রবিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:৫৬ অপরাহ্ন

কাল ‘মওলানা ভাসানী সেতু’ উদ্বোধন

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : মঙ্গলবার, ১৯ আগস্ট, ২০২৫

এবার সময় পরিবর্তন নয়, পরিবর্তন হয়েছে তিস্তা সেতুর নাম। তিস্তা নদীর ওপর নবনির্মিত সেতুর নাম দেওয়া হয়েছে ‘মওলানা ভাসানী সেতু, গাইবান্ধা’।

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার পাঁচপীর বাজার-কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলা সদর সড়কে তিস্তা নদীর ওপর নির্মিত ১ হাজার ৪৯০ মিটার দীর্ঘ ‘মওলানা ভাসানী সেতু’ অবশেষে উদ্বোধন হতে যাচ্ছে।

বুধবার (২০ আগস্ট) অন্তর্বতী সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া সেতুটি উদ্বোধন করবেন।

এর আগে, সেতুর নামকরণ নিয়ে সরকারি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। গত ১০ আগস্ট স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে জারি করা সেই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলাধীন পাঁচপীর বাজার-চিলমারী উপজেলা সদর দপ্তরের সঙ্গে সংযোগকারী সড়কে তিস্তা নদীর উপর নির্মিত ১ হাজার ৪৯০ মিটার দীর্ঘ পিসি গার্ডার সেতুটি ‘মওলানা ভাসানী সেতু, গাইবান্ধা’ নামে নামকরণ করা হলো।

প্রজ্ঞাপনে আরো বলা হয়, বাংলাদেশ সরকার ও উন্নয়ন সহযোগী সৌদি ফান্ড ফর ডেভেলপমেন্টের (এসএফডি) অর্থায়নে বাস্তবায়িত এ প্রকল্পের আওতায় নির্মিত সেতুটি ‘মওলানা ভাসানী সেতু’ নামে নামকরণের অনুমোদন দিয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ।

সেতুটির মাধ্যমে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সঙ্গে কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী উপজেলার যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের ফলে স্বল্প সময় ও স্বল্প খরচে শিল্প ও কৃষিজাত পণ্য উৎপাদন এবং ছোট ও মাঝারি কলকারখানা প্রতিষ্ঠার সুযোগ সৃষ্টি হবে।

এছাড়া নদীর উভয় তীরের সংযোগসহ উন্নত রোড নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠার ফলে ওই অঞ্চলের শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন ও প্রসার ঘটবে। এলাকায় দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। একইসঙ্গে স্থানীয় আর্থ-সামাজিক অবস্থা উন্নয়নসহ জাতীয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখবে।

পর্যটনের সুযোগ সৃষ্টিসহ একটি নতুন পরিবহন করিডোর গড়ে ওঠায় রাজধানী ঢাকাসহ দক্ষিণাঞ্চলের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থানের সঙ্গে ভুরুঙ্গামারী স্থলবন্দরসহ গাইবান্ধার সঙ্গে কুড়িগ্রাম জেলার যোগাযোগের দূরত্ব ৪০-৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত হ্রাস পাবে। এছাড়া ঢাকার সঙ্গে দূরত্ব কমবে প্রায় ১৩৫ কিলোমিটার। 

এ অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবীর প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সরকার (জিওবি), সৌদি ফান্ড ফর ডেভেলপমেন্ট (এসএফডি) এবং ওপেক ফান্ড ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টের (ওফিড) অর্থায়নে সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে। এতে মোট ব্যয় হয়েছে ৯২৫ কোটি টাকা। ১ হাজার ৪৯০ মিটার দীর্ঘ ও ৯.৬০ মিটার প্রস্থের সেতুটির লেন সংখ্যা দুইটি এবং মোট স্প্যান সংখ্যা ৩১টি। এটি একটি প্রি-স্ট্রেসড কংক্রিট গার্ডার সেতু।

দেশের উত্তরবঙ্গের নদীবেষ্টিত গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রামের মানুষ দীর্ঘ সময় ধরে তিস্তা নদী পারাপারে খেয়ার ওপর ভরসা করতেন। বর্ষার মৌসুমে দেড় কিলোমিটার বিস্তৃত নদী পার হওয়া ছিল ঝুঁকিপূর্ণ, আর সন্ধ্যায় খেয়া বন্ধ থাকায় নদীর তীরে রাত কাটানো ছিল স্বাভাবিক ঘটনা।

দীর্ঘ দিনের এই কষ্ট ও সঙ্কট লাঘবে নদী রক্ষাসহ একটি সেতুর জন্য আন্দোলন করে আসছিলেন আবু বকর শরীতুল্ল্যাহ মাস্টারের নেতৃত্বে স্থানীয়রা। অবশেষে দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর নির্মাণ করা হয় ১ হাজার ৪৯০ মিটার দৈর্ঘ্যের এই সেতুটি।

Please Share This Post in Your Social Media

Comments are closed.

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS