রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালামাল পরিবহনের জন্য নির্মিত রেলপথসহ রেলওয়ের তিন প্রকল্পের আওতায় নির্মাণ হওয়া ৬৯ দশমিক ২০ কিলোমিটার রেলপথ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে দেশের ৩টি রেলপথ উদ্বোধন করার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর।
এর আগে ঈশ্বরদীর পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের প্রধান প্রকৌশলী পরিচালক মো. আসাদুল হক জানান, পাবনার ঈশ্বরদী বাইপাস টেক অব পয়েন্ট থেকে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র পর্যন্ত ২৬ দশমিক পাঁচ দুই কিলোমিটারের নির্মিত এ রেলপথ নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৩৬ কোটি টাকা। স্টেশন চালু হওয়ার পর সরাসরি দেশ-বিদেশ থেকে পণ্যবাহী ট্রেনে মালামাল পরিবহন সহজ হবে। ভারতের জিপিটি ও বাংলাদেশের এসইএল এবং সিসিএল অংশীদারত্বের ভিত্তিতে রেলপথটি নির্মাণ করা হয়েছে।
মো. আসাদুল হক আরও জানান, রেলপথটি নির্মাণের ফলে এ অঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্যে আসবে আমূল পরিবর্তন। খুলে যাবে এ অঞ্চলের সম্ভাবনার এক নতুন দুয়ার।
পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের বিভাগীয় প্রকৌশলী-২ বীরবল মণ্ডল জানান, রূপপুর স্টেশন উদ্বোধনের পর দেশের বৈদেশিক বাণিজ্যে এক নতুনমাত্রা যোগ হলো। ঈশ্বরদী-রূপপুর এলাকায় পণ্যবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হলে এ অঞ্চল তথা উত্তরের জনপদে ব্যবসা-বাণিজ্যে আমূল পরিবর্তন আসবে। স্বল্প সময়ে ও অল্প খরচে এ অঞ্চলের মানুষ পণ্যবাহী ট্রেনের মাধ্যমে সহজে মালপত্র পরিবহন করতে পারবে। বাড়বে রেলওয়ের রাজস্ব।
২০১৮ সালের ১ এপ্রিল এ রেললাইন নির্মাণ কাজ শুরু হয়। এ প্রকল্পে ১৩টি লেভেল ক্রসিং গেট, ‘বি’ শ্রেণির একটি সুদৃশ্য স্টেশন ভবন, একটি প্লাটফর্ম, সাতটি বক্স কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
রূপপুর রেলস্টেশন: পাবনার ঈশ্বরদীতে রূপপুর রেলস্টেশনটি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে মালপত্র ও যন্ত্রপাতি আনার সুবিধার্থে নির্মাণ করা হয়েছে। স্টেশনটি চালু করতে ৩৩৫ কোটি ৬৮ লাখ টাকায় ২৬ কিলোমিটার নতুন রেললাইন নির্মাণ করা হয়েছে। ব্রিটিশ আমলে নির্মিত লাইনটিতে ট্রেন চলাচল প্রায় ৩৫ বছর ধরে বন্ধ ছিল।
ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথ: ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথকে ডাবল লাইনে উন্নীত করতে আখাউড়া-লাকসাম সেকশনে ৭২ কিলোমিটার ডুয়েলগেজ ডাবল লাইন করা হচ্ছে। ৬ হাজার ৫০৪ কোটি টাকার এই প্রকল্পের কাজ ৯ বছরেও সম্পন্ন হয়নি। এই রুটের কসবা থেকে মন্দবাগ এবং শশীদল থেকে রাজাপুর পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার ডুয়েলগেজ ডাবল লাইনে ট্রেন চলাচলের উদ্বোধন করেন শেখ হাসিনা।
এর আগে এই লাইনের লাকসাম থেকে কুমিল্লা পর্যন্ত ২৩ কিলোমিটার ডাবল লাইন গত সেপ্টেম্বরে ট্রেন চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়। বাকি ৩৪ কিলোমিটারের কাজ আগামী জুনে শেষ করার কথা থাকলেও প্রকল্পের মেয়াদ এক বছর বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের বাধাও রয়েছে। তবে রেলের মহাপরিচালক জানিয়েছেন, এখন কাজ চলছে।
ঢাকা থেকে টঙ্গী: ঢাকা থেকে টঙ্গী পর্যন্ত তৃতীয় ও চতুর্থ ডুয়েলগেজ নির্মাণ চলছে। এ প্রকল্পের আওতায় নির্মাণ করা হচ্ছে টঙ্গী থেকে জয়দেবপুর পর্যন্ত দ্বিতীয় ডুয়েলগেজ রেললাইন। ১২ কিলোমিটার দীর্ঘ টঙ্গী-জয়দেবপুর অংশে নির্মিত দ্বিতীয় লাইনে ট্রেন চলাচলের উদ্বোধন করেন সরকারপ্রধান। ভারতীয় ঋণে ১ হাজার ১০৬ কোটি টাকার এই প্রকল্পের সব কাজ শেষ হতে আরও বছরখানেক লাগবে। টঙ্গী-জয়দেবপুর সেকশনে দ্বিতীয় লাইন চালুর ফলে ১৫ থেকে ২০ মিনিট সময় সাশ্রয় হবে বলে রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply