কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সশস্ত্র সন্ত্রাসী দল আল-ইয়াকিন সদস্যদের গুলিতে তাসফিয়া (৮) নামে এক শিশু নিহত হয়েছে। এ সময় নিহত কিশোরীর ভাবি দিল কায়াছ (১৮) গুলিবিদ্ধ হন। পরে গুলিবিদ্ধ কায়াছকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) ভোরে বালুখালী ১৮ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ব্লক এইচ-৫২-তে এই ঘটনা ঘটে। তাসফিয়া ওই রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য মো. ইয়াছিনের মেয়ে। আর গুলিবিদ্ধ নারী দিল কায়াছের স্বামীর নাম মোহাম্মদ নূর। আল-ইয়াকিন সদস্যরা মোহাম্মদ নূরকে না পেয়ে তার স্ত্রী ও কিশোরীকে গুলি করে বলে জানা গেছে।
উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী জানিয়েছেন, সোমবার রাতে আল-ইয়াকিন সন্ত্রাসীরা গুলি করে ১১ বছরের এক কিশোরীকে হত্যা করেছে। নিহত কিশোরীর নাম তাসদিয়া আকতার। সে ১৮ নম্বর শিবিরের এইচ ৫২ নম্বর ব্লকের মোহাম্মদ ইয়াছিনের কন্যা। এ সময় আরও গুলিবিদ্ধ হয় নিহত কিশোরীর ভাবি দিল কায়াছ (১৮)। তার স্বামীর নাম মোহাম্মদ নূর। গুলিবিদ্ধ নারী দিল কায়াছকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আল-ইয়াকিন সদস্যরা মোহাম্মদ নূরকে না পেয়ে তার স্ত্রী ও কিশোরীকে গুলি করে।
রোহিঙ্গারা জানান, রোহিঙ্গা নেতা মুহিব উল্লাহ হত্যার পর থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান চালিয়ে আল-ইয়াকিন গ্রুপের অনেকজন সদস্যকে আটক করেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের যারা আল-ইয়াকিনের তথ্য দিয়েছেন, সেসব রোহিঙ্গাকে ধরে ধরে হত্যা করেছে আল-ইয়াকিন। কয়েকদিন আগে বালুখালী শিবিরের মোহাম্মদ হাশিম নামের এক তরুণ রোহিঙ্গা হাতে পিস্তল নিয়ে নিজেই শিবিরের চারজন মাঝিকে হত্যার কথা স্বীকার করে এক ভিডিওবার্তা প্রকাশ করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রোহিঙ্গা জানান, আল-ইয়াকিন সদস্যরা এতদিন ঘাপটে মেরে ছিল। রোহিঙ্গা শিবিরের আইনশৃঙ্খলার দায়িত্বে থাকা আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ানের (এপিবিএন) এক কর্মকর্তা আল-ইয়াকিনকে দমাতে মরিয়া হয়ে অভিযান চালিয়েছিলেন। এই কর্মকর্তা ছিলেন আল-ইয়াকিনের কাছে এক আতঙ্ক। কিছুদিন আগে তিনি অন্যত্র বদলি হয়েছেন। এরপর আল-ইয়াকিন সন্ত্রাসীরা আবারো নির্ভয়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শুরু করেছে।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ২২ অক্টোবর রাতে উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পের দারুল উলুম নদওয়াতুল উলামা আল-ইসলামিয়া মাদ্রাসায় ছয় জনকে হত্যার ঘটনা ঘটে। তার আগে ৯ সেপ্টেম্বর রাত ৮টা ৪০ মিনিটে কুতুপালং ক্যাম্পে নিজ কার্যালয়ে গুলি করে হত্যা করা হয় আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের চেয়ারম্যান মুহিবুল্লাহকে। এদিকে গত বছর সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত রোহিঙ্গা নেতা মুহিব উল্লাহর বিচার শুরুর সাথে সাথেই আল-ইয়াকিন গ্রুপের দাপটে শিবিরের সাধারণ রোহিঙ্গারা অসহায় হয়ে পড়েছে। মুহিব উল্লাহ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ২৯ জন আল-ইয়াকিন সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অভিযোগের ভিত্তিতে কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালতে বিচার কাজ চলছে।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply