দেশের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার কারণে স্থগিত হয়ে যাওয়া ২০২২ সালের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমানের পরীক্ষা আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
রোববার (১৭ জুলাই) মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা সংক্রান্ত এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা জানান।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, সিলেটে বন্যার কারণে দক্ষিণাঞ্চলেও বন্যা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সেকারণে আগস্ট মাসকে বাদ দিয়ে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে আমরা পরীক্ষা শুরু করতে যাচ্ছি। কারণ আগস্টে বন্যা হলেও সেপ্টেম্বরের ৮-১০ তারিখ পর্যন্ত… আমাদের অতীত অভিজ্ঞতা বলে যে, সেই পর্যন্ত চলে। সে কারণে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আমরা আশা করছি, আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে এসএসসি, দাখিল ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হবে। শিক্ষা বোর্ডগুলো পরীক্ষার রুটিন প্রকাশ করবে।
তিনি আরও জানান, এইচএসসি পরীক্ষা আগামী নভেম্বর মাসে নেওয়া হবে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের আগামী ২৪ জুলাইয়ের মধ্যে বই দেওয়া হবে।
মহামারির কারণে পিছিয়ে যাওয়া এসএসসি ও সমমানের লিখিত পরীক্ষা এবার ১৯ জুন শুরু করে ৬ জুলাই শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু জুনের মাঝামাঝি সময়ে প্রবল বর্ষণ আর উজানের ঢলে সিলেট অঞ্চল এবং উত্তরের কয়েকটি জেলায় ব্যাপক বন্যা দেখা দিলে সরকার ১৭ জুন পরীক্ষা স্থগিতের ঘোষণা দেয়।
চলতি বছর এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় বসবে সারাদেশের ২৯ হাজার ৫৯১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ২০ লাখ ২১ হাজার ৮৬৮ জন শিক্ষার্থী। গত বছর তুলনায় এ বছর ৫৫৬টি বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী পরীক্ষায় বসবে। তাদের মধ্যে ছাত্র ১০ লাখ নয় হাজার ৫১১ জন আর ছাত্রী ১০ লাখ ১২ হাজার ৩৫৭ জন। এর মধ্যে নয়টি সাধারণ শিক্ষাবোর্ড থেকে ১৭ হাজার ৬৮০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১৫ লাখ ৯৯ হাজার ৭১১ জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষা দেবে। দাখিলে অংশগ্রহণ করবে নয় হাজার ৯৩টি প্রতিষ্ঠানের দুই লাখ ৬৮ হাজার ৪৯৫ জন শিক্ষার্থী।
এসএসসি ভোকেশনালে পরীক্ষায় বসবে ৮২৮টি প্রতিষ্ঠানের এক লাখ ৫৩ হাজার ৬৬২ জন শিক্ষার্থী। এ বছর মোট পরীক্ষা কেন্দ্রের সংখ্যা তিন হাজার ৭৯০টি। যা গতবারের তুলনায় ১১১টি বেশি।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, এ বছর দেশের নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের মধ্যে ঢাকা বোর্ড থেকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে তিন লাখ ৯৪ হাজার ৯৯৮ জন শিক্ষার্থী, রাজশাহী বোর্ড থেকে এক লাখ ৯৬ হাজার ৬০০ জন শিক্ষার্থী, কুমিল্লা বোর্ড থেকে এক লাখ ৮৮ হাজার ৭১৪ জন শিক্ষার্থী, যশোর বোর্ড থেকে এক লাখ ৭০ হাজার ৩৭৭ জন শিক্ষার্থী, চট্টগ্রাম বোর্ড থেকে এক লাখ ৪৯ হাজার ৭১০ জন শিক্ষার্থী, বরিশাল বোর্ড থেকে ৯৫ হাজার ৯৭৬ জন শিক্ষার্থী, সিলেট বোর্ড থেকে এক লাখ ১৬ হাজার ৪২৭ জন শিক্ষার্থী, দিনাজপুর বোর্ড থেকে এক লাখ ৭৩ হাজার ৯৬১ জন শিক্ষার্থী আর ময়মনসিংহ বোর্ড থেকে এক লাখ ১২ হাজার ৯৪৮ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে।
এই নয়টি সাধারণ শিক্ষাবোর্ডের ১৫ লাখ ৯৯ হাজার ৭১১ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগের পাঁচ লাখ আট হাজার ২৩৬ জন, মানবিক বিভাগের সাত লাখ ৯০ হাজার ৯১ জন আর ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের তিন লাখ এক হাজার ৩৮৪ জন।
বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, গত বছরের তুলনায় এ বছর বিজ্ঞান বিভাগে পরীক্ষার্থী বেড়েছে এক হাজার ৪০৫ জন। গত বছর এই বিভাগে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল পাঁচ লাখ ছয় হাজার ৮৩১ জন।
এছাড়াও বিদেশের আটটি কেন্দ্র থেকে পরীক্ষায় বসবে ৩৬৭ জন শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে জেদ্দা থেকে ৭০ জন, রিয়াদ থেকে ৪৮ জন, ত্রিপলী থেকে চারজন, দোহা থেকে ৬৮ জন, আবুধাবি থেকে ৫৯ জন, দুবাই থেকে ৩১ জন, বাহরাইন থেকে ৫৩ জন, ওমানের সাহাম থেকে ৩৪ জন।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply