রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ০৯:০২ অপরাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদ

কাতারের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : বুধবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৫

কাতারের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, অর্থনীতির দিক থেকে বাংলাদেশের ব্যাপক সম্ভাবনা আছে। আপনার উৎপাদন কারখানা এখানে তৈরি করুন। এখানে তৈরি করুন যেখানে খুশি বিক্রি করুন, যেকোনও দেশে। আমাদের এখানে লোকবল আছে, এখানে কাজ করার জন্য অন্য দেশ থেকে লোক আনার প্রয়োজন নেই।

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) কাতারের দোহায় তার সম্মানে আয়োজিত একটি ব্যক্তিগত ব্যবসায়িক সংবর্ধনায় যোগ দিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের একদিকে নেপাল, আরেকদিকে ভুটান, আমাদের সীমান্তের খুব কাছেই। আমাদের উত্তরে ভারতের সাতটি রাজ্য। আঞ্চলিক অর্থনীতি হিসেবে বিবেচনা করে অন্তর্ভুক্ত হলে দারুণ একটা কাজ হতে পারে। এটি তাদের করতেই হবে- কারণ আর কোন উপায় নেই। নেপাল-ভুটান কারও সমুদ্র নেই, ভারতের সেভেন সিসটারও সমুদ্র পায় না। সবাই মিলে একসঙ্গে করলে সমুদ্রের ব্যবহার করা যায়। এর ফলে এখানে একটা হাব তৈরি হতে পারে।

বাংলাদেশ কারখানা তৈরিতে যত সহায়তা প্রয়োজন আমরা করবো মন্তব্য করে বলেন, আমরা বাংলাদেশে এই ধরনের অর্থনীতি তৈরি করতে চাই। যেখানে তরুণদের জন্য কর্মসংস্থান তৈরি হবে। সম্প্রতি আমরা বিনিয়োগ সম্মেলন আয়োজন করেছি, তাতে ব্যাপক সাড়া পাওয়া গেছে। আমি যেখানেই যাই, সবাইকে স্বাগত জানাই, ইতিবাচক সাড়াও মিলে। তাই আমরা আপনাদের স্বাগত জানাই, আপনারা আসুন, দেখে যান লাখ লাখ তরুণের উদ্যম, সৃজনশীলতা।

তিনি আরও বলেন, যারা বাংলাদেশকে চিনেন, তারা জানেন কতটা ঘনবসতিপূর্ণ একটি দেশ। ১৮ কোটি জনসংখ্যার এই দেশে অর্ধেক জনগোষ্ঠীর বয়স ২৭ বছর। অনেক বড় একটা তরুণ জনগোষ্ঠী, যাদের প্রযুক্তি, জ্ঞান, শিক্ষা সবকিছুরই প্রাপ্যতা আছে। আমি শুধু তরুণ ছেলেদের কথা বলছি না, আন্দোলনে তরুণ মেয়েরা নেতৃত্বও দিয়েছে। রাস্তায় কীভাবে এদেশের মেয়েরা প্রতিবাদ করেছে- সেটা একটা দেখার মতো দৃশ্য ছিল। এ জন্য তারা এটাকে ‘নতুন বাংলাদেশ’ বলে থাকে, যেটা আমাদের তৈরি করতে হবে, অতীতে যা কিছু হয়েছে তা বাদ দিয়ে।

তিনি আরও বলেন, (বিগত সরকারের আমলে) দেশের অর্থনীতি, বিচার ব্যবস্থা, নিরাপত্তা ব্যবস্থা যেভাবে ধ্বংস করা হয়েছিল, গত ৮ মাস ধরে ঠিক করার চেষ্টা চলছে। এটাই আমাদের কাজ। আমরা বিভিন্ন খাতে সংস্কার কমিশন করে দিয়েছি, তারা সুপারিশ করবে। এখন আমরা সেগুলো বাস্তবায়নের পর্যায়ে আছি। এই প্রক্রিয়া শেষ হলেই নির্বাচন হবে।

প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে বাংলাদেশের দায়িত্ব নেওয়ার প্রেক্ষাপট তুলে ধরে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, জুলাইয়ে ছাত্ররা রাস্তায় নেমে এসে প্রতিবাদ শুরু করলো। আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী তাদের ওপর গুলি চালালো, হত্যা করলো। এটা ছিল ক্ষোভের সাম্প্রতিক অংশ। এর আগেও অনেক ক্ষোভ ছিল, ১৬ বছর ধরে ভুয়া নির্বাচন, মানুষ গুম হয়ে যেত নিয়মিত, সারা দেশে টর্চার সেল করা হয়েছিল, ব্যাংক থেকে অর্থ চুরি করেছিল, পুরো ব্যবস্থা ধ্বংস করে ফেলেছিল, মেগা প্রকল্পে দুর্নীতি- এগুলোই চলছিল বিগত ১৬ বছর ধরে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ছাত্ররা প্রতিবাদে নেমে আসলো, বললো- ‘যথেষ্ট হয়েছে’। কয়েক হাজার তরুণ নিহত হয়। ছাত্ররা সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের মুখে যাত্রা শুরু করে। মানুষের বন্যা বয়ে গিয়েছিল। সারাদেশ থেকে মানুষ চলে আসছিল, বেশ ভয়ানক দৃশ্য ছিল সেটা। দেশ ত্যাগ করার জন্য তাকে তার বাসভবন থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হলো। সেই থেকেই বাংলাদেশ তার শাসন মুক্ত হলো। আমি দেশের বাইরে ছিলাম, এই কারণেই আমাকে দায়িত্ব নিতে হলো। অন্তর্বর্তী সরকার এভাবেই গঠন হলো।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS