যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতি ও সরকারি বন্ডের সুদের হার বৃদ্ধির প্রভাবে আবারও শক্তিশালী হয়ে উঠেছে মার্কিন ডলার। এতে এশিয়ার প্রধান মুদ্রাগুলোর ওপর, বিশেষ করে জাপানি ইয়েনের ওপর বড় চাপ তৈরি হয়েছে।
সাম্প্রতিক মূল্যস্ফীতির তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে আমদানিনির্ভর পণ্যের দাম বাড়তে শুরু করেছে। কফি, সাউন্ডসিস্টেম, আসবাবসহ বিভিন্ন পণ্যের মূল্য গত জুন মাসে বেড়েছে। এর প্রভাবে সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি বাড়ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিনিয়োগকারীদের বিশ্বাস, মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভ চলতি বছর আর সুদের হার কমাবে না। বরং মুদ্রাস্ফীতি ও ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন শুল্কনীতির কারণে সুদের হার স্থির থাকতে পারে কিংবা আরও বাড়তে পারে।
ফলে, মঙ্গলবার মার্কিন ১০ বছর মেয়াদি সরকারি বন্ডের সুদ বেড়ে হয়েছে ৪ দশমিক ৪৯৫ শতাংশ, যা এক মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। দুই বছরের বন্ডের সুদও বেড়েছে, দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ৯৫ শতাংশের কিছু ওপরে।
এই অবস্থায় ডলার আরও শক্তিশালী হয়েছে। মঙ্গলবার ডলারের বিপরীতে ইয়েনের মান পড়ে গেছে ১৪৯ দশমিক ০৩ ইয়েনে, যা গত চার মাসে সর্বনিম্ন। এর আগে ছিল ১৪৮ দশমিক ৯০ ইয়েন। একইসঙ্গে ইউরো ও ব্রিটিশ পাউন্ডের মানও কমেছে—ইউরো ১ দশমিক ১৬০৮ ডলার ও পাউন্ড ১ দশমিক ৩৩৯৪ ডলার হয়েছে, যা তিন সপ্তাহের মধ্যে সর্বনিম্ন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরেই ফেড চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলের সমালোচনা করে আসছেন। এবার তিনি ফেডের সদর দপ্তরের সংস্কার ব্যয় নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন, এটিকে ‘ছাঁটাইযোগ্য অপরাধ’ বলে অভিহিত করেছেন। এতে বিনিয়োগকারীরা ধারণা করছেন, ফেডের নেতৃত্বে পরিবর্তন আসতে পারে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, যদি ট্রাম্প ফেডে এমন কাউকে বসান যিনি সুদের হার কমানোর পক্ষে, তাহলে আবারও বাজারে অস্থিরতা তৈরি হতে পারে।
বিশ্বের প্রধান ছয়টি মুদ্রার বিপরীতে ডলারের সূচক এক মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠে গেছে, দাঁড়িয়েছে ৯৮ দশমিক ৬০-এর কাছাকাছি। অস্ট্রেলিয়ান ডলারের মান একদিনে ০ দশমিক ৪৫ শতাংশ কমে গিয়ে সকালে অল্প বেড়ে হয়েছে ০ দশমিক ৬৫১৭ ডলার। নিউজিল্যান্ডের ডলার বেড়েছে ০ দশমিক ১৭ শতাংশ।
এদিন ট্রাম্প আরও জানিয়েছেন, ইন্দোনেশিয়ার পণ্যের ওপর ১৯ শতাংশ শুল্ক বসানো হবে। এছাড়া ছোট দেশগুলোর জন্যও ১০ শতাংশ–এর কিছু বেশি হারে শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা চলছে বলে জানান তিনি।
মার্কিন শুল্কনীতি, মূল্যস্ফীতি এবং সুদহার বৃদ্ধির ইঙ্গিতে ডলারের বিপরীতে অন্যান্য মুদ্রা চাপে রয়েছে। বিনিয়োগকারীদের নজর এখন ফেডের পরবর্তী সিদ্ধান্ত এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অর্থনৈতিক নীতির দিকেই।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply