করোনার মধ্যে দেশের বেশকিছু বেসরকারি ব্যাংক কর্মী ছাঁটাই করে। একই সময়ে ব্যাংকগুলোর অনেক কর্মকর্তাকে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়। তখন খরচ কমানোর অজুহাত দেখায় এসব প্রতিষ্ঠানগুলো। ওই সময় চাকরিচ্যুত বা পদত্যাগে বাধ্য হওয়া ব্যাংক কর্মীদের চাকরিতে পুনর্বহাল ও কর্মী ছাঁটাই বন্ধের নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এরপরে এক বছর তিন মাস পার হলেও নির্দেশনাটি বাস্তবায়ন হয়নি। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা সত্ত্বেও কেন চাকরিতে পুনর্বহাল বা নিয়োগ দেওয়া হবে না এ বিষয়ে জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত।
জানা যায়, আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা মানেনি দেশের বেসরকারি খাতের ১১ ব্যাংক। ব্যাংকগুলো হলো- সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, এবি ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, যমুনা ব্যাংক এবং ইউনিয়ন ব্যাংক। ব্যাংকগুলোর এমন কর্মকান্ডে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন ছাঁটাই হওয়া ব্যাংক কর্মকর্তারা।
এদিকে মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) বিচারপতি জাফর আহমেদ এবং মো. বশির উল্লাহ সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ একটি রুল জারি করেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের (বিআরপিডি সার্কুলার-২১) নির্দেশনা সত্ত্বেও কেন চাকরিতে পুনর্বহাল বা নিয়োগ দেওয়া হবে না এ বিষয়ে জানতে চেয়ে রুলটি জারি করা হয়। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে ১১ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে (এমডি) এ বিষয়ে আদালতে জানাতে বলা হয়েছে।
সূত্র জানায়, ছাঁটাই হওয়া ব্যাংকারদের পক্ষে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের এসএভিপি পদ থেকে পদত্যাগে বাধ্য হওয়া মাহবুব আলমের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই রুল জারি করা হয়। রুলে উল্লেখিত ব্যাংকগুলোর পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ও বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি অ্যান্ড কাস্টমার সার্ভিসেস ডিপার্টমেন্টকে (এফআইসিএসডি) রুলের বিষয় জানাতে বলা হয়েছে।
রুলে বলা হয়, করোনার সময়ে ছাঁটাই করা ব্যাংক কর্মীদের পুনর্বহাল বা নিয়োগ দিতে বাংলাদেশ ব্যাংক যে সার্কুলার জারি করেছে তা বাস্তবায়নের জন্য কেন কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে না।
এর আগে ব্যাংকারদের অভিযোগের ভিত্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংক বেসরকারি খাতের ৬টি ব্যাংকে কর্মী ছাঁটাইয়ের বিষয়ে বিশেষ পরিদর্শন করে। ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের আগস্টের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত ওই ব্যাংকগুলোর মোট ৩ হাজার ৩১৩ জন কর্মকর্তা ‘স্বেচ্ছায়’ চাকরি ছেড়েছেন। এর মধ্যে বয়স থাকার পরও স্বেচ্ছায় পদত্যাগ দেখানো হয়েছে ৩ হাজার ৭০ জনকে। এছাড়া ২০১ জনকে অপসারণ, ৩০ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত ও ১২ কর্মকর্তাকে ছাঁটাই করার তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শনে উঠে আসে।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS