মঙ্গলবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:২৯ অপরাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদ
এবার মধ্যরাতে ভূমিকম্পে কাঁপল কক্সবাজার ও পার্শ্ববর্তী পার্বত্য চট্টগ্রাম এবং চট্টগ্রাম শহর টানা ঝড়, প্রবল বর্ষণ ও ধারাবাহিক ভূমিধসে এশিয়ার চার দেশে কয়েক সপ্তাহে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১১৪০ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে কর্মক্ষমতা হারানো জুলাই যোদ্ধাদের জন্য ফ্ল্যাট নির্মাণ করবে সরকার বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় সাঘাটায় বিএনপির দোয়া মাহফিল এলপিজি ও অটোগ্যাসের নতুন মূল্য নির্ধারণ করা হবে মঙ্গলবার: বিইআরসি দুদকের সাবেক চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু দুদকের ৯টি ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান অবসায়নের অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক ভৈরবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রোগ মুক্তি কামনায় দোয়া মাহফিল আইএফআইসি ব্যাংকের বিভিন্ন পর্যায়ের ১৩৫ জন কর্মকর্তাকে পদোন্নতি প্রদান ১ জানুয়ারী ২০২৬ খ্রি. হতে Customs Bond Management System ব্যবহার বাধ্যতামূলক করলো জাতীয় রাজস্ব বোর্ড

টানা ঝড়, প্রবল বর্ষণ ও ধারাবাহিক ভূমিধসে এশিয়ার চার দেশে কয়েক সপ্তাহে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১১৪০

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : মঙ্গলবার, ২ ডিসেম্বর, ২০২৫
  • ৩৮ Time View

দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চল টানা ঝড়, প্রবল বর্ষণ ও ধারাবাহিক ভূমিধসে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ায় কয়েক সপ্তাহের এই দুর্যোগে মৃতের সংখ্যা ইতিমধ্যে ১ হাজার ১৪০ জন ছাড়িয়েছে।

নিখোঁজ রয়েছেন বহু মানুষ, আর বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া শত শত এলাকায় এখনও পৌঁছানো যাচ্ছে না—যার ফলে উদ্ধারকাজ ধীর হয়ে পড়েছে।

গতকাল সোমবার উত্তর সুমাত্রায় পৌঁছে ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তো বলেন, সরকারের সবচেয়ে বড় অগ্রাধিকার হলো ‘যত দ্রুত সম্ভব প্রয়োজনীয় সহায়তা পৌঁছে দেওয়া’। তিনি জানান, এখনো বিচ্ছিন্ন বেশ কয়েকটি গ্রামে পৌঁছানো যায়নি, তবে সরকার হেলিকপ্টার ও বিমান পাঠাচ্ছে। দেশজুড়ে বন্যা ও ভূমিধসে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৬০৪ জনের মৃত্যু হয়েছে; নিখোঁজ রয়েছেন আরও ৪৬৪ জন। পরিস্থিতি গুরুতর হওয়ায় প্রাবোওর ওপর জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণার চাপ বাড়ছে।

যদিও তিনি বলেছেন ‘খারাপ সময়টি কেটে গেছে’, তবে আবহাওয়া দপ্তর জাকার্তা ও আশপাশে আরও মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণ, বজ্রঝড় ও ঝোড়ো হাওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে।

সরকার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় সহায়তা পাঠাতে দুইটি হাসপাতাল জাহাজ ও তিনটি যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করেছে। অনেক সড়ক এখনো অচল। দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী টিটো কারনাভিয়ান স্বীকার করেছেন, বিপর্যয়ের মাত্রা মোকাবিলায় সরকার প্রস্তুত ছিল না। পশ্চিম সুমাত্রার রাজধানী পদাং থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরের সুনগাই নিয়ালো গ্রামে গত রোববার পানি নেমে গেলেও ঘরবাড়ি, যানবাহন আর ফসল ঘন কাদায় ঢেকে আছে।

এদিকে শ্রীলঙ্কায় সাইক্লোন ‘ডিটওয়াহ’-র কারণে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসে অন্তত ৩৬৬ জন নিহত এবং ৩৬৭ জন নিখোঁজ হয়েছেন। দেশটি আন্তর্জাতিক সহায়তা চাইছে এবং আটকে পড়াদের উদ্ধারে সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার ব্যবহার করছে।

উত্তর কলম্বোর লুনুভিলায় জরুরি অবতরণের সময় বন্যা–বিধ্বস্ত এলাকায় ত্রাণ মিশনে থাকা এক হেলিকপ্টার পাইলট মারা গেছেন। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মধ্যাঞ্চলের বেশিরভাগ এলাকায় রাস্তা পরিষ্কারের পরই প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতি সামনে আসছে।

প্রেসিডেন্ট অনুরা কুমারা দিশানায়েকে জরুরি অবস্থা জারি করে বলেছেন, ‘এটি আমাদের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক বিপর্যয়’। উদ্ধারকাজে ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও জাপানের দল যোগ দিয়েছে; তবে আরও আন্তর্জাতিক সহায়তার প্রয়োজন রয়েছে।

অন্যদিকে থাইল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চলে বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে কমপক্ষে ১৭৬। ত্রাণ কার্যক্রম চললেও জনমনে ক্ষোভ বাড়ছে। ব্যর্থতার অভিযোগে দুই স্থানীয় কর্মকর্তা বরখাস্ত হয়েছেন।

সেভ দ্য চিলড্রেন জানিয়েছে, ৭৬ হাজার শিশু স্কুলে ফিরতে পারছে না। সঙখলা প্রদেশে ১৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে। সেখানে পরিষেবা ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে। স্থানীয় গণমাধ্যম বলছে, ট্যাপ ওয়াটারের ৮০ শতাংশ সরবরাহ ফিরেছে।

এছাড়া মালয়েশিয়ার পার্লিস প্রদেশে ভারী বর্ষণে সৃষ্ট বন্যায় অন্তত তিন জন নিহত হয়েছেন।

মূলত গত কয়েক সপ্তাহে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো একের পর এক চরম আবহাওয়ার মুখোমুখি হয়েছে। গত নভেম্বরেই ফিলিপাইনে দুই দফা টাইফুনে নিহত হয়েছে কমপক্ষে ২৪২ জন। সুমাত্রায় আঘাত হানা একটি বিরল ট্রপিক্যাল ঝড়ের কারণে ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ায় বন্যা আরও ভয়াবহ আকারণ নিয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ঝড়ের তীব্রতা ও ভারী বর্ষণ দ্রুত বাড়ছে। আন্তর্জাতিক রেড ক্রস–রেড ক্রিসেন্টের এশিয়া-প্যাসিফিক পরিচালক আলেকজান্ডার মেথিও বলেন, দেশগুলোকে এখনই ‘আরও উন্নত পূর্বাভাসব্যবস্থা, নিরাপদ আশ্রয়, প্রকৃতিভিত্তিক সমাধান এবং দুর্যোগ-সামাজিক সুরক্ষা জোরদার’ করতে হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS