মোঃ আব্দুল্লাহ হক, চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রতিনিধি: প্রথম শ্রেণির পৌরসভা হওয়া সত্ত্বেও চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকায় নাগরিক অধিকার ও সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হওয়ার প্রতিবাদে পৌর প্রশাসক শারমিন আক্তার-এর নিকট স্মারকলিপি পেশ করেছে চুয়াডাঙ্গা জেলা নাগরিক কমিটি। সোমবার বিকেল ৫টার দিকে পৌর প্রশাসকের কার্যালয়ে এই স্মারকলিপি দেওয়া হয়। স্মারকলিপির বিষয়বস্তু ছিল: “চুয়াডাঙ্গার পৌডলভার অধিন নাগরিক বৃন্দের অধিকার নিশ্চিতে বিদ্রমাণ সকল সমস্যা নিম্নপদের দাগিকে-” (চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার অধীন নাগরিকবৃন্দের অধিকার নিশ্চিতে বিদ্যমান সকল সমস্যা নিরসনের দাবিতে)।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয় যে, ১৯৬৩ সালে প্রতিষ্ঠিত এবং ১৯৮৪ সালে প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত হওয়া চুয়াডাঙ্গা পৌরসভা থেকে শহরের নাগরিকবৃন্দ সকল অধিকার এবং সুযোগ থেকে বঞ্চিত। প্রথম শ্রেণির পৌরসভার সকল পৌর কর নিয়মিত পরিশোধ করা সত্ত্বেও, শহরের দীর্ঘদিনের পুঞ্জিভূত সমস্যাগুলি নাগরিক সমাজকে বঞ্চনার দিকে ঠেলে দিচ্ছে, যা পৌরবাসীদের জন্য দুঃখজনক এবং মানসিক নির্যাতনের নামান্তর।
স্মারকলিপিতে নাগরিক কমিটির প্রধান ১৩ দফা দাবি উল্লেখ করা হয় এতে চুয়াডাঙ্গার পৌরসভার নাগরিকবৃন্দের ১ম শ্রেণীর মর্যাদা সম্পন্ন নাগরিক সেবা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে চুয়াডাঙ্গা জেলা নাগরিক কমিটি নিম্নলিখিত ১৩টি দাবি পেশ করে ফুটপাত নির্মাণ: শহীদ আবুল কাশেম, শহীদ আলাউল ইসলাম, শহীদ রবিউল ইসলাম, কোর্ট রোড হতে জেলখানা সড়ক এবং ঝিনাইদহ বাসস্ট্যান্ড সড়কে চলাচলের জন্য উন্নতমানের ফুটপাত নির্মাণ করতে হবে, দখলমুক্ত ফুটপাত: দখলকৃত ফুটপাত মুক্ত করে সাধারণ মানুষের নির্বিঘ্নে চলাচল নিশ্চিত করতে হবে।, নর্দমা সংস্কার: শহরের সকল সড়কের পাশের ভাঙ্গাচোরা নর্দমাগুলোর প্লাব মেরামত ও পুনঃস্থাপন করতে হবে।, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা: চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার সদর হাসপাতাল সড়কে পূর্বের ন্যায় যানবাহন চলাচল একমুখী ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে। হাসপাতালের পরিচ্ছন্নতা: চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও নতুন নির্মিত ভবনের দেওয়ালের পানের পিক ছিটানো রোধসহ ভবনের রং ও সংস্কারের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ প্রদান ও বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নিতে হবে। তদন্তের দাবি: বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ, বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উন্নয়ন প্রকল্প, কবরি রোড, শহর ও শহরতলির নির্মিত সড়ক, নর্দমা নির্মাণে দুর্নীতি, অনিয়ম এবং ভবন নির্মাণের নকশা ও জন্মনিবন্ধন খাতে দুর্নীতির বিষয়গুলো তদন্ত করে পৌরবাসির নিকট পত্রিকায় প্রকাশ করতে হবে। শ্বেতপত্র প্রকাশ: ২০০৮ হতে ২০২৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত শহর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার নামে ১০ কোটি টাকা লুটপাটের বিষয়টি শ্বেতপত্র হিসাবে প্রকাশ করতে হবে।সম্পত্তি দখলমুক্ত করা: অবৈধভাবে দখলে থাকা শত বছরের জনগণের সম্পত্তি ‘জ্ঞানের প্রদীপ’ আবুল হোসেন স্মৃতি সাধারণ গ্রন্হাগার ও সাবেক মহকুমা প্রশাসকের নামের শ্রীমন্ত টাউন হল দখলমুক্ত করে নির্বাচিত কমিটির কাছে হস্তান্তর করতে হবে, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা: চুয়াডাঙ্গা শহর ও শহরতলীতে নিয়মিত নর্দমা ও সড়ক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, আগাছা মুক্তকরণ ও চাহিদা মোতাবেক আধুনিক ডাষ্টবিন নির্মাণ করতে হবে। প্রতি ওয়ার্ডে বিধি মোতাবেক ৩ জন পরিছন্ন কর্মী নিয়োগ করে পরিষ্কার পরিছন্নতার কাজে নিয়োজিত করতে হবে। আধুনিক ডিভাইডার: প্রথম শ্রেণির মর্যাদা সম্পন্ন শহরের বাঁশ দিয়ে ডিভাইডারের আদিম ব্যবস্থাপনা উচ্ছেদ করে আধুনিক মানসম্মত ডিভাইডার নির্মাণ করতে হবে।কমিটি গঠন: চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার সকল নাগরিক অধিকার নিশ্চিত ও জবাবদিহি মূলক প্রতিষ্ঠান করতে পৌর নাগরিকদের নিয়ে গঠিত সকল কমিটি ও উপ-কমিটিতে দলীয় বিবেচনা বা তোষামোদি বিবেচনা বাদ দিয়ে সচেতন নাগরিকদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। রেলগেটের সড়ক: চুয়াডাঙ্গা রেলগেটের ওভার পাস ব্রিজ নির্মাণকালীন দুই সাইডের সড়ক নির্মাণে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে দাপ্তরিকভাবে অবহিত করতে হবে।
দাবি বাস্তবায়নের সময়সীমা: উল্লেখিত দাবি সমূহ আগামী ০১ মাসের মধ্যে বাস্তবায়ন ও পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে তা নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায়, পৌরসভা প্রদত্ত সকল ট্যাক্স ও অন্যান্য কর আদায় বন্ধসহ বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচী গ্রহণ করা হবে, যার সকল দায়-দায়িত্ব যথাযথ কর্তৃপক্ষকেই বহন করতে হবে।
স্মারকলিপি প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা নাগরিক কমিটির সভাপতি তৌহিদ হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শেখ সেলিম, সদস্য এ্যাড কাইসার হোসেন জোয়ার্দার, অধ্যক্ষ শাজাহান আলী এবং মোঃ আব্দুল্লাহ হক সহ কমিটির অন্যান্য সদস্যবৃন্দ।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply