, বিশেষ করে ছোট শিশুদের জামা বিগত বছর গুলোর তুলনায় অনেক বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে। যা সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাহিরে। এ জন্য তিনি বর্তমান বৈশ্বিক ব্যবস্থাকে দায়ী করেন। ক্রেতা মাহমুদ আলী বলেন, করোনা, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ, ডলার সংকট আসলে কোন কিছুই মূল্য বাড়ার পিছনে দায়ী না। ব্যবসায়ীরা নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য বিভিন্ন প্রকার সিন্ডিকেট করে বাজারে জিনিস পত্রের দাম বাড়ায়। প্রকৃত পক্ষে সকল পন্যের মূল্যে বাড়ার পিছনে নৈতিকতার অবক্ষয় ও ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট দায়ী এমতা বস্থায় বাজারের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রাখতে নিময়তি ভোক্তা অধিকার অভিযান ও ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করার দাবী জানান ক্রেতা সাধারণ।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS