নিজস্ব প্রতিবেদকঃ শনিবার হিজরী ক্যালেন্ডার বাস্তবায়ন পরিষদ ও মুসলিম উম্মাহ বাংলাদেশ এর যৌথ আয়োজনে জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে কুরআন-সুন্নাহ্ এবং জ্যোতির্বিজ্ঞান ও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে উলামা-মাসাইখসহ OIC এর সর্বোচ্চ ফিক্হ একাডেমি কর্তৃক গৃহীত সিদ্ধান্ত মোতাবেক বিশ্বব্যাপী অভিন্ন হিজরী তারিখ অন্যান্য মুসলিম দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও বাস্তবায়নের দাবিতে জাতীয় সেমিনার ২০২৩ এবং ইসলাম কি বলে’ বই এর মোড়ক উম্মোচন অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। অধ্যক্ষ সাইয়্যেদ কামাল উদ্দীন আব্দুল্লাহ জাফরী, প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. এম শমশের আলী, সভাপতি হিজরী ক্যালেন্ডার বাস্তবায়ন পরিষদ বাংলাদেশ। উক্ত সেমিনারে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ এনামুল হক, লেখক ও গবেষক, সাবেক মহা-পরিচালক টেলিযোগাযোগ স্টাফ কলেজ ও মহা-সচিব হিজরী ক্যালেন্ডার বাস্তবায়ন পরিষদ বাংলাদেশ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন মুফতি সাইয়েদ আবদুছ ছালাম, সভাপতি মুসলিম উম্মাহ্ বাংলাদেশ।
সেমিনারের মূল বক্তব্যে ইঞ্জিঃ মোঃ এনামুল হক বলেন, বাংলাদেশে বহুল প্রচলিত প্রবাদ ‘চাঁদ দেখে রোজা রাখ, চাঁদ দেখে ঈদ কর’ কথাটি সঠিক নয়। হাদিসে নতুন চাঁদ দেখে রোজা / ঈদ পালনের কথা বলা আছে। আশ্চর্যজনক হলেও সত্য যে, বাংলাদেশ পুরাতন চাঁদ দেখেই রোজা / ঈদ পালন করে থাকে। কারন বংলাদেশ পূর্ব গোলার্ধে অবস্থিত বিধায় কোন দিনই তার আকাশ সীমার মধ্যে পুরাতন চাঁদ ছাড়া নতুন চাঁদ দেখতে পাবে না। পৃথিবীতে বর্তমানে ৩টি সর্বাধিক অনুসরণীয় হিজরী ক্যালেন্ডার আছে। এই ৩টি ক্যালেন্ডারে ২০৭৫ সাল পর্যন্ত রোজা/ ঈদ এর তারিখে কোন পার্থক্য তিনি খুঁজে পাননি। তাই বাংলাদেশে উম্ম-আলকুরা (UQ) হিজরী ক্যালেন্ডার অনুসরণ করে রোজা/ ঈদ পালন করা উচিত হবে বলে তিনি মনে করেন। তিনি আরও বলেন যে, UQ এ্যাপ ডাউনলোড করে মোবাইলে তারিখ ইনস্টল করে নিলে ইংরেজী তারিখের পাশাপাশি হিজরী তারিখও পাওয়া যাবে। উক্ত আধুনিক প্রযুক্তি ব্যাবহার করলে নতুন চাঁদ দেখা এমনকি হিজরী ক্যালেন্ডার দেখারও প্রয়োজন পড়বে না। তিনি বাংলাদেশের জনগনকে সঠিক নিয়মে রোজা/ঈদ পালনে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহনের জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি উদাত্ত আহ্বার জানান।
সেমিনারে প্রধান অতিধি অধ্যক্ষ সাইয়্যেদ কামাল উদ্দীন আব্দুল্লাহ জাফরী বলেন, নতুন চাঁদ দেখার বিষয়টা নিয়ে এ দেশের ওলামা-মাসায়েখদের মধ্যে বিভিন্ন মত বিদ্যমান। তাই প্রথমেই প্রয়োজন কোরআন-সুন্নাহ এবং জ্যাতির্বিজ্ঞান ও আধুনিক প্রযুক্তির উপর আস্থা স্থাপন করে এর সঠিক ব্যাখ্যা সকল নাগরিকের কাছে ছড়িয়ে দেয়া। কারন এই দেশের মুসলিম নাগরিকগন কোরআন-সুন্নাহর সঠিক ব্যাখ্যার জন্য ওলামা-মাসায়েখদের উপরই নির্ভরশীল এবং রোজা/ইন পালনের ক্ষেত্রে ইসলামিক ফাউন্ডেশন তথা সরকারের ঘোষনাকেই প্রধান্য দেয়। তাই ওলামা মাসায়েখদের উচিত সবাইকে এ বিষয়ে সচেতন করা এবং একই তারিখে ও বারে রোজা / ঈদ পালনে উদ্বুদ্ধ করা। বর্তমানে এটাই শরিয়তের বিধান হিসেবে বিশ্বব্যাপি স্বীকৃত। এই সেমিনারে উপস্থিত অন্যান্য ওলামা মাসায়েখগন উক্ত বিষয়ের উপর গুরুত্ব প্রদান করে বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানের সভাপতি বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. এম শমশের আলী অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাইকে তাদের উপস্থিতি ও সক্রিয় অংশগ্রহনের জন্য ধন্যবাদ আপন করে বলেন, জ্যোতির্বিজ্ঞানের হিসেবের সাহায্যে বলে দেয়া যায় সূর্যাস্থের পর কখন এবং কোথায় প্রথম চন্দ্র অন্ত যাবে এবং উদিত হবে। জ্যোতির্বিজ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে সৌর ক্যালেন্ডারের মত চন্দ্র ক্যালেন্ডারও নিখুঁতভাবে তৈরী করা হয়েছে। বর্তমানে চন্দ্রপণ্ডিকা আনুসরণ করে বিশ্বের প্রায় ৯০% দেশ একই তারিখে ও বারে রোজা/জন পালন করে যাচ্ছে। তাই বিজ্ঞানের এই যুগে স্কুলের মধ্যে ডুবে না থেকে সরকারের উচিত সুনন্দিন উম্মার অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে হিজরী ক্যালেন্ডারের ভিত্তিতে একই তারিখে ও বারে রোজা পালনের ব্যাবস্থা করা।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply