ভারতের বিপক্ষে এই প্রজন্ম জয় দেখেনি। ২২ বছরের অপেক্ষা। অবশেষে শেষ হলো। মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে ভারতকে ১-০ গোলে হারিয়েছে বাংলাদেশ। জাতীয় স্টেডিয়ামে প্রথমার্ধে একের পর এক আক্রমণে ভারতকে কোণঠাসা করে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।
ম্যাচের বয়স তখন ১১ মিনিট। মাঝমাঠ থেকে একাই টানলেন রাকিব হোসেন। বামপ্রান্ত থেকে তার ক্ষিপ্র গতির কাছে পরাস্ত হয় ভারতের দুই ডিফেন্ডার। এক পর্যায়ে তাকে ফেলে দিলেন ততক্ষণে রাকিন বল ঠেলে দিলেন শেখ মোরসালিনের দিকে। মোরসালিন কালক্ষেপণ করেননি। ভারতীয় গোলরক্ষক গুরপ্রীত সিং সান্ধুর দুই পায়ের ফাঁক গলে জালে পাঠান মোরসালিন।
এগিয়ে যাওয়ার পর রাকিব আরেকটি সুযোগ তৈরি করেছিলেন। এবার ডান দিকে থেকে ক্রস। সেটি লুফে নিতে ভুল করেননি সান্ধু। মোরসালিনের কাছে পৌঁছানোর আগেই থামে আক্রমণ। ৩১ মিনিটে সমতা প্রায় ফিরিয়েই এনেছিল ভারত। গোলপোস্ট ছেড়ে বাইরে চলে গেছেন মিতুল মারমা। অরক্ষিত গোলপোস্টে শট নেন ভারতীয় মিডফিল্ডার লালিয়ানজুয়ালা ছাংতে। সবাই যকণ নিশ্চিত গোল ধরে নিয়েছিল, দৃশ্যপটে তখন হামজা চৌধুরী। একাই দাঁড়িয়ে গেলেন। দুরন্ত হেডারে ক্লিয়ার করলেন বল। বেঁচে গেল বাংলাদেশ।
৩৫ মিনিটে মাঠে উত্তেজনা। তপু বর্মনের সঙ্গে লড়াইয়ে জড়ায় ভারতীয় ফুটবলার। এরপর দুদলের হাতাহাতি। খেলা শুরু হলে কয়েকটি সুযোগ তৈরির ব্যর্থ চেষ্টা করে ভারত। বাংলাদেশও কয়েকবার পাল্টা আক্রমণ শানায়। কখনও ডানদিক, কখনও বামে। ৪৪ মিনিটে হামজা ব্যবধান দ্বিগুণ প্রায় করেই ফেলেছিলেন। সাদ উদ্দিনের দেওয়া লব ভারতের ডি বক্সের সামনে বুক দিয়ে রিসিভ করেন হামজা। সামনে প্রতিপক্ষ রক্ষণের তিনজন। ভড়কে না গিয় বাঁ’পায়ে শট নেন হামজা। বারপোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায় সেটি। অল্পের জন্য রক্ষা পায় ভারত।
বিরতির পর ভারত চেপে বসে। তবে গোলের দেখা পায়নি। বাংলাদেশকে এইসময় কিছুটা এলোমেলো মনে হয়ছে। তবে রক্ষণ ছিল দুর্ভেদ্য। হামজা-তপুরা গোল হতে দেননি। ৫০ মিনিটে ফ্রি-কিকে রাহুল ভেকের হেড অল্পের জন্য দূরের পোস্ট দিয়ে যায়। ৩ মিনিট পর বদলি মহেষ সিংয়ের নিচু শট আবারও অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।
৭১ মিনিটে জায়ান চোটে পড়েন। নামেন তাজ উদ্দিন। মোরসালিনের জায়গায় সুযোগ পান শাহরিয়ার ইমন। নিজেদের গুছিয়ে নিয়ে বাংলাদেশও সুযোগ তৈরি করে। ৭৯ মিনিটে ভালো জায়গায় বল পেয়েছিলেন শাকিল আহাদ তপু, বক্সের ঠিক বাইরে থেকে নেওয়া এই ডিফেন্ডারের শট গোলকিপার বাঁ দিকে একটু ঝুঁকে কোনওমতে আটকে দেন। দুই মিনিট পর শাহরিয়ার ইমনের ক্রস ফাহিমের হেড সন্দে ঝিঙ্গানের মাথার পিছনে লেগে কর্নার হয়। বাংলাদেশ পেনাল্টির দাবি তুললে তাতে সাড়া দেননি ফিলিপাইনের রেফারি। ওই কর্নার থেকে ভারত আক্রমণে উঠলেও কাজ হয়নি। শেষ দিকে এসে ভারত আবারও আক্রমণ শাণায়। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। রেফারির শেষ বাঁশির অপেক্ষায় গোটা জাতীয় স্টেডিয়াম। রেফারি বাঁশি বাজালেন, আনন্দে কেঁপে উঠল পুরো গ্যালারি। ফুটবলাররা তখন আত্মহারা।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply